
বুধবার ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
উদ্দালক
সুরেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পাদিত ভরতের নাট্যশাস্ত্র-এর শুরুতেই উল্লেখ আছে, দেবতারা ব্রহ্মাকে বলেছিলেন, চারবেদের কোনওটিই শূদ্রদের শ্রবনযোগ্য নয়। তাই এমন একটা বেদ সৃষ্টি করতে, যা শূদ্ররাও শ্রবণ করতে পারবেন।(১) পঞ্চম বেদের সৃষ্টি হল, ভরতের নাট্যশাস্ত্র। সেই বইতেই আছে, ঋগবেদ পাঠ্য, সামবেদ থেকে গান, যজুর্বেদ থেকে অভিনয়, অথর্ববেদ থেকে রসের বিপুল সম্ভার গ্রহণ করেছিলেন। এই চারকে মিলিয়ে তৈরি হল শ্রেষ্ঠ বেদ, নাট্যবেদ!(ঐ)
প্রসঙ্গান্তরে যাই। রবিবার গিরিশ মঞ্চে দেখতে গিয়েছিলাম মিনার্ভা রেপার্টারি প্রযোজিত, অর্পিতা ঘোষ নির্দেশিত ও ব্রাত্য বসু লিখিত নাটক 'মাৎস্যন্যায়'। গিরিশ মঞ্চ আমার বড় প্রিয়। নাটক দেখতে বা অভিনয় করতে বড় ভাল লাগে ওই মঞ্চ, তা সে রঙ্গমঞ্চ-ব্যকরণ যাই বলুক না কেন। এই নাটক আমার আগে পড়া হয়নি। সেই কারণে বলা ভাল কোনওরকম নিজস্ব ভাবনার জগত এই নাটককে ঘিরে, দেখার আগে তৈরির সুযোগ ছিল না। কিন্তু দু' ঘণ্টাধিক সময়ে যা অভিজ্ঞতা হল, তা একদিকে যেমন চিন্তাক্ষেত্রকে প্রসারিত করল, তেমনই তাজা, টাটকা, দূষণহীন বাতাসও দিয়ে গেল। প্রতিটি ক্ষেত্রেই নাটকে সত্যিই ধরা পড়ল ভারতীয় নাট্যধারার মৌলিকত্ব। মনে হল, এ তো আমারই দেশের গল্প, আমারই দেশের কথা, আমার মতো করে বলা, আমার মতো করে দেখানো।
ইদানিং বাংলা থিয়েটারের কয়েকটি খোপে ডিজাইনের চূড়ান্ত অশ্লীলতা শুরু হয়েছে। প্রথমদিকে বিষয়টা টাটকা ছিল, চমকপ্রদ ছিল। কিন্তু চমক দিতে-দিতে কখন থিয়েটারকে সেই চমক গিলে খেয়ে ফেলেছে, তা বোধহয় থিয়েটারওয়ালারাই বুঝতে পারেননি। এদিক-ওদিক করা একঘেয়ে মঞ্চসজ্জা, অভিনয়ের দৈন্যকে আলো আর সেটের মালায় ঢেকে ফেলার চেষ্টা, দর্শককে প্রযুক্তির কৃৎকৌশল দিয়ে চমকে দিয়ে অভিনয় ও নাটকের বিষয়বস্তু থেকে ঠেলে দেওয়া (যাতে আসল ফাঁক-ফোঁকরগুলো নজরে না পড়ে) নিয়ত নজরে পড়ে। ফলে ক্লান্ত লাগে। চোখও ক্লান্ত হয়, ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা হয় কখনও-কখনও। এই চূড়ান্ত অসভ্যতা ও অশিক্ষার কারাগার থেকে আমার দর্শক মনকে পালানোর পথ দেখালো মাৎস্যন্যায়।
আরও পড়ুন: শিকড়ে ডানার খোঁজে; রতন থিয়াম
