বলিউডে বরাবরই বাড়তে থাকা তারকাদের ‘এন্টোরাজ খরচ’ অর্থাৎ তাঁর অনুগামী, সহায়ক বা ব্যক্তিগত সহযোগী গোষ্ঠী নিয়ে বিপুল খরচ নিয়ে প্রযোজকদের অশান্ত গুঞ্জন শোনা যায়। সম্প্রতি, এক পডকাস্টে পরিচালক সঞ্জয় গুপ্ত অকপটে জানালেন, কিছু অভিনেতা শুটিং ফ্লোরে একসঙ্গে ছ’টি ভ্যানিটি ভ্যান দাবি করেন! অথচ মেগাস্টার অমিতাভ বচ্চন নিজের স্টাফের খরচ পর্যন্ত প্রযোজকদের উপর চাপান না।
সঞ্জয়ের কথায়, পুরোনো ঢঙের তারকা যেমন হৃতিক রোশন বা অমিতাভ বচ্চন—তাঁদের সঙ্গে থাকে শুধু একজন মেকআপম্যান আর একজন স্পটবয়। কিন্তু আজকের কিছু তারকার নাকি 'আবশ্যিক” নিয়মই ছ’টি ভ্যান!
তিনি ব্যাখ্যা করলেন—“ যা বলতে চলেছি, তা বিন্দুমাত্র ইয়ার্কি করে অথবা মশকরা করে বলছি না। দায়িত্ব নিয়ে বলছি! প্রথম ভ্যানটা একেবারে ব্যক্তিগত, সেখানে স্যার উলঙ্গ হয়ে বসে থাকেন। দ্বিতীয় ভ্যান মেকআপ-চুলের কায়দা কানুন করার জন্য। তৃতীয় ভ্যান অফিস মিটিংয়ের জন্য। চতুর্থ ভ্যান জিম—সঙ্গে ট্রেনার, সহযোগী, গাড়ি চালক, মেইনটেনেন্স ম্যান—শুধু এই এক ভ্যানের জন্যই প্রয়োজন ছ’জন লোক!”
এরপর যোগ হল ফুড ভ্যান—যেখানে ওই তারকার ব্যক্তিগত শেফ সারাদিন গ্রামে গ্রামে মেপে খাবার দেন। তারপর প্রয়োজন হল আরও এক ভ্যান—পূর্বের পাঁচ ভ্যানের স্টাফদের বসানোর জন্য!
সঞ্জয়ের দাবি, অনেক সময় সেটে একসঙ্গে ১১টা ভ্যান ঢুকে পড়ে। তিনি ঠাট্টা করে বলেন— “তারকা দম্পতিরা নাকি আরও খারাপ। বাড়িতে একসঙ্গে খান, কিন্তু সেটে এসে আলাদা আলাদা কিচেন ভ্যান চান!”
তবে শেষে অমিতাভ বচ্চনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ তিনি— “মিস্টার বচ্চন কোনওদিনই প্রযোজককে নিজের স্টাফের খরচ বহন করতে দেন না। তিনি বলেন, ওরা আমার লোক। আমার মেকআপম্যান, হেয়ারস্টাইলিস্ট, ড্রাইভার—সব খরচ আমার। আগে যেখানে দুই-তিন জনে কাজ চলত, এখন সেটা হয়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ জনের দল!”
শুধু এই ব্যাপারটি নয়। পরপর বলিউডের বিগ বাজেটের সব ছবি মুখ থুবড়ে পড়ছে বক্স অফিসে। পাঁচটির মধ্যে একটি ছবি হয়তো সাফল্যের মুখ দেখছে। কেন হঠাৎ করে হচ্ছে এমন? সমস্যাটা ঠিক কোথায়? হাতড়ে খুঁজে বের করলেন স্পষ্ট ভাষায় তিনি। ‘কাবিল-এর পরিচালক বলে চলেন, " একজন দর্শক অনেক কিছু পেরিয়ে তবে প্রেক্ষাগৃহে ছবি দেখতে যান। আর তিনি যান এই লক্ষ্য নিয়ে যাতে কয়েক ঘন্টার জন্য চারপাশের সমস্যা ভুলে অন্য জগতে ঢুকে পড়তে পারেন। আজকের দিন সে মুম্বই হোক কিংবা দেশের অন্য কোনও জায়গা...খারাপ রাস্তা, খোঁড়াখুঁড়ি, হাজারটা সমস্যা চারপাশে। সেসব পেরিয়ে যখন একজন দর্শক যখন তাঁর বন্ধুবান্ধব অথবা পরিবারের সঙ্গে প্রেক্ষাগৃহে ঢুকছেন ছবি দেখার জন্য, তার অর্থ টি সমস্যার পরেও তিনি ছবি দেখতে চান। আর এত কিছুর পর যদি সেই ছবিটি যদি দর্শকের মন না ভরাতে পারে তাহলে স্বাভাবিকভাবেই প্রেক্ষাগৃহের আসন ফাঁকা হতে শুরু করে। এবং অতি অবশ্যই একটি কারণ আমি বলব, বর্তমানে ভাল পরিচালকের অভাব। আগেকার মতো কোথায় সেই ভাল পরিচালক যারা দুরন্ত সব গল্প, চিত্রনাট্য নিয়ে ছবি তৈরি করতে পারতেন?
