আজকাল ওয়েবডেস্ক: গোপন সূত্রের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে বিধাননগর রোড স্টেশন থেকে ৫১.২১ কেজি গাঁজা উদ্ধার করল শিয়ালদহ ডিভিশনের আরপিএফ (রেল প্রোটেকশন ফোর্স)। জানা গিয়েছে, ঘটনার গ্রেপ্তার করা হয়েছে চার জন মাদক পাচারকারীকে। যার মধ্যে একজন মহিলাও রয়েছেন বলে জানিয়েছে রেল। জানা গিয়েছে, উদ্ধার হওয়া মাদকের বাজারমূল্য আনুমানিক ১১ লক্ষ টাকার কাছাকাছি। রেল সূত্রে খবর, ধৃতরা উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেস সফর করছিলেন। আগে থেকেই নজর রাখা আরপিএফের দল দক্ষিণেশ্বর এবং বিধাননগর রোড স্টেশনে প্রস্তুত ছিল। সেখানেই এই চারজনকে চিহ্নিত করে আটক করা হয়।
তদন্তে ধৃতরা স্বীকার করে, তারা বামনহাট ও ফালাকাটা স্টেশন থেকে গাঁজা সংগ্রহ করে কলকাতায় এক অজ্ঞাত ক্রেতার কাছে পৌঁছে দেওয়ার কাজ করছিলেন। গোটা কাজের জন্য তাদের প্রত্যেককে ৩ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পারিশ্রমিক দেওয়ার কথা ছিল। ধৃতদের কাছ থেকে চারটি মোবাইল ফোনও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বাজেয়াপ্ত সামগ্রী পরবর্তী আইনি পদক্ষেপের জন্য তুলে দেওয়া হয়েছে শিয়ালদা জিআরপির হাতে। উল্লেখ্য, বর্তমানে দমদম এবং বিধাননগর রোড স্টেশনে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। এই ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে সে কারণে তো বটেই পাশাপাশি যাত্রীদের সুরক্ষার দিক ভেবেও নেওয়া হয়েছে কড়া পদক্ষেপ।
আরও পড়ুন: রাতের অন্ধকারে আচমকা কলকাতা বিমানবন্দর ঘিরে ফেলল এনএসজি কমান্ডোরা! সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কা?
প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করেন এই দুটি স্টেশনের মাধ্যমে। বিশেষ করে সকাল এবং সন্ধ্যার ব্যস্ত সময়ের ভিড় সামলানো কার্যত এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে রেল কর্তৃপক্ষের কাছে। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বাভাবিক দিনে বিধাননগর স্টেশনে দৈনিক প্রায় ১.৭ লক্ষ যাত্রী ওঠানামা করেন। যার মধ্যে সকাল ও সন্ধ্যার পিক আওয়ারে অর্থাৎ শুধুমাত্র অফিস টাইমে ১ লক্ষের বেশি যাত্রীর ভিড় হয়। একইভাবে দমদম স্টেশনের দৈনিক যাত্রীসংখ্যা গড়ে ১.৫ লক্ষ ছাড়িয়েছে বর্তমানে।
এই বিপুল ভিড়ের কারণে দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের পথ খুঁজছে রেল। পূর্ব রেলের তরফে জানানো হয়েছে, বিধাননগর স্টেশনে যাত্রীদের জন্য আরও বেশি জায়গা করে দিতে এবং অতিরিক্ত ভিড়ের ফলে পদপিষ্ট হওয়ার মতো ঘটনা এড়াতে সমস্ত ভেন্ডার ও স্টল— এমনকি অনুমোদিত দোকানগুলিও সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। রেলের দাবি, এতে স্টেশনে যাত্রীদের চলাচলের জন্য অনেকটা খোলা জায়গা তৈরি হবে। দমদম স্টেশনের দ্বিতীয় প্রবেশপথে (আরপিএফ ব্যারাকের পাশে) একটি নতুন টিকিট বুকিং অফিস চালু করার পরিকল্পনা চলছে।
আরও পড়ুন: খুন না গণ আত্মহত্যা? বন্ধ ঘর থেকে গোটা পরিবারের নিথর দেহ উদ্ধার, বুরারিকাণ্ডের ছায়া গুজরাটে
এর ফলে যাত্রীদের টিকিট কাটার সুবিধা বাড়বে এবং স্টেশনের মূল প্রবেশপথের ভিড় কিছুটা কমবে বলেই আশাবাদী রেল কর্তৃপক্ষ। এই সমস্ত নিয়ম যাতে সঠিকভাবে মানা হয় সে কারণে বারেবারে স্টেশন চত্বরে টহল দিতে দেখা গিয়েছে আরপিএফকেও। বিধাননগর ও দমদম স্টেশন থেকে প্রতিদিন যথাক্রমে ২১৬ ও ২২২ জোড়া শহরতলির ইএমইউ (EMU) লোকাল ট্রেন চলাচল করে। এই ব্যস্ততা সামলাতে আরপিএফ এবং রেলকর্মীদের কৌশলগতভাবে মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