আমার এক নাটকের শিক্ষক ছোটেবেলাতেই বুঝিয়েছিলেন, যে অভিনেতা স্ট্রেস ওয়ার্ড জানে না, সে কোনওদিন সফল অভিনেতা হতে পারে না। এই নাটকে যখন মহাবাহুরূপী বিদ্যুৎ চক্রবর্তী ডাউন সেন্টারে দাঁড়িয়ে বলেন, 'সৈনিক তাঁর ধর্ম ত্যাগ করতে পারে না, যুদ্ধ করে' কখনও শত্রুর বিরুদ্ধে, কখনও বা নিজের বিরুদ্ধে। এমকী ঈশ্বরও যদি সৈনিকের পথের সামনে এসে দাঁড়িয়ে দু' হাত তুলে তাঁর অন্তিম দিনক্ষণ ঘোষণা করেন, প্রকৃত সৈনিক তখন তাঁর তরবারি তুলে দ্বিখণ্ডিত করতে চায় সেই নিয়তিসদৃশ ঈশ্বরকে', প্রতিটি উচ্চারণে স্পষ্ট হয় সংলাপ ও মঞ্চে তাঁর অবস্থানের রাজনীতি। এখানেই ব্রাত্য-অর্পিতার সাঁড়াশি আক্রমণে বিদ্ধ হয় স্বত্তা! আসলে প্যান্ডেলে লাইট ব্যবহার করা হয় সাজানোর জন্য, আর নাটকের আলো ব্যবহার করা হয় রসনিস্পত্তির জন্য, কেউ-কেউ এটার ফারাক বোঝেন, আবার অনেকে বোঝেন না।
অর্পিতা ঘোষের ব্যক্তিগত জার্নি আমাকে অবাক করে, করেছেও বারংবার। থিয়েটারের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক আশ্চর্য। শুরু থেকে এই পর্যন্ত তিনি যে পথ দিয়ে হেঁটেছেন, সে পথই ঈর্ষার যথেষ্ট কারণ হতে পারে। কিন্তু সেই পথে-পথে চলতে, তিনি যা সঞ্চয় করেছেন, তার ঝকঝকে ছটায় বারবার উদ্ভাসিত হয়েছে মঞ্চ। হ্যাঁ, ঠিক, বিশেষণ হয়ত এতেও কম পড়বে। কারণ, অর্পিতা ঘোষ মুক্তি দিয়েছেন আমি-দর্শককে এই সার্কাসের থিয়েটারের বীভৎসতা থেকে। আমার বিশ্বাস বাড়ির ড্রয়িংরুমের নির্দিষ্ট কোণায় ফেঙসুই মূর্তিটি রাখারও নিজস্ব যুক্তি বাড়িওয়ালা-লি-এর কাছে থাকে। কিন্তু বাংলা বাজারে 'ডিজাইনার'-দের অনেকের কাছেই নিজের সাজিয়ে তোলা নাটকে কোনটা-কেন হচ্ছে তার নির্দিষ্ট যুক্তি নেই। কনে সাজানোর মতো তাঁরা মঞ্চ সাজান, ভাল লাগছে বলে। এই কুশিক্ষার যুগেও অর্পিতার ভাবনা শক্ত ভিতের উপর দাঁড়িয়ে, অনড়! বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মঞ্চকে তিনি যেভাবে ভেঙে-গড়ে নিয়েছেন বারংবার, তা আমার মতো নাট্যছাত্রের কাছে মাস্টারক্লাস! রেপার্টারি তো দল নয়, পেশাদার নাট্যকর্মীদের পেশাদার অফিস। সেখানে সমস্ত কুশিলবদের এক তরঙ্গে এনে তাঁদের দিয়ে এই মহাকাব্যিক কাজ করিয়ে নেওয়াও দারুণ মুন্সিয়ানার বিষয় বটে। তাঁর নাটক নির্মাণের ছত্রে ছত্রে রয়েছে সেই বিপুল পরিশ্রমের ছাপ। শাণিত ফলার মতো পরবর্তী অভিনয়গুলিতে হয়ত অর্পিতার এই ঝকঝকে তরবারিরা আরও টানটান হয়ে উঠবেন, উঠবেনই।
