আজকাল ওয়েবডেস্ক: পহেলগাঁও হামলা নিয়ে এবার 'মন কি বাত' অনুষ্ঠানে মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রী। এই সন্ত্রাসবাদী হামলার পর গোটা দেশকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। একইসঙ্গে তাঁর প্রতিশ্রুতি "এই হামলার নেপথ্যে যারা রয়েছে তারা কঠোরতম শাস্তি পাবে।"

'মন কি বাত' অনুষ্ঠানে গোটা দেশকে সম্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, "পহেলগাঁও হামলা সন্ত্রাসের প্রভুদের হতাশা এবং কাপুরুষতার পরিচয় স্পষ্ট করে দিয়েছে। কাশ্মীরে শান্তি ফিরে আসছিল। স্কুল ও কলেজে প্রাণচাঞ্চল্য ছিল, উন্নয়নমূলক কাজের অভূতপূর্ব গতি ছিল, গণতন্ত্র শক্তিশালী হচ্ছিল, পর্যটকদের সংখ্যা রেকর্ডহারে বৃদ্ধি পাচ্ছিল, আয় বেড়েছিল এবং তরুণদের জন্য নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হচ্ছিল। জম্মু-কাশ্মীর তথা দেশের শত্রুরা, এটা পছন্দ করেনি।" 

প্রধানমন্ত্রীর দাবি, "গত ২২শে এপ্রিলের হামলা প্রতিটি ভারতীয়কে যন্ত্রণা দিয়েছে, তা সে যে রাজ্যেরই লোক হোক বা যে ভাষাতেই কথা বলুক না কেন। আমি মনে করি সন্ত্রাসবাদী হামলার ছবি দেখে প্রতিটি ভারতীয়ের রক্ত ​​ফুটছে।" 

সমগ্র বিশ্ব ভারতের সঙ্গে রয়েছে বলে জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। বলেছেন, "ন্যায়বিচার মিলবেই, আমি শোকাহত পরিবারগুলিকে আশ্বস্ত করছি। এই হামলার নেপথ্যে যারা রয়েছে তারা কঠোরতম শাস্তি পাবে। সন্ত্রাসবাদীরা এবং তাদের প্রভুরা এই ষড়যন্ত্র করেছিল, কারণ তারা কাশ্মীরকে ধ্বংস করতে চায়।" তিনি বলেন।

সঙ্কটের মুহূর্তে গোটা দেশকে ঐক্যবদ্ধ থাকার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, "সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধে ১৪০ কোটি ভারতীয়র ঐক্যই সবচেয়ে বড় শক্তি। এই ঐক্যই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমাদের সিদ্ধান্তমূলক যুদ্ধের ভিত্তি। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য আমাদের আদর্শকে শক্তিশালী করতে হবে। একটি জাতি হিসেবে আমাদের ইচ্ছাশক্তি প্রদর্শন করতে হবে। সমগ্র বিশ্ব দেখছে দেশ কীভাবে এক কণ্ঠে কথা বলছে।"  

২২শে এপ্রিল পহেলগামের বৈসরানে পঁচিশজন পর্যটক এবং একজন কাশ্মীরি ব্যক্তিকে ঠান্ডা মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। এটি ছিল গত কয়েক বছরে কাশ্মীর উপত্যকার সবচেয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলাগুলির মধ্যে একটি। প্রধানমন্ত্রী মোদির প্রতিশ্রুতি, "ভারত প্রতিটি সন্ত্রাসবাদী এবং তাদের সমর্থকদের চিহ্নিত করবে, খুঁজে বার করবে এবং শাস্তি দেবে। এই কাজে আমাদের মনোবল কখনও ভেঙবে না।"

 

?ref_src=twsrc%5Etfw">April 27, 2025

গত মঙ্গলবার পহেনগাঁওতে জঙ্গি হামলার দু'দিন পর বিহারে এক সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, "পুরো দেশ শোকাহত পরিবারগুলির সঙ্গে আছে। সরকার আহতদের সুস্থ করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। কেউ ছেলে হারিয়েছেন, কেউ ভাই হারিয়েছেন, কেউ জীবনসঙ্গী হারিয়েছেন, কেউ বাংলায় কথা বলতেন, কেউ কন্নড় ভাষায় কথা বলতেন, কেউ মারাঠি ছিলেন, কেউ ওড়িয়া ছিলেন, কেউ গুজরাটি ছিলেন এবং কেউ বিহারের সন্তান। কার্গিল থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত শোক ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। এই আক্রমণ কেবল নিরীহ পর্যটকদের উপরই হয়নি, বরং দেশের শত্রুরা ভারতের আত্মাকে আক্রমণ করার সাহস দেখিয়েছে।" 

এরপরই পাকিস্তানকে নিশানা করে কড়া বার্তা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যে, "যারা এই আক্রমণ চালিয়েছে, যারা এর পরিকল্পনা করেছিল তারা এমন শাস্তি পাবে যা তারা কল্পনাও করতে পারে না। জঙ্গিদের আশ্রয়স্থলের যা কিছু অবশিষ্ট আছে তা ধ্বংস করার সময় এসেছে। ১৪০ কোটি দেশবাসীর ইচ্ছে, সন্ত্রাসের প্রভুদের কোমর ভেঙে দেওয়া হোক।" 

পহেলগাঁও হামলার পর ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক কূটনৈতিক পদক্ষেপ করেছে। সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত রাখা হয়েছে এবং ভারত, পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা পরিষেবা স্থগিত করেছে।