আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রযুক্তিনির্ভর উদ‍্যোগ ও স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতির কারণে ২০২৫ সালের আয়করের রিটার্ন প্রসেসিংয়ে এসেছে বিপুল পরিবর্তন। ২০১৩ সালে যেখানে গড়ে রিফান্ড পেতে ৯৩ দিন সময় লাগত, সেখানে বর্তমানে সেই সময়সীমা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১৭ দিনে। পরিসংখ্যান বলছে, ইতিমধ্যেই ১.১৬ কোটিরও বেশি আয়কর রিটার্ন দাখিল করা হয়েছে ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের জন্য। যার মধ্যে ১.০৯ কোটি রিটার্ন ইতিমধ্যেই যাচাই করা হয়ে গিয়েছে অনলাইন মাধ্যমে। তবে এই পরিবর্তনের মধ্যেও অনেক করদাতা অভিযোগ করছেন রিফান্ড পেতে দেরি হওয়ার। অভিযোগ উঠছে, ই-ভেরিফিকেশনের তিন-চার সপ্তাহ পরেও অনেকের রিফান্ড আসেনি বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

কর বিশেষজ্ঞদের মতে, এর মূল কারণ হল চলতি বছরে আয়কর বিভাগের কড়া যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া। শুধুমাত্র চলতি বর্ষ নয়, পুরনো রিটার্নও খতিয়ে দেখা হচ্ছে যাতে ভুল বা জাল রিফান্ডের দাবিগুলিকে পুরোপুরি বন্ধ করা যায়। ফলে যেসব রিটার্নে সন্দেহজনক লেনদেন বা অতিরিক্ত ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশনের প্রয়োজন পড়ছে, সেগুলির ক্ষেত্রে রিফান্ডে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশ কিছুটা দেরি হচ্ছে। তবে আয়কর বিভাগের তরফে জানানো হয়েছে, যাঁদের রিটার্ন ইতিমধ্যেই দাখিল এবং যাচাই হয়েছে, তাঁরা সহজেই তাঁদের রিফান্ড ট্র্যাক করতে পারবেন।

আরও পড়ুন: উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেস থেকে নামতেই ক্যাচ কট কট, ছুটির দিনে বিধাননগরে তোলপাড়, কী এমন ঘটল?

এর জন্য আয়কর পোর্টালে (https://www.incometax.gov.in) লগইন করে ‘View Filed Returns’ বা ‘Refund/Demand Status’ বিভাগে যেতে হবে। আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টটি অবশ্যই প্রি-ভ্যালিডেট করা আছে কিনা, সেটিও নিশ্চিত করে নিতে হবে। যদি অকারণে রিটার্নে দেরি হতে থাকে, সেক্ষেত্রে করদাতারা ‘E-Nivaran’ প্ল্যাটফর্মে অনলাইনে অভিযোগ জানাতে পারেন। প্রয়োজনে বিষয়টি CPC (Centralised Processing Centre) অথবা সংশ্লিষ্ট অ্যাসেসিং অফিসারের কাছেও পৌঁছে দেওয়ার রাস্তা রয়েছে। যাঁদের রিফান্ড আসতে দীর্ঘ সময় লেগে যাচ্ছে, তাঁদের জন্য আইনি সুরক্ষা রয়েছে। 

আয়কর আইনের, ধারা ২৪৪A অনুসারে, নির্দিষ্ট সময়ের পরে রিফান্ড পেলে তার ওপর নির্দিষ্ট পরিমাণ সুদ পাওয়ার অধিকার রয়েছে করদাতার। উল্লেখ্য, গত এক দশকে আয়কর রিফান্ডের পরিমাণে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি হয়েছে। ২০১৩-১৪ সালে যেখানে মোট রিফান্ড ছিল ৮৩,০০০ কোটি, সেখানে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে তা বেড়ে হয়েছে ৪.৭৬ লক্ষ কোটি টাকা। উল্লেখ্য, চলতি বছর ৩ জুলাই পর্যন্ত ছিল ২০২৪-২৫ অর্থবছরের আয়কর জমার শেষ তারিখ। যা বাড়িয়ে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে।

১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করদাতারা আইটিআর ফর্ম পূরণ করতে পারবেন। মঙ্গলবার আয়কর বিভাগের (সিবিডিটি) তরফে এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য শেয়ার করা হয়েছে। সিবিডিটি অনুসারে, আইটিআর ফর্মে প্রয়োজনীয় সংশোধন, সিস্টেম ডেভেলপমেন্টের প্রয়োজনীয়তা এবং ক্রেডিট প্রতিফলনের প্রয়োজনের কারণে এই সময় বৃদ্ধি। সিবিডিটি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে যে, আইটিআর ফর্মে বদলগুলি অন্তর্ভুক্ত করার জন্য এবং প্রয়োজনীয় উপযোগিতাগুলি বাস্তবায়নের জন্য আয়কর ব্যবস্থা প্রস্তুত করার জন্য সময়সীমা বাড়ানো প্রয়োজন ছিল।