মিল্টন সেন: রেমালে সতর্ক গোটা হুগলি জেলা। জারি করা হয়েছে লাল সতর্কতা। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়বে কলকাতা, উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়ার পাশাপাশি হুগলিতেও। আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর, রবিবার এবং সোমবার ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টির সঙ্গে ঘণ্টায় ৮০ থেকে ৯০ কিলোমিটার বেগে বইবে ঝোড়ো হাওয়া। পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের তরফে চলছে চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রস্তুতি। রেমাল মোকাবিলায় হুগলি জেলা শাসকের দপ্তরে খোলা হয়েছে ২৪ ঘণ্টার কন্ট্রোল রুম। সেখান থেকেই গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রাখবেন জেলা প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্তারা। পুরসভাতেও খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। হুগলির জেলা শাসক মুক্তা আর্য রবিবার জানিয়েছেন, পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব রকমের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মূলত, নদী সংলগ্ন এলাকায় থাকা কাঁচা বাড়িতে বসবাসকারীদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ফ্লাড শেল্টারে। পর্যাপ্ত পানীয় জল, শুকনো খাবার মজুত রাখা হয়েছে। পরিবহন দপ্তরের নির্দেশে রবিবার থেকেই উত্তরপাড়া থেকে গুপ্তিপাড়া পর্যন্ত ফেরিঘাট গুলি বন্ধ রাখা হয়েছে। বেশিরভাগ ফেরিঘাটেই জেটির সঙ্গে ভেসেলগুলিকে বেঁধে রাখা হয়েছে। ফেরিঘাটের কর্মীরা জানাচ্ছেন, জোয়ারে গঙ্গার জল অনেকটাই বেড়েছে। সকাল থেকেই ঝোড়ো হাওয়া বইছে। রেমাল ল্যান্ডফল করবে রাতে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরকে। একইসঙ্গে প্রস্তুত রাখা হয়েছে দমকল এবং স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মীদেরও।




পাশাপাশি সতর্ক কৃষি দপ্তরও। এদিন জেলা কৃষি দপ্তর ও উদ্যান পালন দপ্তরের তরফে কৃষকদের উদ্দেশ্যে মাইকিং করা হয়। সতর্ক করা হয়, ঝড়ের সময় বাইরে যাতে কেউ না থাকেন। ঝড়ের দাপটে কলা, সব্জির পাশাপাশি আম এবং লিচুর ক্ষতি হতে পারে, তাই তাড়াতাড়ি যতটা সম্ভব ফসল ঘরে তুলে ফেলছেন কৃষকরা। বর্তমানে হুগলির একাধিক জমিতে সবজির পাশাপাশি তিল এবং বাদাম চাষ করা হয়ে থাকে। সেই জমি থেকে জমা জল বের করে নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে প্রশাসনের তরফে। বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের অফিসার ইনচার্জ মাসুদুর রহমান বলেছেন, জেলার সদরে খোলা হয়েছে মুখ্য কন্ট্রোল রুম। সেখানে যোগাযোগের জন্য ল্যান্ড লাইন (০৩৩) ২৬৮১২৬৫২ এবং ৮১০০১০৬০৪১ মোবাইল নম্বর দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রত্যেক মহকুমা, পুরসভা এবং ব্লকগুলোতেও কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। কন্ট্রোলরুম থেকে প্রত্যেক মুহূর্তের আপডেট খবর আসবে। পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রশাসনের প্রত্যেকটি দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করা হবে। যেহেতু ঝড়ের পূর্বাভাস রয়েছে এবং সেই ঝড় কত কিলোমিটার বেগে আসবে আগে থেকেই জানা গিয়েছে সেই অনুযায়ী আগে থেকেই আগাম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ছবি: পার্থ রাহা