আজকাল ওয়েবডেস্ক: এক মহিলার কফিতে নিজের বীর্য মিশিয়ে দেওয়ার অভিযোগে স্থায়ীভাবে ডাক্তারি থেকে নির্বাসিত হলেন এক চিকিৎসক। ৫৭ বছর বয়সি চিকিৎসকের নাম নিকোলাস চ্যাপম্যান। বৃহস্পতিবার একটি ট্রাইব্যুনাল সাফ জানিয়ে দিয়েছে যে, তিনি বিকৃতমনস্ক এবং জনসাধারণের জন্য বিপজ্জনক। তাই তিনি আর কখনও চিকিৎসা করতে পারবেন না। ইংল্যান্ডের ঘটনা।
সমারসেটের টনটনের বাসিন্দা চ্যাপম্যানকে ২০২১ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর প্রথমবার অপরাধমূলক যৌনকার্যের একটি ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়। সেবারও অভিযোগ ছিল, তিনি নির্যাতিতাকে বীর্য পান করতে বাধ্য করেছিলেন। ২০২০ সালের ১২ সেপ্টেম্বর এবং ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বরের আবারও একই ধরনের অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। তবে সে যাত্রায় বেকসুর খালাস পান তিনি। এক্ষেত্রে অবশ্য তেমন হল না।
আরও পড়ুন: ৮৫ বছর বয়সে মাধ্যমিকে বসেও ফের অকৃতকার্য! ইনিই পৃথিবীর সবচেয়ে বয়স্ক স্কুলছাত্র
আরও পড়ুন: শুক্রাণু দান করে কত টাকা আয় হয়? ভারতে বীর্য দাতা হতে গেলে কোন কোন নিয়ম জানতে হবে?
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, নির্যাতিতার প্রথম সন্দেহ হয় যখন তিনি কফিতে এক ধরনের ‘নোনতা’ স্বাদ অনুভব করেন। এরপর কফি ফেলে দিতে যান তিনি, আর তখনই দেখেন কাপে লেগে রয়েছে ‘ঘন আঠালো’ একটি পদার্থ। এরপরই কফির নমুনা নিয়ে তিনি পুলিশের কাছে নিয়ে যান। পরীক্ষায় ওই আঠালো পদার্থ চ্যাপম্যানের বীর্য বলে প্রমাণিত হয়। অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর সমারসেটের একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে ওই চিকিৎসককে গ্রেফতার করা হয়।
অভিযোগ নথিভুক্ত হওয়ার পর মেডিক্যাল প্র্যাকটিশনার্স ট্রাইব্যুনাল সার্ভিস (এমপিটিএস) চ্যাপম্যানের আচরণের তদন্তের জন্য শুনানি শুরু করে। তদন্তে দেখা যায় ২০১৬ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে চ্যাপম্যান অপর এক মহিলার সঙ্গেও যৌন হেনস্থা, যৌন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আচরণ এবং তাঁর উচ্চপদের অপব্যবহার করেছিলেন।
২০২১ সালে তৃতীয় এক মহিলার কফিতে নিজের বীর্য মিশিয়ে দেওয়ার অভিযোগও ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। ট্রাইব্যুনাল উল্লেখ করেছে, “চ্যাপম্যানের তরফে তাঁর এই অপরাধের জন্য কোনও ক্ষমা, অনুশোচনার প্রমাণ মেলেনি।”
চিকিৎসা থেকে নির্বাসিত হওয়ার পাশাপাশি, চ্যাপম্যানকে নির্যাতিতার সঙ্গে যোগাযোগ করতে ১০ বছরের রেস্ট্রেনিং অর্ডার দেওয়া হয়েছে। এক বিবৃতিতে নির্যাতিতা বলেন, “উনি আমাকে অসহায় করে তুলেছিলেন। তাঁর ধূর্ত এবং কাপুরুষোচিত স্বভাব আমাকে হতবাক করেছে। আশা করি ভবিষ্যতে এই সব কিছু ভুলে জীবনে এগিয়ে যেতে পারব।”
তবে এতকিছুর পরেও চ্যাপম্যান আদালতে যুক্তি দিয়েছেন, তাঁর একটি ‘গোপন’ শারীরিক সমস্যা ছিল। এই রোগে মলত্যাগ করার সময় তাঁর বীর্যপাত হত। সেখান থেকেই অন্য কেউ ‘ঠাট্টা’ করে হয়ত কফিতে মিশিয়ে দিয়েছে। তবে আদালতে ধোপে টেকেনি সেই যুক্তি।
নির্যাতিতা জানান, ২০২০ সাল থেকে অন্তত ছ’বার এমনটা ঘটেছে। পাশাপশি চ্যাপম্যান তাঁকে মোবাইলে অন্তত দু’বার নিজের ‘উত্থিত লিঙ্গের’ ছবি পাঠিয়েছিলেন। শুনানির সময় চ্যাপম্যান স্বীকার করেন যে তিনি কর্মস্থলে হস্তমৈথুন করতেন, তবে তা ‘আনন্দের জন্য নয়’ বরং অসুস্থতার কারণে। তবে সেই যুক্তি মানতে চায়নি আদালত।
