আজকাল ওয়েবডেস্ক: চন্দননগরের পর উত্তর চব্বিশ পরগনার বাগদা। শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ। অভিযোগ পড়ুয়াদের। অভিযোগ যৌন হেনস্থার। অভিযোগ, উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা থানা এলাকার বাজিতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক সুদীপ্ত মৈত্র বিরুদ্ধে কয়েকজন ছাত্রী যৌন হেনস্তার অভিযোগ তুলেছে। এই অভিযোগের কথা এলাকায় জানাজানি হতেই বৃহস্পতিবার অভিভাবকরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন ।

 পরবর্তীতে বাগদা থানার পুলিশ স্কুলে পৌঁছে অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে ।  ছাত্রীদের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরেই শিক্ষক সুদীপ্ত মৈত্রকে গ্রেপ্তার করে বাগদা থানার পুলিশ । ধৃত শিক্ষকের বিরুদ্ধে পাকসো আইনে মামলা রুজু করেছে পুলিশ । ধৃতকে শুক্রবার বনগাঁ মহকুমা আদালতে পাঠাবে বাগদা থানার পুলিশ । 

আরও পড়ুন: পরপর নিশানায় স্কুল, দিল্লির ২০ স্কুলের পর, বেঙ্গালুরুর ৪০ স্কুলকে বোমা হুমকি, কারণ খুঁজতে হিমশিম

এই বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক দিলীপ কুমার সরকার জানিয়েছেন, ‘অষ্টম ও নবম শ্রেণির কয়েকজন ছাত্রী লিখিত ভাবে সহকারী শিক্ষক সুদীপ্ত মৈত্রর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে। তিনি ছাত্রীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন।  আমরা অভিযুক্ত শিক্ষকের কাছ থেকে লিখিতভাবে উত্তর পেয়েছি । কিছু অভিযোগ সত্য কিছু অভিযোগ অসত্য এমনি জানিয়েছেন শিক্ষক।‘  


এই বিষয়ে মালিপোতা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান দেবব্রত মন্ডল জানিয়েছেন, স্কু’লে এই ধরনের অভিযোগ ওঠা বাঞ্ছনীয় নয়। আমরা স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি যদি শিক্ষক দোষী সাব্যস্ত হলে আমরা তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছি । পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। যদি তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হয়  তাহলে তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হোক ।‘


দিন কয়েক আগেই, স্কুলের ভিতরেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলেছিল পড়ুয়া। ঘটনাস্থল চন্দননগর। ঘটনাটি ঘটেছে চন্দননগর পুরনিগম পরিচালিত কানাইলাল বিদ্যামন্দির স্কুলে সোমবার সকালে। জানা গিয়েছে, স্কুল শুরু পর শ্রেণি কক্ষের মধ্যেই ক্লাস ওয়ানের দুই ছাত্র মারামারি করে। ক্লাস টিচার দিদিমনি দু'জনকে প্রধান শিক্ষকের কাছে নিয়ে যান। 
অভিযোগ এরপরই প্রধান শিক্ষক ওই দু'জনের মধ্যে এক ছাত্রকে দিয়ে আপত্তিকর কাজ করান। যৌন নির্যাতন করেন। তারপর ভয় দেখান বাড়িতে কাউকে না বলতে। ছাত্রটির মা তাকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য স্কুলে আসেন। ছুটির পর বাড়ি যাওয়ার পথে ছাত্রটি তার মাকে ঘটনার কথা জানায়। এরপরই বিষয়টি অন্যান্য অভিভাবকরা জানতে পারেন। বিকেলের পর চন্দননগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে ছাত্রের পরিবার। দুপুরের পর অভিভাবকদের বিক্ষোভ শুরু হলে উত্তেজনা তৈরি হয়। কানাইলাল স্কুলে পুলিশ পৌঁছায়। পরবর্তী সময়ে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার করা হয় শিক্ষককে। 


অন্যদিকে সম্প্রতি শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলেছিলেন কলেজ পড়ুয়া ছাত্রী। অভিযোগ, কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও, কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তারপরেই ওই পড়ুয়া কলেজের সামনেই গায়ে আগুন দেন। হাসপাতালে দুদিন চিকিৎসারত থাকার পরে, মৃত্যু হয় তাঁর। 

র্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনের তথ্য, আত্মহত্যার চেষ্টার দশ দিন আগেই তরুণী জানিয়েছেন, তিনি আত্মহত্যা করতে বাধ্য হবেন। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তরুণী এর আগে যে চিঠি লিখেছিলেন কলেজ কর্তৃপক্ষকে, তাতে লিখেছিলেন,  ‘গত কয়েক মাস ধরে, বিএড বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, সহকারী অধ্যাপক সমীর কুমার সাহু, আমাকে মানসিকভাবে হয়রানি করছেন। তিনি বারবার আমাকে হুমকি দেন, ফেল করিয়ে দেওয়ার। বাড়িতে জানালেও ফলাফল ভাল হবে না বলে হুমকি দেন।সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, বিভাগীয় প্রধান বারবার যৌন সুবিধা চাইছেন। আমি সেই বিষয়ে ক্রমাগত মানা করেই চলেছি। এতে আমি আমার মানসিক শান্তি হারিয়ে ফেলেছি এবং আত্মহত্যার চেষ্টা করেছি। ভবিষ্যতে, যদি কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আমি আত্মহত্যা করব এবং বিভাগীয় প্রধান এবং কলেজ কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে।‘ তারপরেই আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তরুণী। সোমবার রাতে মৃত্যু হয় তাঁর।