আজকাল ওয়েবডেস্ক: আবারও নৃশংস হত্যাকাণ্ডে উত্তর প্রদেশ শিরোনামে। এবার ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর প্রদেশের সম্ভাল এলাকায়৷ খবর সূত্রে জানা গিয়েছে, এক দম্পতি ৪৫ বছর বয়সী এক প্রৌঢ়কে হত্যা করেছে। প্রথমে স্ক্রু ড্রাইভার এবং প্লায়ারের মতো কিছু সরঞ্জাম ব্যবহার করে প্রৌঢ়কে মারধর করে। পরপবর্তীতে তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করে বলে অভিযোগ। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়৷ তদন্ত শুরু হয়েছে বলে খবর। এই ঘটনা ঘিরে ফের রাজ্যজুড়ে ভীত সন্ত্রস্ত।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, পুলিশ দম্পতিকে ইতিমধ্যেই আটক করেছে। পুলিশি হেফাজতে নিয়ে গিয়ে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সূত্রে জানা যায়, ঘটনাটি ঘটে শনিবার। অভিযুক্ত দম্পতি ওই ৪৫ বছর বয়সী অনিশকে প্রথমে তাঁদের বাড়িতে ডেকে নিষ্ঠুরভাবে মারধর করে। তাঁরা প্লায়ার দিয়ে ব্যক্তির দাঁত উপড়ে ফেলেন এবং লোহার রড দিয়ে বারবার আঘাত করতে থাকেন৷
পুলিশ সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছে, ভুক্তভোগীর পরিবারের একাংশ দাবি করেছে যে ৭ লক্ষ টাকা ঋণের জন্য তাঁকে নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয়েছে। তবে অন্যদিকে পুলিশ অনুমান করছে যে এই ভয়াবহ অপরাধের পিছনে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে।
অনিশের বাবা মুস্তাকিমের মতে, সম্প্রতি অনিশের বিয়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এর জেরে তিনি ধার দেওয়া টাকা ফেরত চাইতে পাশের বাড়ি এক দম্পতির বাড়ি যান। জানা গিয়েছে তিনি তাঁর প্রতিবেশীর বাড়িতে (অভিযুক্ত দম্পতির বাড়িতে) গিয়েছিলেন বছর খানেক আগে ধার দেওয়া ৭ লক্ষ টাকা ফেরত চাইতে। কারণ সামনেই তাঁর বিয়ে।
'তারা আমার ছেলেকে এত নৃশংসভাবে হত্যা করেছে যে আমি বর্ণনাও করতে পারছি না,' সংবাদমাধ্যমকে হত্যাকাণ্ডের কথা বলতে গিয়ে অনিশের বাবা বলেন।
এরপর শনিবার রাত ২ টোর দিকে, অনিশের বড় ভাই তাঁর ছোট ভাইয়ের উপর হামলার খবর পান। গুরুতর আহত অবস্থায় অনিশ কোনওভাবে দম্পতির বাড়ি থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। এরপর তাঁকে তাঁর নিজের বাড়ির ড্রয়িংরুমে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। তৎক্ষণাৎ তাঁকে কমিউনিটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থা মারা যান।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজেশ কুমার শ্রীবাস্তব বলেন, পুলিশ গতকাল গভীর রাতে অনিশের মৃত্যুর খবর পেয়েছে। 'আমরা একটি খুনের মামলা দায়ের করছি এবং পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
আরও পড়ুনঃ সাংসারিক কলহ মূল কারণ? তিন সন্তান নিয়ে মায়ের চরম পদক্ষেপ, উত্তর প্রদেশে হাড়হিম কাণ্ড ...
শ্রীবাস্তব বলেন, তদন্তে জানা গিয়েছে যে অনিশের প্রতিবেশী রইস আহমেদ এবং তাঁর স্ত্রী সিতারা মূল অভিযুক্ত। ঋণ শোধের বদলে তাঁকে নির্মম ভবে খুন করেছেন দম্পতি। 'জিজ্ঞাসাবাদের সময় আমরা জানতে পেরেছি যে ভুক্তভোগী অনিশের, সিতারার সঙ্গে একটি অবৈধ সম্পর্ক ছিল। রইস এবং সিতারা অনিশকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল। তাঁকে ডেকে এনে হত্যা করেছিল,' সংবাদমাধ্যমের উদ্দেশে শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন৷
বর্তমানে অভিযুক্ত দম্পতিকে জেরা করা হয়েছে৷ জিজ্ঞাসাবাদ চলছে৷ এমন ঘটনার পেছনে অন্য কোনও কারণ আছে খতিয়ে দেখা হচ্ছে সেটিও৷ পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ দ্রুত নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ।
