আজকাল ওয়েবডেস্ক: ৪ সেপ্টেম্বর। শিক্ষক দিবসের প্রাক্কালে বৃহস্পতিবার সকালে কলকাতার ধনধান্য অডিটোরিয়ামে শিক্ষাক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য রাজ্য সরকারের তরফে দেওয়া হল শিক্ষারত্ন সম্মান। সংবর্ধনা দেওয়া হল ২০২৫ সালের কৃতী ছাত্রছাত্রীদেরও। সেখানেই উপস্থিত থাকতে দেখা গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে। অনুষ্ঠানে সেরা ১২টি স্কুলকে শিক্ষা ও খেলাধূলায় উৎকর্ষের জন্য পুরস্কার প্রদান করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিনের অনুষ্ঠানে শিক্ষারত্ন পেলেন ৭৩ জন শিক্ষক। তাঁদের মধ্যে ৩৯ জন স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা, ২১ জন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং ১৩ জন ভোকেশনাল এবং অন্যান্য আইআইটি বিষয়ক শিক্ষক। সকলকে পুরস্কৃত করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। মানপত্র, শাল, ঘড়ি, স্মারক, বই এবং ২৫ হাজার টাকা পেলেন প্রত্যেকে।
আরও পড়ুন: সোহনের বিরহে মৃত্যু সোহিনীর! ঝড়খালি ব্যাঘ্র পুনর্বাসন কেন্দ্রে শোকের ছায়া
এর পাশাপাশি শিক্ষক দিবস উপলক্ষে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, মাদ্রাসা–সহ বিভিন্ন বোর্ডের পরীক্ষায় এবং জয়েন্ট এন্ট্রান্সে প্রথম হওয়া ১৯ জন ছাত্রছাত্রীকে সম্মানিত করা হল। সমস্ত বোর্ড মিলিয়ে ৩৮৭ জন কৃতী ছাত্রছাত্রীকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। তাদের দেওয়া হয়েছে মানপত্র, ট্যাব, ল্যাপটপ, জেমস অফ বেঙ্গল নামে একটি বই, মুখ্যমন্ত্রীর স্বাক্ষর করা ডায়রি এবং ১২টি বই।
অনুষ্ঠানে মমতা বলেন, ‘আগে স্কুলছুটের হার ছিল খুব বেশি। ছোট মেয়েদের খুব অল্প বয়সে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হত। কন্যাশ্রী, ঐক্যশ্রী, মেধাশ্রী ইত্যাদি নানা প্রকল্পের পর শিক্ষায় স্কুলছুটের সংখ্যা শূন্যে নেমে এসেছে।’ মমতার কথায়, ‘এই বাংলার অ্যাসেম্বলি থেকেই একদিন সতীদাহ প্রথা রদ বিলও পাশ হয়েছিল। তার পর তা গোটা ভারতে গৃহীত হয়। অর্থাৎ পথ দেখিয়েছিল বাংলাই। এগুলো আমাদের গর্বের জায়গা। আমরা যেন আমাদের অস্তিত্ব ভুলে না যাই।’ মমতার সংযোজন, ‘সব ভাষা শিখুন। কিন্তু নিজের অস্মিতাকে ভুলে যাবেন না।’ চাকরিহারা শিক্ষকদের আশ্বস্ত করে মমতা বলেন, ‘অন্য ব্যবস্থা করব। আইনি পথে অন্য কোনও ব্যবস্থা করব।’
আরও পড়ুন: পুজোর আনন্দ পণ্ড করবে বৃষ্টি? জানুন হাওয়া অফিসের টাটকা আপডেট কী বলছে...
শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে চিন্তিত মমতা বলেছেন, ‘যাঁরা দশ বছর চাকরি করেছেন, তাঁরাও আজ অযোগ্য প্রমাণিত হয়েছেন। আমি আইনি পরামর্শ নিচ্ছি। হয়তো শিক্ষক তাঁরা হতে পারবেন না, কিন্তু তাঁরা যাতে অন্তত গ্রুপ সি–র চাকরি পান, তার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি। আমাদের সরকার মানবিক সরকার। শিক্ষকদের অন্তরের অন্তস্তল থেকে শুভকামনা জানাচ্ছি।’ মমতার কথায়, ‘আমাদের শিক্ষক পদে এখনও মোট ৫৬ হাজার শূন্যপদ রয়েছে। এর মধ্যে ৩৫,৭২৬টি পদের জন্য বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়েছে। আরও ২১ হাজার পদ খালি রয়েছে। আমরা নিয়োগ করতে চাই। কিন্তু আইনের জটিলতায় হচ্ছে না।’
অনুষ্ঠানে মমতা আরও বলেছেন, ‘সেরা স্কুলগুলির মধ্যে এ বার রামকৃষ্ণ মিশনগুলিই বেশির ভাগ স্থান দখল করে নিয়েছে। বিভিন্ন জেলার স্কুলগুলিও এগিয়ে এসেছে। যাঁরা সমাজ গড়েন, যাঁরা শিক্ষালয় গড়েন, তাঁদের আমি সম্মান করি।’
আরও পড়ুন: বিষ নয় স্যার, পালানোর জন্য ঘুমের ওষুধ মিশিয়েছিলাম, দুই বৌয়ের অকপট স্বীকারোক্তি...
