আজকাল ওয়েবডেস্ক: রেললাইনে ভয়াবহ বিস্ফোরণে মৃত্যু হল রেলকর্মীর। সন্দেহের তীর মাওবাদীদের দিকে। দাবি করা হচ্ছে, সন্দেহভাজন মাওবাদী হামলায় আইইডি বিস্ফোরণের কারণে এক রেলকর্মীর মৃত্যু হয়েছে ওড়িশা-ঝাড়খণ্ড সীমান্তবর্তী সুন্দরগড় জেলার একটি রেললাইনে। রবিবার এই ঘটনাটি ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, নিহত রেলকর্মীর নাম ইটুয়া ওরাম। তিনি ভারতীয় রেলের ‘কি-ম্যান’ পদে কর্মরত ছিলেন। বিস্ফোরণের স্থানে মাওবাদী পোস্টার উদ্ধার হওয়ায় পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, এই ঘটনার পেছনে মাওবাদীদের হাত থাকতে পারে।
ঘটনাটি ঘটেছে, বিমলগড় শাখার অন্তর্গত করমপাড়া ও রেঞ্জদা সংযোগকারী রেললাইনে। বিস্ফোরণে রেললাইনের আংশিক ক্ষতি হলেও যেহেতু এটি একটি লুপ লাইন, তাই যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলে প্রভাব পড়েনি বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ-পূর্ব রেলের এক মুখপাত্র। জানা গিয়েছে, মাওবাদীরা ২৮ জুলাই থেকে ৩ আগস্ট পর্যন্ত ‘শহিদ সপ্তাহ’ পালনের ডাক দিয়েছিল। বিস্ফোরণস্থলটি সারান্ডা অরণ্য এলাকার মধ্যে পড়ে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় পুলিশ আধিকারিক। এক রেল আধিকারিক বলেন, ‘স্থানীয় পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দিলে আমরা মেরামতির কাজ শুরু করব’।
আরও পড়ুন: ডানকুনিতে গয়নার দোকানে দুঃসাহসিক ডাকাতি! তদন্তে চন্দননগর পুলিশ
এদিকে, ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাজি এই মর্মান্তিক ঘটনার প্রতি শোকপ্রকাশ করেছেন এবং মৃত রেলকর্মীর পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করেছেন। এই অর্থ মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল (CMRF) থেকে দেওয়া হবে বলে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর এক্স হ্যান্ডেলে জানিয়েছে। এই ঘটনার ফলে আবারও প্রশ্ন উঠছে মাওবাদী কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে। প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই ছত্তিশগড়ের বিজাপুর জেলায় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয় চার জন নকশাল মাওবাদী। তাদের মধ্যে দু’জন মহিলাও ছিলেন।
নিহত নকশালদের প্রত্যেককে মিলিয়ে ধরলে তাদের ওপর ছিল মোট ১৭ লক্ষ টাকার পুরস্কার। এরা সকলেই দক্ষিণ সাব-জোনাল ব্যুরোর সদস্য বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজন ছিলেন অ্যাক্টিভ কমিটি মেম্বার (ACM) স্তরের এবং একজন পার্টি সদস্য ও কমান্ডার। বিজাপুরের পুলিশ সুপার জিতেন্দ্র যাদব জানিয়েছেন, জেলার রিজার্ভ গার্ড (DRG) বাহিনী বিশ্বস্ত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই এলাকায় অভিযান চালায়। গত ২৬ জুলাই সন্ধ্যায় অপারেশন চলাকালীন, নিরাপত্তা বাহিনী মাওবাদীদের গুলির মুখে পড়ে এবং দুই পক্ষের মধ্যে গুলির লড়াই শুরু হয়। এরপর দীর্ঘক্ষণ গুলির লড়াই চলতে থাকে। এনকাউন্টারের পর এলাকাটি ঘিরে রেখে বড় সংখ্যক অস্ত্রশস্ত্র ও বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে।
উদ্ধার হওয়া অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে, একটি এসএলআর, একটি ইনসাস রাইফেল, একটি .৩০৩ রাইফেল, একটি ১২ বোর বন্দুক, একটি বিজিএল লঞ্চার, একটি সিঙ্গল-শট অস্ত্র এবং বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক দ্রব্য। নিহতদের মধ্যে ছিলেন প্লাটুন নম্বর ১০-এর অ্যাক্টিভ কমিটি মেম্বার হুঙ্গা, পুরস্কার ৫ লক্ষ। ছিলেন, লাখে প্লাটুন নম্বর ৩০-এর অ্যাক্টিভ কমিটি মেম্বার, পুরস্কার ৫ লক্ষ। ছিলেন, ভিমে, দক্ষিণ সাব-জোনাল ব্যুরোর আরও এক অ্যাক্টিভ কমিটি মেম্বার, পুরস্কার ৫ লক্ষ এবং নিহাল ওরফে রাহুল, পার্টি সদস্য ও ব্যুরোর কমিউনিকেশন টিমের প্রধানের দেহরক্ষী, পুরস্কার ২ লক্ষ টাকা।
