মুম্বইয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন কিংবদন্তি পরিচালক রামানন্দ সাগরের বড় ছেলে ও প্রযোজক-সিনেমাটোগ্রাফার প্রেম সাগর। রবিবার, ৩১ আগস্ট সকালে ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। কিছুদিন ধরেই তিনি অসুস্থ ছিলেন। চিকিৎসার পর তাঁকে বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং সেখানেই শেষরক্ষা হল না, প্রয়াত হন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।

 


প্রেম সাগরের শেষকৃত্য সোমবার বিকেল তিনটের সময় মুম্বইয়ের পবন হংস শ্মশানঘাটে সম্পন্ন হয়। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই পুরো চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন জগত জুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া। ১৯৬৮ সালে পুণের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া (এফটিআইআই) থেকে সিনেমাটোগ্রাফি নিয়ে পড়াশোনা করেন প্রেম সাগর। এরপর তিনি পরিবার পরিচালিত প্রযোজনা সংস্থা সাগর আর্টস-এর সঙ্গে যুক্ত হন। বিখ্যাত ধারাবাহিক ‘রামায়ণ’, ‘বিক্রম অউর বেতাল’, ‘শ্রীকৃষ্ণ’, ‘মহিমা শনি দেব কী’র মতো  জনপ্রিয় ধারাবাহিকে তিনি সিনেমাটোগ্রাফার ও প্রযোজকের দায়িত্ব সামলেছেন। তাঁর ক্যামেরার কাজ দর্শকের কাছে আজও সমানভাবে প্রশংসিত।


টেলিভিশনের পাশাপাশি বড়পর্দাতেও তিনি বাবার প্রতিষ্ঠিত ধারা এগিয়ে নিয়ে যান। নিখুঁত ফ্রেম, সূক্ষ্ম দৃষ্টি আর শিল্পভাবনাকে তিনি এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন। শুধু ক্যামেরার পিছনের কারিগর নন, তিনি ছিলেন শিল্পের একজন রক্ষক।

 

তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বহু তারকা। অভিনেতা সুনীল লাহরী, যিনি ‘রামায়ণ’-এ লক্ষ্মণের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন, লিখেছেন— 'খুবই ধাক্কা দেওয়া খবর… ওম শান্তি।' অন্যদিকে রামচন্দ্রর ভূমিকায় অভিনয় করা অরুণ গোভিল এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন— 'শ্রদ্ধেয় প্রেম সাগরজীর মৃত্যু অত্যন্ত বেদনাদায়ক। প্রার্থনা করি ভগবান শ্রী রাম তাঁর আত্মাকে চরণে স্থান দান করুন।'

 

আরও পড়ুন: বিয়ের পর প্রথমবার বরকে নিয়ে রেড কার্পেটে হাঁটলেন নার্গিস ফাকরি, জানেন অভিনেত্রীর স্বামীর আসল পরিচয়?

 

প্রেম সাগরের অবদান শুধু শিল্পের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, তিনি ছিলেন শান্ত স্বভাবের, বিনয়ী এবং সংস্কৃতিমান এক মানুষ। সহকর্মীরা তাঁকে স্মরণ করছেন এক নির্ভুল ও নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তিত্ব হিসেবে। তিনি রেখে গিয়েছেন ছেলে শিব সাগরকে, যিনি পারিবারিক ঐতিহ্য বহন করে বিনোদন জগতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

 

সিনেপ্রেমীরা মনে করছেন, প্রেম সাগরের প্রয়াণে এক স্বর্ণযুগের সমাপ্তি ঘটল। তাঁর কাজ, তাঁর শিল্পভাবনা এবং টেলিভিশনের জন্য অপরিসীম অবদান আগামী প্রজন্মকে চিরকাল অনুপ্রেরণা জোগাবে।