অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস, অনিয়মিত জীবনযাপন, শরীরচর্চার অভাব সহ বিভিন্ন কারণে আজকাল শরীরে কামড় বসাচ্ছে জটিল রোগ। অল্প বয়সেই বাড়ছে ওবেসিটি, কোলেস্টেরল, থাইরয়েডের মতো সমস্যা। আর সেই সব রোগের হাত ধরে বাড়ছে হৃদরোগে আক্রান্তের সংখ্যাও। বিশেষ করে কোভিড পরবর্তী সময়ে ভারতীয়দের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্তের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়া নজরে এসেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আগে শরীরে বেশ কিছু উপসর্গ দেখা যায়। যা বুঝে সাবধান হলে অনেকাংশেই বিপদ এড়ানো সম্ভব।
বেশিরভাগ মানুষের ধারণা রয়েছে যে হার্ট অ্যাটাক মানেই বুকে তীব্র ব্যথা, ঘাম ও অজ্ঞান হয়ে পড়া। কিন্তু হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, বাস্তবে হৃদযন্ত্রের প্রাথমিক সংকেত অনেক সময়ে একেবারেই ভিন্ন হয়। অনেক রোগীর ক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাক শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা বা দিন আগে শরীর কিছু ‘নীরব সংকেত’ পাঠায়, যা সাধারণত আমরা ক্লান্তি বা হজমের সমস্যা বলে ভুল করি। বিশেষজ্ঞদের মতে, যখন শরীরে পর্যাপ্ত অক্সিজেন ও রক্ত সঞ্চালন বাধা পায়, তখন শরীর নানাভাবে বার্তা দেয়। কিন্তু এই প্রাথমিক ইঙ্গিতগুলোকে বেশিরভাগ মানুষ গুরুত্ব দেন না, আর তাতেই মারাত্মক বিপদ ঘটে। বুক ব্যথা না থাকলেও কয়েকটি উপসর্গ হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। যেমন-
আরও পড়ুনঃ নৈশভোজের পর ভুলেও করবেন না এই একটি কাজ! থেমে যেতে পারে হৃদযন্ত্র
অস্বাভাবিক ক্লান্তি ও অবসাদঃ যদি হঠাৎ করে স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি ক্লান্তি আসে, এমনকী বিশ্রাম বা ঘুমেও ক্লান্তি দূর না হয়, তাহলে সেটি হার্টের অক্সিজেন সরবরাহ কমে যাওয়ার ইঙ্গিত হতে পারে। বিশেষ করে মহিলাদের ক্ষেত্রে এটি একটি সাধারণ প্রাথমিক লক্ষণ।
২. শ্বাসকষ্ট বা হঠাৎ হাঁপ ধরাঃ অল্প পরিশ্রমেই যদি নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়, সিঁড়ি উঠলে শ্বাস আটকে যায় বা বুকে চাপ লাগে, তাহলে তা হৃদযন্ত্রের দুর্বল কার্যকারিতার লক্ষণ হতে পারে।
৩. গ্যাস্ট্রিক বা বমি ভাবঃ অনেকে পেট ফাঁপা বা গ্যাসের সমস্যা বলে মনে করলেও প্রকৃতপক্ষে হৃদযন্ত্রে রক্তপ্রবাহে বাধাগ্রস্ত হওয়ার লক্ষণ হতে পারে। এই উপসর্গ অনেক সময় অ্যাসিডিটি বলেও ভুল হয়। যা হৃদরোগের প্রাথমিক সতর্কতা হতে পারে।

৪. চোয়াল, গলা, কাঁধ বা পিঠে ব্যথাঃ হৃদরোগের কারণে ব্যথা অনেক সময় বুকে না হয়ে শরীরের অন্য অংশে দেখা দেয়। বিশেষত বাম কাঁধ বা উপরের পিঠে ব্যথা হলে তা কখনই উপেক্ষা করা উচিত নয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই নীরব লক্ষণগুলোকে গুরুত্ব না দিলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি দ্রুত বেড়ে যায়। অনেক সময় প্রাথমিক ইঙ্গিত উপেক্ষা করার কারণেই রোগীরা হাসপাতালে পৌঁছন দেরিতে। যার ফলে প্রাণ বাঁচানো দুষ্কর হয়ে ওঠে।
সতর্ক থাকতে কী করবেন
*হঠাৎ ক্লান্তি বা বুকে ভার লাগলে অবিলম্বে বিশ্রাম নিন ও চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
*ধূমপান, অতিরিক্ত তেল-মশলা খাওয়া, মানসিক চাপ ও অনিয়মিত জীবনযাপন এড়িয়ে চলুন।
*নিয়মিত হাঁটা, হালকা ব্যায়াম ও সুষম খাদ্যাভাস বজায় রাখুন।
