সংবাদ সংস্থা মুম্বই: একটা হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ। তাতে লেখা, বলিউড তারকা সলমন খানকে খুন করা হবে। তাঁর গাড়িতে রাখা হবে বিস্ফোরক। বার্তা পৌঁছয় মুম্বই ট্র্যাফিক পুলিশের হেল্পলাইন নম্বরে। সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয় তৎপরতা—সলমনের বাড়ি গ্যালাক্সি অ্যাপার্টমেন্টের বাইরে বাড়ানো হয় নিরাপত্তা। শুরু হয় জোরদার তদন্ত। আর তদন্তে নেমেই হকচকিয়ে যায় পুলিশ! হুমকি পাঠানো ওই বার্তা কোনও গ্যাংস্টার নয়, পাঠিয়েছিল গুজরাটের এক ২৬ বছরের যুবক—মায়াঙ্ক পাণ্ড্য, যিনি মানসিকভাবে অসুস্থ এবং বিগত এক দশক ধরে চিকিৎসাধীন!
কেন এ কাজ করল ওই যুবক? কারণটা রীতিমতো চমকে দেওয়ার মতো! পুলিশি জেরায় সে জানায়, এই হুমকি সে দিয়েছে শুধুমাত্র ইনস্টাগ্রামে ফলোয়ার বাড়ানোর জন্য! লরেন্স বিষ্ণোইয়ের নাম করে যেভাবে সলমন খানকে একের পর এক হুমকি দেওয়া হয়, সেই পদ্ধতিই নকল করেছিল সে। উদ্দেশ্য একটাই—‘ভাইরাল’ হওয়া!
একটা গুগল সার্চ করেই মায়াঙ্ক জোগাড় করে মুম্বই ট্র্যাফিক পুলিশের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর। তারপর সোজা সেখানে পাঠিয়ে দেয় সেই বিস্ফোরণ-হুমকি-বার্তা। মুম্বই পুলিশের ডেপুটি কমিশনার দত্তাত্রেয় কাম্বলে জানিয়েছেন, সেই নম্বর ট্র্যাক করে পৌঁছনো যায় অভিযুক্ত মায়াঙ্কের কাছে। তাকে থানায় হাজিরাও করানো হয়। এরপরই জানা যায়, যুবকটি গুজরাটের ভডোদরার বাসিন্দা, পরিবার চালায় ছোট্ট একটা জুস স্টল।
কিন্তু সে যে মানসিকভাবে অসুস্থ, তা শুধু বলা নয়, পুলিশ তার মেডিক্যাল রেকর্ডও ঘেঁটে দেখে। জানা যায়, ২০১৪ সালে তার ঠাকুরদার বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু সে নিজে চোখে দেখেছিল। সেই ট্রমার পর থেকেই নিয়মিত চিকিৎসা চলছে তার। পাণ্ড্যর পরিবারও জানায়, ছেলে কী করেছে তারা জানতই না—পুলিশ বাড়িতে আসার পর প্রথম জানাজানি হয় ঘটনাটা।
মুম্বই পুলিশের সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে – “সলমন খানের নামে হত্যার হুমকি এবং গাড়িতে বিস্ফোরণের বার্তা পাঠানো হয়েছিল ওরলি ট্র্যাফিক কন্ট্রোল রুমের হোয়াটসঅ্যাপে। অজ্ঞাত পরিচয়ের বিরুদ্ধে পুলিশি নালিশ দায়ের করে তদন্ত শুরু হয়। পরে বার্তা ট্র্যাক করে ধরা হয় অভিযুক্তকে, যিনি মানসিক ভারসাম্যহীন বলে প্রমাণিত হয়েছেন।”
