আজকাল ওয়েবডেস্ক: বুধবার ভারতের সুপ্রিম কোর্টে ওয়াকফ (সংশোধনী) আইন, ২০২৫-এর সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে শুনানির সময় ওয়াকফ বোর্ডের ধর্মীয় গঠন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তোলে শীর্ষ আদালত। সংশোধিত আইনে অমুসলিম সদস্যদের ওয়াকফ বোর্ডে অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি বিতর্কের কেন্দ্রে উঠে এসেছে, যেখানে আবেদনকারী এক পক্ষ দাবি করেছে—এই পদক্ষেপ মুসলমানদের নিজেদের ধর্মীয় বিষয় পরিচালনার স্বাধীনতাকে ক্ষুন্ন করে।

প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে প্রশ্ন করেন, "আপনি কি বলছেন, এখন থেকে মুসলমানদেরও হিন্দু ট্রাস্ট বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত করা হবে? তাহলে সেটা স্পষ্ট করে বলুন।” তিনি আরও বলেন, “যদি ওয়াকফ বোর্ডে অমুসলিম সদস্য রাখা যায়, তবে হিন্দু বোর্ডেও মুসলিম সদস্য রাখা হোক।”

জবাবে সলিসিটর জেনারেল পাল্টা বলেন, “এই যুক্তিতে তো এই বেঞ্চও এই মামলা শুনতে পারে না।”

এই মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, “কি বললেন আপনি! আমরা যখন এখানে বসি, তখন আমরা আমাদের ধর্মীয় পরিচয় হারিয়ে ফেলি। আমাদের কাছে দুই পক্ষই সমান। বিচারপতিদের সঙ্গে এধরনের তুলনা করা যায় না।”

বিচারপতি কে.ভি. বিশ্বনাথনও বলেন, “মসজিদে প্রবেশ ও বেরিয়ে যাওয়ার মত ব্যবহারিক দিক আছে, যেগুলোর সঙ্গে পরিচিতি থাকা জরুরি হতে পারে।” এ বিষয়ে সলিসিটর জেনারেল জানান, এসব তদারকি চ্যারিটি কমিশনারও করতে পারেন।

এই মামলার শুনানি করেন প্রধান বিচারপতি খন্না, বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি বিশ্বনাথনের তিন সদস্যের বেঞ্চ। শুনানিতে আদালত পুরনো, শতাব্দী প্রাচীন মসজিদগুলোর ওয়াকফ মালিকানা যাচাইয়ে ব্যবহারিক সমস্যার দিকটিও তুলে ধরেন। আদালত বলেন, যেসব সম্পত্তিকে আদালত ইতিমধ্যেই ওয়াকফ বলে ঘোষণা দিয়েছে, সেগুলো মামলা চলাকালীন ডিনোটিফাই করা যাবে না। এছাড়া, জেলা কালেক্টরের তদন্তাধীন থাকা অবস্থায় কোনো সম্পত্তিকে ওয়াকফ হিসেবে ঘোষণা না করার বিধানেও স্থগিতাদেশ জারি করেন আদালত।

শীর্ষ আদালত স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে ওয়াকফ বোর্ডের সব সদস্য মুসলিম হতে হবে, শুধুমাত্র দায়িত্বপ্রাপ্ত (ex-officio) সদস্যরা ব্যতিক্রম হতে পারেন। আগামীকাল দুপুর ২টায় এই মামলার পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।