আজকাল ওয়েবডেস্ক: নাবালিকা ধর্ষণের ঘটনায় শোরগোল বীরভূম জেলায়। ওই নাবালিকা অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, এই ঘটনায় যারা যুক্ত তারাও নাবালক বলে জানা গিয়েছে। ওই নাবালিকারই সহপাঠী। ফাঁকা কোচিংয়ে ছাত্রীকে একা পেয়ে ধর্ষণ করে তার দুই সহপাঠী। ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের সিউড়িতে। বিষয়টি জানাজানি হতেই ওই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চলের সৃষ্টি হয়েছে। 

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকাল আটটা নাগাদ অষ্টম শ্রেণির ওই ব্যাচের টিউশন পড়ানোর কথা ছিল সিউড়ির স্থানীয় এক শিক্ষকের। নাবালিকার দুই সহপাঠী তাকে বলে, স্যার সকাল সাতটা থেকে পড়াবেন। সেইমতো নাবালিকা এবং দুই ছাত্র কোচিংয়ের অন্য এক শিক্ষকের কাছ থেকে চাবি নিয়ে কোচিং সেন্টার খোলে। অভিযোগ, সেই সময় কেউ না থাকার সুযোগে দুই নাবালক ছাত্র ধর্ষণ করে ওই নাবালিকাকে। 

বাড়ি ফিরে ওই নাবালিকা সমস্ত কথা তার পরিবারকে জানায়। ‌বিষয়টি জানতে পেরে মেয়ের বাবা সিউড়ি থানার দ্বারস্থ হন। শুক্রবার রাতেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ঘটনার অভিযোগ দায়ের করেন সিউড়ি থানায়। এরপর তদন্তে নেমে দুই নাবালককে তাদের বাড়ি থেকে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। শনিবার তাদের দু'জনকে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে তোলা হলে বিচারক তাদের ১৪দিনের হোমে রাখার নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন সরকারি আইনজীবী অনিন্দ্য সিংহ। 

তিনি বলেন, ঘটনার অভিযোগ দায়ের হয় সিউড়ি থানায়। এদিন বিচারক ১৪ দিন হোমে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। অন্যদিকে নাবালিকাকে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটিতে তোলা হয়েছে। 

 

প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে বাংলায় আরও একটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। কিশোরী অপহরণ করে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ। পূর্ব মেদিনীপুরের জুনপুট কোস্টাল থানার পুলিশ রবিবার সন্ধ্যায় কাদুয়া এলাকা থেকে অজ্ঞাত পরিচয় এক কিশোরীর দেহ উদ্ধার করে। খোঁজ নিয়ে তার নাম ও পরিচয় জানতে পারে পুলিশ। যোগাযোগ করা হয় পরিবারের সঙ্গে। এরপরই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ মৃতার পরিবারের। 

পুলিশ জানতে পারে ১৬ বছর বয়সি ওই কিশোরীকে অপহরণ করে ধর্ষণ করার পর মর্মান্তিকভাবে খুন করা হয়েছে। অভিযোগ আনা হয়েছে কিশোরীর পরিচিত এক যুবকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত গ্রেপ্তার হয়েছে। যুবকের নাম দেব কুমার দাস। কাঁথির জুনপুট কোস্টাল থানা এলাকার ঝাওয়া জগন্নাথপুরে বাড়ি। কিশোরীকে অপহরণ করে ধর্ষণ এবং নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের পর গণধর্ষণ কিনা সেটা জানা যাবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতা দশম শ্রেণির ছাত্রী। কাঁথি থানা এলাকার দূরমুঠে বাড়ি। গত শনিবার থেকে টিউশন পড়তে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে যায়। স্থানীয় এক যুবকের সঙ্গে তার পরিচিতি ছিল বলে তদন্তে উঠে আসে। ওই যুবকের বাড়ি ঝাওয়া-জগন্নাথপুর। মৃতা ও অভিযুক্তর বাড়ি পাশাপাশি গ্রামে। ওই যুবক তাকে অপহরণ করেছিল বলে অভিযোগ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে এই কিশোরী প্রেমে প্রত্যাখ্যান করেছিল। অভিযোগ, যে কারণে তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে এমন ঘটনা ঘটানো হয়। ঘটনার সঙ্গে আরও কয়েকজন যুক্ত থাকতে পারে বলে আশঙ্কা পুলিশের। 

কাঁথি মহকুমা পুলিশ আধিকারিক দিবাকর দাস জানিয়েছেন, অভিযুক্ত ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছে। পুলিশি জেরায় অভিযুক্ত জানিয়েছে তার সঙ্গে এই কিশোরীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল দীর্ঘদিন ধরে। কর্মসূত্র সে গুজরাটে কাজে থাকার জন্য ইদানিং কিশোরী অন্য একটি যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। যে কারণে অভিযুক্ত যুবকের সঙ্গে সম্পর্ক অস্বীকার করেছিল। এরপর যুবক তার কথা মেনে নিয়ে তাকে বোঝানোর জন্য চেষ্টা করে। শেষপর্যন্ত সেদিন সন্ধ্যায় ওড়নার সাহায্যে গলায় ফাঁস দিয়ে কিশোরীকে খুন করে সে। যাতে পালাতে না পারে তার জন্য হাত পা বেঁধে ফেলে দিয়ে গিয়েছিল। পরিবারের পক্ষে ধর্ষণের অভিযোগ করা হয়েছে। তবে ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে ধর্ষণ কিনা তবে এই ঘটনার সঙ্গে অন্য কেউ যুক্ত কিনা তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পরিবার চাইছে অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।