আজকাল ওয়েবডেস্ক: ক্রিকেট কেরিয়ারের কোনও একটি অধ্যায় যদি মুছে ফেলতে চান, তাহলে কোনটা? ভারতের প্রাক্তন অফ স্পিনার হরভজন সিং কালক্ষেপ না করে বলে থাকেন, শ্রীসন্থকে চড় মারার ঘটনা যদি তিনি মুছে ফেলতে পারতেন!
আইপিএলের প্রথম সংস্করণে শ্রীসন্থকে চড় মেরে বসেছিলেন ভাজ্জি। একসঙ্গে তাঁরা খেলেছেন। কিন্তু খেলার শেষে মেজাজ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি পাঞ্জাতনয়। তার পরে একাধিকবার তিনি ক্ষমা চেয়েছেন। কখনও প্রকাশ্যে, কখনও আলাদা করে শ্রীসন্থের কাছে।
রবিচন্দ্রন অশ্বিনের ইউটিউবে এসে ভাজ্জি জানালেন, সেই ঘটনা ছাপ ফেলে গিয়েছে পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যেও। শ্রীসন্থ ভোলেননি। ভোলেননি শ্রীসন্থের মেয়েও। হরভজনের সঙ্গে কথাও বলতে চায়নি শ্রীসন্থের মেয়ে। এই ঘটনা নাড়া দিয়ে গিয়েছে ভারতের অন্যতম ম্যাচ উইনারকেও।
আরও পড়ুন: অজি ওপেনার তারকা হয়ে উঠেছেন ইতালির, ভারতে এসে চমক দেওয়ার অপেক্ষায় ৮৫ নম্বর জার্সিধারী এই ক্রিকেটার
অশ্বিনের ইউটিউবে অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে হরভজন তুলে ধরেন মুদ্রার অন্য পিঠ। ভাজ্জিকে জিজ্ঞাসা করা হয়, তোমার জীবনের কোন বিষয়টা মুছে ফেলতে চাইবে? পাঞ্জাবতনয় বলছেন, ''শ্রীসন্থের সঙ্গে ওই বিতর্কিত অধ্যায় আমি মুছে ফেলতে চাই। আমার কেরিয়ার থেকে ওই ঘটনাটা মুছে দিতে চাই। এই অধ্যায়টা আমার কেরিয়ার থেকে সরিয়ে দিতে চাই। সেই ঘটনার প্রভাব অন্য ভাবে পড়েছে। আমি অন্তত ২০০ বার শ্রীসন্থের কাছে ক্ষমা চেয়েছি।''
"Didn't cry because of pain but...": S Sreesanth recalls IPL 2008 'slapgate' incident involving Harbhajan Singh#Sreesanth #HarbhajanSingh https://t.co/uPtzoMlH9P pic.twitter.com/tRIThMOtZB
— CricketNDTV (@CricketNDTV)Tweet by @CricketNDTV
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ইডেনে হ্যাটট্রিককারী হরভজন বলেছেন, ''সেই ঘটনার বহুবছর পরে আমাকে আহত করেছে অন্য বিষয়। যখনই সুযোগ পেয়েছি, তখনই জোর গলায় বলেছি, এটা আমার ভুল ছিল। আমরা সবাই ভুল করি। একই ভুলের পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, সেই চেষ্টা করি। শ্রীসন্থ আমার টিমমেট ছিল। একসঙ্গে খেলেছি। ওই ম্যাচে আমরা অবশ্য একে অপরের প্রতিপক্ষ ছিলাম। তবে বিষয়টা ওই দিকে মোড় না নিলেও পারত। আমাদের সংযত হওয়ার দরকার ছিল। এটা আমার ভুল ছিল। কেরিয়ারে একটাই ভুল করেছি। শ্রীসন্থ আমাকে প্ররোচিত করেছিল। আমি যা করেছিলাম সেটা ঠিক করিনি। একাধিকবার আমি সরি বলেছি।''
শ্রীসন্থকে চড় মারার ঘটনা নিয়ে এখনও লেখালেখি হয় সংবাদমাধ্যমে। ভুলে যেতে চাইলেও বারংবার মনে পড়ে যায় সেই বিতর্কিত অধ্যায়। শ্রীসন্থ বা ভাজ্জি এই বিষয় নিয়ে মুখ বন্ধ করলেও শ্রীসন্থের মেয়ে কিন্তু ভাজ্জির সঙ্গে কথা বলতে অস্বীকার করে। আর এই ঘটনা ভিতরে ভিতরে হরভজনকে আরও আঘাত করেছে। ভিতরে ভিতরে তিনি রক্তাক্ত।
৪৫ বছর বয়সী হরভজন বলেন, ''সেই ঘটনার বহু বছর পরে শ্রীসন্থের মেয়ের সঙ্গে আমি কথা বলছিলাম। আদর করে কথা বলছিলাম। কিন্তু শ্রীসন্থের মেয়ে সরাসরি আমাকে জানিয়ে ও আমার সঙ্গে কথা বলতে চায় না। বলে, তুমি আমার বাবাকে মেরেছো। আমি তোমার সঙ্গে কথা বলতে চাই না।'' শ্রীসন্থের মেয়ের কাছ থেকে এহেন কথা শুনে হতভম্ব হয়ে যান ভাজ্জি। ভিতরে ভিতরে তিনি ভেঙে পড়েন। প্রায় কেঁদে ফেলার অবস্থা হয় ভাজ্জির। নিজের মনে মনে প্রশ্ন করেন হরভজন, ওই মেয়েটার উপরে কী ছাপ ফেলে গেলাম আমি? শ্রীসন্থের মেয়ে মনে করে আমি ওর বাবাকে মেরেছি। এটাই আমার পরিচয় হয়ে গেল। আমার খুব খারাপ লেগেছিল।''
শ্রীসন্থের মেয়ের কাছেও ক্ষমা চাইছেন হরভজন। ছোট্ট মেয়েকে বলতে থাকেন, আমি কিছু করিনি। কিন্তু বিষয়টাকে অন্য ভাবে দেখছে শ্রীসন্থের মেয়ে। ভাজ্জির আশা বড় হয়ে অন্য ভাবে ভাবতে শিখবে শ্রীসন্থের মেয়ে। বুঝতে পারবে তার কাকু সবসময়ে তার সঙ্গেই রয়েছে। কবে সেই দিন আসবে তার প্রতীক্ষায় হরভজন।
আরও পড়ুন: সুনীলদের হেডস্যর হতে আগ্রহী ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন কোচ, আবেদন করেছেন আরও নামী দামি মুখ
