আজকাল ওয়েবডেস্ক: হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল হাসপাতালের করিডর। চাপা পড়ে মৃত্যু হল তিন রোগীর। গুরুতর জখম বহু। শনিবার মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে জামশেদপুরের মহাত্মা গান্ধী মেমোরিয়াল হাসপাতালে। ঘটনার পরই উদ্ধারকাজ শুরু করে সিভিল ডিফেন্স এবং টাটার বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটল খতিয়ে দেখছে পুলিশ। 

এলাকার বৃহত্তম মহাত্মা গান্ধী মেমোরিয়াল হাসপাতালটি প্রায় ৫৫ বছরের পুরনো এবং তার অবস্থা জরাজীর্ণ।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, তিন তলার মেডিসিন ডিপার্টমেন্টের করিডরে কয়েকজন রোগীকে রাখা হয়েছিল। হঠাৎই গোটা করিডরটি ভেঙে পড়ে। শুধু তিন তলা নয়, একই সময় দোতলা এবং একতলার করিডরের একাংশও ভেঙে পড়ে। জামশেদপুরের ডেপুটি কমিশনার অনন্য মিত্তল বলেছেন, "ধ্বংসস্তূপের নীচে ১৫ জন রোগী চাপা পড়ে যান। ১৩ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। দু'জনের সেখানেই মৃ্ত্যু হয়। পরে চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয়েছে আরও এক রোগীর।"

এর রোগীর কথায়, "আমরা সেখানে বসে ছিলাম এবং হঠাৎ একটা আওযাজ শুনতে পেলাম। তারপর একটি বিশাল জায়গা ভেঙে পড়তে দেখলাম। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই মেঝে ভেঙে পড়তে শুরু করে এবং ছড়িয়ে পড়ে। পুরো করিডোরটি ভেঙে পড়ে। সেখানে বসে থাকা আমাদের চার বন্ধু তখনই চলে গেলেন। আমার বিছানার কাছে এসে ফাটলটি থেমে গেল।"

স্থানীয়রা এবং বিরোধী নেতারা প্রশাসনের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ করেছেন। ভবনের ক্রমশ খারাপ অবস্থা নিয়ে সব ধরের সতর্কতা উপেক্ষা করা হয়েছে বলে তাদের অভিযোগ। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাস বলেছেন, "সরকারি অবহেলার কারণে নিরীহ মানুষগুলির প্রাণহানি ঘটেছে।" ঝাড়খণ্ড বিজেপি সভাপতি বাবুলাল মারান্ডি উচ্চ-পর্যায়ের তদন্ত এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেছেন।

ঝাড়খণ্ড সরকার মৃতদের পরিবারকে ৫ লাখ টাকা এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন ঝাড়খণ্ডের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইরফান আনসারি। দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনারের নেতৃত্বে গঠন করা হয়েছে একটি বিশেষ তদন্ত কমিটি। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিটিকে। 

আহত ও মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লিখেছেন, 'জামশেদপুরের এমজিএম হাসপাতালের জরাজীর্ণ ভবনের একাংশ ভেঙে পড়ে রোগী মৃত্যুর ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। নিহতদের আত্মাকে শান্তি দিক মারাংবুরু এবং তাঁদের পরিবারবর্গকে এই শোক সহ্য করার শক্তি দিক, এই কামনা করি।'