নাটকটি লিখেছেন ব্রাত্য বসু। শারদীয়া আনন্দলোক-এ লেখা এই নাটকটি সিগনেট প্রেস থেকে বই আকারেও প্রকাশি হয়েছে। শেক্সপিয়রের প্রথমদিকের লেখা ট্র্যাজেডি 'টাইটাস অ্যান্ড্রনিকাস' ও বানভট্টের 'হর্ষচরিত' অবলম্বনে এই নাটক লিখিত। প্রথমত বলতে হয়, নাটকের সংলাপে যে ধরণের শব্দ তিনি বারংবার ব্যবহার করেছেন, ইদানিং জনপ্রিয় পিরিয়ড সাহিত্য থেকেও তেমন শব্দের ব্যবহার উবে গিয়েছে। এই নাটকের সংলাপ আমাদের নিয়ে যায় আদিতে। বাংলা ভাষার সাগরের তলদেশের যে প্রাণীকূল, যে উদ্ভিদকূলের সঙ্গে সাক্ষাৎ নেই বহুকাল, তাঁকে সামনে এনে দাঁড় করায়। আর সত্যি বলতে কী, এ সময়ের নাটক লিখিয়েদের মধ্যে তিনি শচিন টেন্ডুলকর, কে তাঁর মূল্যায়ণ করবে! সংলাপের চাবুক পরপর, সুযোগ না দিয়ে পিঠে পড়ে দর্শকের! স্যাত করে শব্দ করে ওঠে আত্মা!
রেপার্টারি যেন এক সমবায়। তাই আলাদা করে অভিনেতাদের ভাল-খারাপের কথা এখানে বলতে বসিনি। বলতে বসিনি নাটকের গল্পটিও। আমার ধারণা মিনার্ভার এবারের ব্যাচ থেকেও কেউ-কেউ হয়ত অনেকদূর ধাওয়া করবেন অভিনয় নামক পাগলামীকে। কারণ, তাঁদের চোখে আছে সেই ধাওয়া দেওয়া তাগিদ। নাটকে অসাধারণ সঙ্গীতপ্রয়োগ করেছেন পণ্ডিত দিশারী চক্রবর্তী। তাঁর ধ্রুপদী উপস্থিতিতে কোথাও শো-ম্যানশিপ নেই, বরং আছে চাতূর্য ও নিপুণ দক্ষতা। নাটকের আলো করেছে পল্লব জানা। তিনি দক্ষতায় কাজ না করলে আঁতের কাছে পৌঁছে যাওয়া এই নাটকের অপূর্ব স্বাদ পেতাম না।
আমি বিশ্বাস করি না, সময় কখনও বন্ধ্যা হতে পারে। সে প্রসব করবেই সময়ের ভাষ্য। আমি মনে করি না, সমস্ত রাস্তা একসঙ্গে বন্ধ হয়ে যেতে পারে, রক্তকরবীর যক্ষপুরীর মতো, এ পৃথিবীতেও নন্দিনীর মতো আলো এসে পড়ে, এক চিলতে হলেও পড়ে। ডিজাইন অশ্লীলতার বাজারে এই নাটক তেমনই এক চিলতে আলো। নাটক লেখাকে ও সংলাপ বলাকে যখন সবচেয়ে কম গুরুত্ব দিয়ে নাটকের সাড়ে সর্বনাশ করা হচ্ছে, তখন এই নাটকের সংলাপ জন হেনরির হাতুড়ির মতো সজোরে ধাক্কা মারে মরমে। মৃত্যুর আবশ্যিক ভাবনায় দাঁড়িয়েও এই নাটক আসলে সংখ্যালঘু ফর্মের দিকে তাকনো লোকগুলোকে একটা রাস্তা দেখিয়ে দিয়ে গেল হয়ত বা।
‘টাইম ম্যানেজমেন্ট’-এই লুকিয়ে সাফল্যের চাবিকাঠি, হাজার ব্যস্ততার মাঝেও কোন জাদুতে সময় সামলান অম্বানি?
