আজকাল ওয়েবডেস্ক: সোমে উত্তাল রাজধানী। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিরোধীরা সুর চড়াতেই অতি তৎপর দিল্লি পুলিশ। বিক্ষোভরত সাংসদদের পুলিশ আটক করে বাস তুলতেই স্লোগানের মাঝেই জ্ঞান হারান তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্র। কিছুক্ষণ আগেই, বিক্ষোভে উত্তাল রাজপথে পুলিশ মিছিল আটকে দিলে, ব্যারিকেডে উঠে স্লোগান দিতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে।

 

অন্যদিকে, প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত জানা গিয়েছে, পুলিশ দিল্লির রাস্তায় সাংসদের আটকানোর চেষ্টা করলে শুরু হয় ব্যাপক ধস্তাধস্তি। জখম হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ মিতালি বাগ। সকাল থেকে দফায় দফায় চরম উত্তেজনা রাজধানীর রাস্তায়। 

আরও পড়ুন: 'চুপি চুপি ভোটের কারচুপি', ব্যারিকেডে উঠলেন মহুয়া, স্লোগান অখিলেশের, ধুন্ধুমার দিল্লিতে আটক রাহুল-প্রিয়াঙ্কা

 

 অভিযোগ ভোটচুরির। বিহার ভোটের আগে, এক ইস্যুতে একজোট বিরোধীরা। রেশ পড়ল দিল্লিতে। এসআইআর এর বিরোধিতায় সকাল থেকেই সরব বিরোধী দলের সাংসদরা। তবে বেলা বাড়তেই একপ্রকার অবরুদ্ধ দেশের রাজধানী। রাজধানীতে স্লোগান, প্রতিবাদ, ধুন্ধুমার। অনুমতি ছাড়া মিছিলের অভিযোগে একে একে আটক করা হচ্ছে সাংসদদের। প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত জানা গিয়েছে, রাজপথে মিছিলের অভিযোগে, রাহুল গান্ধীদের আটক করা হয়েছে। ঘটনা প্রসঙ্গে বিজেপির নেতারা বলতে শুরু করেছেন, পুলিশের অনুমতি ছাড়া মিছিলে বেরোলে, আটক স্বাভাবিক।

এসআইআর নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই একজোট বিরোধীরা। রাহুল গান্ধী ইতিমধ্যেই ভোটের কারচুপি নিয়ে রাজনীতিতে অ্যাটম বোমা ফাটিয়েছেন। কোথাও ভুয়ো ভোটার, কোথাও ঠিকানা জাল বা একই ঠিকানায় অনেক ভোটার। আবার এক ব্যক্তিই ভিন্ন ভিন্ন রাজ্যের ভোটার! বৃহস্পতিবার একেবারে ‘তথ্য-‌প্রমাণ’  সামনে এনে বিজেপি ও নির্বাচন কমিশনকে নিশানা করেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা। 

বিরোধী সাংসদদের পরিকল্পনা ছিল, সোমবার মকরদ্বার থেকে বিরোধী সাংসদরা মিছিল করে যাবেন নির্বাচন সদন অর্থাৎ নির্বাচন কমিশনের সদর দপ্তর পর্যন্ত। শুরু হয় প্রতিবাদ। বিরোধী দলের সাংসদদের হাতে ছিল বাংলা-সহ নানা ভাষায় লেখা প্রতিবাদ, স্লোগান। উল্লেখ্য, এর আগেই, রবিবার জানা গিয়েছিল, বিরোধীদের মিছিলের অনুমতি দিচ্ছে না দিল্লি পুলিশ। এদিন সংসদের ভিতরেই এসআইআর-এর জেরে তুমুল হইচই শুরু হওয়ায়, দুপুর পর্যন্ত সংসদের দুই কক্ষেই মুলতুবি হয়ে যায়। 

 

এর আগে, ৭ আগস্ট ইন্দিরা ভবনে রাহুল সাংবাদিক বৈঠক করে ভোট চুরির গুরুতর অভিযোগ তোলেন। লোকসভা ভোটের ফল নিয়ে দলীয় অন্তর্তদন্তে যে তথ্য উঠে এসেছে, তাতে ভোট চুরি হয়েছে বলে মনে করেন কংগ্রেস নেতা। কীভাবে কারচুপি হয়েছে, তা নিখুঁতভাবে তুলে ধরেন রাহুল। তাঁর তথ্যে ভুল রয়েছে, প্রমাণ করুক কমিশন—কমিশনকে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন লোকসভার বিরোধী দলেনেত। তাঁর আরও অভিযোগ, নির্বাচন কমিশন ডিজিটাল ভোটার তালিকা দিতে অস্বীকার করেছে। বিধি বদলে ৪৫ দিনের মধ্যে সিসিটিভি ফুটেজ মুছে দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন আসলে লুকোতে চাইছে কী? 

রাহুল যে তথ্য সেদিন জনসম্মুখে রাখেন, সেগুলি গুরুতর। তিনি জানিয়েছেন, গুরুপ্রীত সিং ডাং। কর্ণাটকের মহাদেবপুরার ভোটার। ভোটার তালিকায় ৪ জায়গায় নাম রয়েছে তাঁর। আদিত্য শ্রীবাস্তব। কর্ণাটকের ২ জায়গায়, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশের ভোটার। বিশাল সিং। উত্তরপ্রদেশ এবং কর্ণাটকের ভোটার। ভোটার তালিকায় ছবি সহ নাম আছে, কিন্তু বাড়ির ঠিকানা ‘০’‘#’। মহাদেব পুরা বিধানসভা কেন্দ্রে ৪০ হাজার এমন ভুয়ো ঠিকানার ভোটার!‌ অবাক করা তথ্য হল বাড়ি নং ৩৫-‌ ভোটার ৮০ জন। এক কামরার বাড়িতে এতজন ভোটার! বাড়ি নং—৭৯১, ভোটার সংখ্যা ৪৬। বাণিজ্যিক ঠিকানায় থাকেন ৬৮ ভোটার!‌ কংগ্রেসের তদন্তকারী দল‌‌‌ সংশ্লিষ্ঠ এলাকায় গিয়ে বাড়ি বাড়ি ঘুরে অস্তিত্ব খুঁজে পাননি ওই সব ভোটারদের। শকুন রানি। ৭০ বছরের বৃদ্ধা। ফর্ম ৬ পূরণ করেছেন দু’মাসে দু’বার। ভোটার তালিকায় দুটি জায়গায় নাম রয়েছে তাঁর। কংগ্রেসের প্রশ্ন, ফর্ম ৬ কেবল নতুন ভোটারদের জন্য। ৭০ বছরের শকুন রানিদের মতো এভাবেই হাজার হাজার ভুয়ো ভোটার রয়েছে।