আজকাল ওয়েবডেস্ক: কথায় বলে ‘যস্মিন দেশে যদাচার’ অর্থাৎ যে দেশে যেমন আদবকায়দা। বিষয়টি বিয়ে কিংবা প্রেমের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে আছে এমন কিছু প্রথা যেগুলির কথা জানতে পারলে চোখ কপালে উঠতে বাধ্য। 

নাইজারের গেরেওল উৎসব: এটি আফ্রিকার দেশ নাইজারে ওয়াডাবে সম্প্রদায়ের ফুলানি নামক এক গোষ্ঠীর বার্ষিক ঐতিহ্যবাহী প্রণয় উৎসব। এই উৎসব মূলত পুরুষদের সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা। এখানে অবিবাহিত যুবকরা বিভিন্ন ভাবে বিবাহযোগ্য়া তরুণীদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য নাচ ও গান পরিবেশন করে। সাধারণত বর্ষার শেষে, সেপ্টেম্বরের দিকে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। ওয়াডাবে জনগোষ্ঠীর যাযাবর পশুপালকরা সাহারার দক্ষিণাঞ্চলে একত্রিত হন। নাচের মুদ্রা ও গানের মাধ্যমে তাঁরা নিজেদের সৌন্দর্য, ধৈর্য এবং আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব তুলে ধরেন। গেরেওল উৎসব নাইজার ছাড়াও চাদ এবং নাইজেরিয়ার কিছু অংশেও ওয়াডাবে সম্প্রদায় দ্বারা পালিত হয়।

অস্ট্রেলিয়ার ব্যাচেলর অ্যান্ড স্পিনস্টার বল: অস্ট্রেলিয়ার গ্রামীণ অঞ্চলে অনুষ্ঠিত হওয়া ব্যাচেলর অ্যান্ড স্পিনস্টার বল এক ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান। এখানে মূলত অবিবাহিত তরুণ-তরুণীরা (পুরুষদের ‘ব্যাচেলর’ এবং মহিলাদের ‘স্পিনস্টার’ বলা হয়) একত্রিত হন। ঐতিহাসিকভাবে এই বলগুলি আয়োজনের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল অবিবাহিত তরুণ-তরুণীদের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন এবং সম্ভাব্য জীবনসঙ্গী খুঁজে পেতে সাহায্য করা। ঐতিহাসিক ভাবে, বিপরীত লিঙ্গের মধ্যে মেলামেশা এবং ঘনিষ্ঠতা তৈরির সুযোগ এখানে তৈরি হত, যা যৌন সম্পর্ক বা বিবাহের দিকে যেত। এখনও এই বলগুলোতে অনেক সময় বাঁধনহারা আনন্দ এবং কিছুটা সামাজিক নিয়ম ভাঙার প্রবণতা দেখা যায়। তাছাড়া এই অনুষ্ঠানে প্রচুর পরিমাণে অ্যালকোহল পান করা হয়। অ্যালকোহলের প্রভাবে অনেক সময় আবেগপ্রবণ আচরণ দেখা যায়, যার মধ্যে যৌন আগ্রহ বা ক্ষণস্থায়ী সম্পর্কের সূত্রপাত অস্বাভাবিক নয়।


কম্বোডিয়ার ‘কোর্টিং হাট’: সবশেষে বলতে হয় কম্বোডিয়ার ‘কোর্টিং হাট’- এর কথা। একে আজকাল ‘লাভ হাট’ বা ‘ডেটিং হাট’-ও বলা হচ্ছে। যার আক্ষরিক বাংলা তর্জমা, ভালবাসার কুটির। এটি কম্বোডিয়ার কিছু গ্রামীণ জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে খেমার ল্যু সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রচলিত। এই প্রথা অনুযায়ী, তরুণীরা তাঁদের বাবা-মায়ের খামার বা বাড়ির কাছে একটি ছোট, অস্থায়ী কুঁড়েঘর তৈরি করে। এই কুঁড়েঘরটি বিশেষভাবে তৈরি করা হয় তরুণ ছেলেদের সঙ্গে একান্তে সময় কাটানোর জন্য। বিবাহপূর্ব সম্পর্কের একটি স্বাভাবিক অংশ হিসেবে দেখা হয় এই কুটির। তবে বর্তমানে আধুনিকতার ছোঁয়ায় অনেকটাই কমে এসেছে এই কুটির তৈরির চল।