বাসি চামড়ার মতো শক্ত হয়ে যায় রুটি? নরমও হবে, ফুলকোও হবে, শুধু জানা চাই হেঁশেলের গোপন টোটকা
"একই বিছানায় ২ স্ত্রী, ১ প্রেমিকাকে নিয়ে..." সমাজের রীতিনীতিকে বুড়ো আঙুল বহুগামী পরিবারের
ব্লক হয়ে গিয়েছে ধমনী, আগেই সঙ্কেত দেয় শরীর! জীবন-মরণের তফাৎ গড়ে দিতে পারে কোন কোন লক্ষণ?
নেপালের আগেই এই পাঁচ দেশে ফেসবুক-এক্স-ইনস্টাগ্রাম নিষিদ্ধ! জানেন কোনগুলি?
চশমা লাগবে সন্তানের, কীভাবে বুঝবেন বাবা-মা? নজর রাখতে হবে ৪ বিশেষ উপসর্গে
দক্ষিণ আফ্রিকার লিগে সবচেয়ে দামী, তাঁকে গেমচেঞ্জার বললেন সৌরভ
অবিশ্বাস্য! মহারণের বাকি মাত্র চারদিন, অবিক্রিত ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের টিকিট
খপাত করে ধরে ফেলল চোরদের, নেপথ্যে কারা? একদল বেওয়ারিশ কুকুর! সত্য জানলে ভিরমি খাবেন
আন্দোলনকারীদের শান্ত থাকার আবেদন নেপাল সেনার, নাহলে কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি
অবিশ্বাস্য! মহারণের বাকি মাত্র চারদিন, অবিক্রিত ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের টিকিট
শ্রীলঙ্কা-বাংলাদেশের পর নেপাল, গণ-অভ্যুত্থান না কাঠমান্ডুতে কাঠপুতুল?
দুধ খেলে কি কিডনিতে পাথর হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে? ভাইরাল তত্ত্ব কতটা সত্যি? বিজ্ঞান কী বলছে?
কানাডায় ছাত্র ভিসার ৮০% বাতিল, বিকল্প খুঁজছে ভারতীয় শিক্ষার্থীরা
এশিয়া কাপের বিজয়ীর পুরস্কার মূল্য থেকে আট গুণ বেশি এই তারকার ঘড়ির দাম, শুনলে হবে চক্ষু চড়কগাছ
আচমকা আর্তনাদ! ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ, পড়ে রয়েছে যুবকের নিথর দেহ, পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় বন্ধুর কান্না, পড়ুয়ার মৃত্যু ঘিরে রহস্য তুঙ্গে
ঠান্ডা ঠান্ডা কুল কুল এসি লোকালের স্টপেজের সংখ্যা বাড়ছে, কোন কোন স্টেশনে দাঁড়াবে?
যৌনসুখ দূরের কথা, মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে দাঁত ভেঙে বাড়ি ফিরল নবদম্পতি! সুইজারল্যান্ডে হাড়হিম অভিজ্ঞতা
পুজো তো এসেই গেল! কীভাবে ঝটপট ঘষেমেজে নেবেন রান্নার স্কিলসেট? রইল হদিশ
শুধু সঙ্গীর ভালবাসার স্পর্শে খুলবে অন্তর্বাস! অভিনব ‘বায়োমেট্রিক ব্রা’ তৈরি করে চমক পড়ুয়ার
জট কাটল চিংড়িঘাটা মেট্রোর, যান নিয়ন্ত্রণ কী ভাবে? জেনে নিন এখনই
‘স্তনে তীব্র যন্ত্রণা হত, তবু এর মতো সৌভাগ্য আর নেই!’ নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে খুল্লম-খুল্লা অভিনেত্রী ইলিয়ানা ডি ক্রুজ
পুলিশের কানে কানে গোপন কথা, তারপরেই ছাড়া পেল নাবালিকাকে ধর্ষণ ও খুনে অভিযুক্ত! মোদির রাজ্যে পুলিশের কীর্তিতে ক্ষিপ্ত জনতা
ফোকাসড গিলরা, এশিয়া কাপ শুরুর আগে বিশেষ প্রস্তুতি টিম ইন্ডিয়ার