আজকাল ওয়েবডেস্ক: দুই বোন। তুতো বোন। আচমকা একসঙ্গেই নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন। খোঁজ না মেলায় পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় নিখোঁজ ডায়েরিও করা হয়েছিল। একজনের বাবা অভিযোগ করেছিলেন অপর এক আত্মীয়ের বিরুদ্ধেই। কিন্তু গুরুতর অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করতেই দেখা গেল আদতে ঘটনা একেবারে অন্য। পুলিশের কাছে আশ্বাস পেয়ে দুই বোন যখন ঘরে ফিরল, হাঁ হয়ে গেল পরিবার। স্থানীয় সূত্রে খবর, দুই বোন ঘরে ফিরেছে দম্পতি হিসেবে। বিয়ে করে।

ঘটনা উত্তরপ্রদেশের, মুজফফরপুর নগরের। স্থানীয় অমর উজালা পত্রিকার এক প্রতিবেদন অনুসারে, এক মেয়ের বাবা আইজিআরএস পোর্টালের মাধ্যমে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তার বিবৃতিতে তিনি অভিযোগ করেছিলেন, মুজাফফরনগরের টিটাউই গ্রামের অন্য একটি গ্রামে বাস করা তুতো ভাই, মেয়েকে ভুল বুঝিয়ে তুলে নিয়ে গিয়েছে।  তিনি আরও সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন যে তার মেয়েকে কোথাও বিক্রি করা হয়েছে। মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে একপ্রকার আতঙ্কে দিন কাটছিল পরিবারের। চারদিকের নানা সংবাদ সেই আতঙ্ক বাড়িয়ে দিয়েছিল কয়েকগুণ। তবে পরিবারের সদস্যরা ঘুণাক্ষরেও ভাবতে পারেননি, তাঁদের অজান্তে ঠিক কোন ঘটনা ঘটছে। ভাবতেই পারেন নি, মেয়েরা ঘরে ফিরলে, জানতে পারবেন এক অন্য তথ্য।

 

আরও পড়ুন: সকাল থেকে মেঘলা আকাশ, কিছুক্ষণেই তোলপাড় হবে ১৪ জেলা! প্রবল দুর্যোগের আশঙ্কায় কাঁপছে উত্তর থেকে দক্ষিণ

 

নিখোঁজ অভিযোগটি লখনউয়ে পৌঁছলে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। কর্মকর্তারা নিখোঁজ মেয়েটির সঙ্গে যোগাযোগ করতে সক্ষম হন এবং তাকে আশ্বস্ত করেন যে তিনি বাড়ি ফিরে এলে, তাকে প্রয়োজনীয় সমস্ত নিরাপত্তা  প্রদান করা হবে। 

স্থানীয় সংবাদ পত্রের প্রতিবেদন অনুসারে, ৭ আগস্ট, বৃহস্পতিবার নিখোঁজ হওয়া দুই মেয়ে পুলিশের থেকে আশ্বাস পাওয়ার পর, স্থানীয় থানায় পৌঁছয়। জানা গিয়েছে, বিয়ের পর, দুই তরুণীর মধ্যে একজন পরেছিল বরের পোশাক। অন্যজন পরেছিল কনের পোশাক, তার সিঁথিতে সিঁদুর। তাঁরা পুলিশকে জানিয়েছেন, গত এক দেড় বছর ধরে তাঁরা একে অপরকে ভালবাসে, সম্পর্কে রয়েছে। এর আগে তারা দীর্ঘ সময় নিজেদের সম্পর্ক, ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনাও করেছে। তার পরেই তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, একে অপরকে বিয়ে করবে। বাকি জীবন একে অন্যের সঙ্গে কাটাবে। তারা জানিয়েছে, এলাকায় ফিরে আসার আগেই তাঁরা একটি মন্দিরে বিয়ে করে। 

পুলিশ জানিয়েছে, থানায় উপস্থিত আত্মীয়স্বজনরা ঘটনায় রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মেয়েদের বাড়ি ফিরে যেতে রাজি করানোর চেষ্টা করেছিলেন। তবে তাতে কোনও লাভ হয়নি।  তাঁদের অনুরোধে সাড়া দেয়নি দুই তরুণী। সাফ জানিয়ে দেয়, দীর্ঘ দিনের চেনাজানা, কথোপকথনের পরেই বাড়ি থেকে আলাদা হয়ে, বিয়ে করে, স্বামী-স্ত্রী হিসেবে সংসার করার পরিকল্পনা করেছে তারা। ওই পরিকল্পনার বদল তারা কোনওভাবেই করতে রাজি নয়। বাবা-মায়ের সঙ্গে কেউই কারও ঘরে ফিরে যায়নি। জানা গিয়েছে, ওই দু’ জনের মধ্যে একজন সবে দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ সম্পন্ন করেছে, অপরজন দশম শেণির গণ্ডি পেরিয়েছে। তবে পরিবার থেকে পৃথক হয়ে, কোথায়, কীভাবে রয়েছে তারা, তা আর বিস্তারিতভাবে জানা যায়নি বলেই খবর ওই সংবাদ মাধ্যম সূত্রে।