বয়সের ঘড়ি থেমে নেই, কিন্তু বয়স যেন তাঁর কাছে কেবল একটি সংখ্যা মাত্র। ৫৯ বছর বয়সেও মিলিন্দ সোমন স্বাস্থ্য, ফিটনেসে টেক্কা দিতে পারেন নতুন প্রজন্মকে। মিলিন্দ সোমন মানেই ফিটনেস। সুঠাম দেহ, বলিষ্ঠ চেহারা। নব্বইয়ের দশকের ভারতীয় মডেলিং দুনিয়ার বেতাজ বাদশার ফিটনেস তাক লাগিয়ে দেয়। বয়স বাড়লেও আলিশা চিনাইয়ের 'মেড ইন ইন্ডিয়া'র তারকার জন্য প্রযোজ্য ‘হিট অ্যান্ড ফিট’। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রায়ই নিজের ফিটনেসের ঝলক সামনে আনেন মিলিন্দ। সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে তিনি তাঁর ফিটনেসের রহস্য ফাঁস করেন।
• ঘণ্টার পর ঘণ্টা শরীরচর্চা নয়, চাই প্রতিদিনের নিয়মঃ মিলিন্দ সোমানের মতে, শরীরচর্চার জন্য জিমে গী৪ঘক্ষণ কাটানোর প্রয়োজন নেই। তিনি বলেন, “আমি ব্যায়ামে প্রতিদিন মাত্র ১৫-২০ মিনিট সময় দিই, কিন্তু সেটি আমি নিয়মিত করি। ফিটনেস আমার কাছে খাওয়া-ঘুমের মতোই জরুরি-এর কোনও বিকল্প নেই, বরং অভ্যাস।” তাঁর মতে, প্রতিদিনের রুটিনে নির্দিষ্ট সময় ব্যায়ামের জন্য রাখলে ব্যস্ত জীবনেও সক্রিয় থাকা সম্ভব।
• ঘুম থেকে উঠেই চা-কফি নয়ঃ মিলিন্দের ডায়েটে থাকে না চা কিংবা কফি। ঘুম থেকে উঠে প্রথমেই তিনি খান ফলের রস। তাঁর কথায়, "ছোটবেলা থেকে চা-কফি খাওয়ার অভ্যাস নেই। আমি ছোট বয়সে কোথাও একটা পড়েছিলাম যে চা-কফি খাওয়া খারাপ অভ্যাস। সেই কথাই মনে থেকে গিয়েছে।" ক্যাফিনেটেড পানীয়ের চেয়ে ফলের রস পছন্দ করা মিলিন্দের স্বাস্থ্য সচেতনতার অন্যতম লক্ষণ। শুধু তাই নয়, এই অভ্যাস ষাটের কাছাকাছি বয়সেও তাঁর অফুরন্ত এনার্জি ও চেহারা ধরে রাখার মূলে রয়েছে।
• খাদ্যাভাসে নিয়মানুবর্তিতাঃ সুষম ও স্বাস্থ্যকর ডায়েটের উপর জোর দেন তিনি। মিলিন্দ জানিয়েছেন, তিনি ভাজা খাবার পছন্দ করেন না এবং মাংসও খুব একটা খান না। দশম শ্রেণী পর্যন্ত খেলাধুলা করতেন। তাঁর প্রতিযোগিতামূলক সাঁতারে আগ্রহ ছিল। তাই ছোট থেকে পুষ্টিকর ডায়েট মেনে চলতেন তিনি।
• আকর্ষণীয়তার রহস্য বয়সে নয়ঃ অনেকের ধারণা, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আকর্ষণ কমে যায়। কিন্তু মিলিন্দ মনে করেন, আকর্ষণ নির্ভর করে আত্মবিশ্বাস, উপস্থিতি ও স্বকীয়তার উপর। তিনি বলেন, “নিজের যত্ন নেওয়া, সঠিক ভঙ্গিতে নিজেকে উপস্থাপন করা এবং নিজের উদ্দেশ্য জানা—এই জিনিসগুলোই মানুষকে আকর্ষণীয় করে তোলে।”

• শর্টকাটের পথে নয়, স্থায়ী অভ্যাসে ভরসাঃ বর্তমানে হরেক রকমের ডায়েট থেকে শুরু দ্রুত ওজন কমানোর ওষুধ বেশ জনপ্রিয়। কিন্তু মিলিন্দ সোমান তাতে আগ্রহী নন। তিনি মনে করেন, সত্যিকারের ফলাফল আসে দীর্ঘমেয়াদে সঠিক অভ্যাস গড়ে তুললে। সঠিক খাওয়াদাওয়া, নিয়মিত সক্রিয় থাকা, শরীরের কোনও সমস্যার লক্ষণ বোঝা-এগুলোই সুস্থতার চাবিকাঠি। শর্টকাটে সাময়িক ফল মিললেও তা স্থায়ী হয় না।
• স্বাস্থ্যকর জীবনধারাই প্রকৃত ফিটনেসঃ মিলিন্দ জানিয়েছেন, তিনি সক্রিয় থাকা, পর্যাপ্ত জল পান, সময়মতো ঘুম এবং পরিমিত ও স্বাস্থ্যকর খাবারকে জীবনের মূল ভিত্তি বানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, “শান্ত মন আর সুস্থ শরীর-এটাই আমার জীবনের ফিটনেসের রহস্য।
