আজকাল ওয়েবডেস্ক: আদালত জামিন দেয়নি। অথচ 'বেল অর্ডার' (bail order) দেখিয়ে বাংলাদেশি আসামি জেল থেকে মুক্তি পেয়ে গিয়েছেন। সংশোধনাগার থেকে বেরোনোর পর বাংলাদেশি ওই বন্দির আর খোঁজ নেই। ঘটনাটি জানাজানি হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন বনগাঁ মহকুমা আদালতের আইনজীবীরা। তাঁরা সাংবাদিক বৈঠক করে বিষয়টি সরকারের নজরে আনার চেষ্টা করেছেন। কলকাতা হাইকোর্টকেও তাঁরা বিষয়টি জানাবেন বলেছেন।

 

 

বনগাঁ মহকুমা আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২১ অক্টোবর বাগদা থানার পুলিশ খলিল খালাসি নামে এক বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ও অভিজিৎ মণ্ডল নামে এক দালালকে গ্রেফতার করেছিল। খলিল বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক দলের সক্রিয় কর্মী। ধৃতদের ওই দিনই বনগাঁ মহকুমা আদালতে পাঠানো হয়েছিল। আগামী ৪ নভেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানি ছিল। কিন্তু মঙ্গলবার বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী খলিল খালাসির আইনজীবী লক্ষ্য করেন, তাঁর মক্কেলের জামিনের অর্ডার হয়নি। বেল বন্ড জমা পড়েনি। কিন্তু বিচারকের স্বাক্ষর করার রিলিজ অর্ডার দেখিয়ে মক্কেল জেল থেকে মুক্তি পেয়ে গিয়েছেন। ওই আইনজীবী তখন মক্কেলের বাংলাদেশের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরিবারের লোকেরা জানান, তাঁরা বিষয়টি কিছুই জানেন না। মক্কেলের পরিবার তখন উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তাহলে বাংলাদেশি ওই বন্দি কী ভাবে সংশোধনাগার থেকে মুক্তি পেলেন? কীভাবে জমা পড়ল রিলিজ অর্ডার? বনগাঁ আদালত চত্বরে ঘুরতে থাকে প্রশ্ন। 

 

বনগাঁ ল-ইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সমীর দাস ও উকিল মনোজ সাহা বিষয়টি নিয়ে আদালতের এক আধিকারিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। সমীরবাবু বলেন, 'আদালত বাংলাদেশি ওই বন্দিকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিল। সেই সময় সীমা শেষ হওয়ার আগেই সংশোধনাগার থেকে ওই বন্দির রিলিজ অর্ডার দেখিয়ে কেউ তাঁকে বের করে নিয়ে গেলেন, তা বড় রহস্যময় ঘটনা। অতীতে আরও এক বাংলাদেশি বন্দিকে এভাবে জেল থেকে বের করে খুন করা হয়েছিল। আমরা উদ্বিগ্ন। বেল বন্ড ছাড়া কীভাবে একজন বাংলাদেশি বন্দির বেল অর্ডার সময়ের আগেই সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের কাছে জমা পড়ে গেল? ঘটনার তদন্তের দাবি জানিয়ে আমরা কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারের কাছে লিখিত অভিযোগ জানাব।'

 

আইনজীবী মনোজ সাহা বলেন, 'আমার মক্কেল আমার অজ্ঞাতে সময়ের আগেই জেল থেকে ছাড়া পেয়ে গেলেন। ঘটনাটি অত্যন্ত বিস্ময়কর। আমি মক্কেলের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাঁরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। ঘটনার তদন্ত হওয়া দরকার। 

 

বনগাঁ মহকুমা আদালতের জিআরও দেবাশিস হালদার বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।