আজকাল ওয়েবডেস্ক: স্ত্রী এবং তাঁর আত্মীয়দের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তুলে নিজেকে শেষ করে দিলেন এক ব্যক্তি। উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদের মোদিনগর এলাকার বাসিন্দা ৩৪ বছর বয়সী মোহিত ত্যাগী নিজেকে শেষ করার চেষ্টায় বিষ পান করেন। দু'দিন পর স্থানীয় হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মোহিত সুইসাইড নোটে তাঁর স্ত্রী এবং তাঁর আত্মীয়দের বিরুদ্ধে লিখে গিয়েছেন।

২০২০ সালে সম্ভল জেলার বাসিন্দা প্রিয়াঙ্কাকে বিয়ে করেন মোহিত। এটি ছিল মোহিতের দ্বিতীয় বিয়ে। ২০২১ সালের অক্টোবরে এই দম্পতির একটি পুত্রসন্তান জন্ম নেয়। 

মোহিতের পরিবারের দাবি, বিয়ের কয়েক মাসের মধ্যেই সম্পর্কের অবনতি শুরু হয়। তাদের অভিযোগ, নিয়মিত মৌখিক নির্যাতন, মিথ্যা আইনি পদক্ষেপের হুমকি এবং মানসিক ভাবে হেনস্থা করা হত মোহিতকে। 

১৫ এপ্রিল বিষ খাওয়ার কিছুক্ষণ আগে হোয়াটসঅ্যাপে বেশ কয়েকজন বন্ধু এবং আত্মীয়দের সঙ্গে একটি চিঠি শেয়ার করেন মোহিত। সেখানে তাঁর এই চরম পদক্ষেপের জন্য দায়ীদের নাম উল্লেখ করে গিয়েছেন। 

চিঠিতে মোহিত তাঁর স্ত্রী এবং তাঁর আত্মীয়দের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন যে তাঁরা যৌতুকের মামলা-সহ মিথ্যা আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়ে তাঁর থেকে টাকা আদায়ের পরিকল্পনা নিয়ে তাঁকে বিয়ে করেছিলেন।

২০২৪ সালে মায়ের মৃত্যুর পর মোহিত অভিযোগ করেছিলেন, প্রিয়াঙ্কা, তাঁর ভাই এবং অচেনা এক ব্যক্তি মিলে ১২-১৫ লক্ষের সোনার গয়না বাড়ি থেকে চুরি করেছেন। এছাড়াও টাকাপয়সা সরানোর অভিযোগও আনা হয়েছিল। এর পরেই ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ছাড়েন প্রিয়াঙ্কা। সেই সময় মোহিত বাঁধা দেওয়ায় প্রিয়াঙ্কা হুমকি দিয়েছিলেন যেতে না দিলে পরিবারের নামে বদনাম রটিয়ে দেওয়া হবে। 

পরিবারের অভিযোগ, গত ১৫ এপ্রিল চৌওদা পুলিশের তরফ থেকে ফোন করে মোহিতকে জানানো হয় যে তাঁর বিরুদ্ধে স্ত্রী অভিযোগ দায়ের করেছেন। এরপরেই চরম সিদ্ধান্ত নেন মোহিত।

সুইসাইড নোটে মোহিত তাঁর ছেলের কল্যাণের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। অনুরোধ করে গিয়েছেন যে ছেলেকে যেন তাঁর পরিবারের তত্ত্বাবধানে দেওয়া হয়। তিনি লিখেছেন, "মৃত্যুতে আমার  কোনও দুঃখ নেই। আমি কেবল দুঃখিত যে আমার মৃত্যুর পরে, এই সমস্ত ষড়যন্ত্রকারীরা আমার সন্তান চিকুকে হত্যা করতে পারে।" তিনি আরও লিখেছেন, "আমি যদি আত্মহত্যা না করি, তাহলে কেউ আমার সত্য বিশ্বাস করবে না।"

মোহিতের ভাই রাহুল ত্যাগীর অভিযোগ, স্ত্রী এবং তাঁর পরিবারের দুর্ব্যবহারের কারণে মোহিত মানসিক চাপের মধ্যে ছিলেন। মোহিতের স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা ত্যাগী, তাঁর ভাই পুনিত ত্যাগী, শ্যালিকা নীতু ত্যাগী এবং মামা অনিল এবং বিশেষ ত্যাগীর নামে মোদিনগর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে মোহিতের পরিবার। পুলিশ জানিয়েছে, মোহিতের মৃত্যুর ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত শুরু করা হয়েছে।