আজকাল ওয়েবডেস্ক: ধর্ষণ মামলায় সাম্প্রতিক 'আপত্তিকর' মন্তব্যের জন্য সুপ্রিম কোর্ট মঙ্গলবার এলাহাবাদ হাইকোর্টের তীব্র সমালোচনা করেছে। ওই ধরনের পর্যবেক্ষণ কখনওই উচিত হয়নি বলে সাফ জানিয়েছে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এক ধর্ষণ মামলায় এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি সতীর্থ সঞ্জয় কুমার সিং বলেছিলেন, "তরুণী নিজেই বিপদ ডেকে আনেন। তিনি নিজেই এর জন্য দায়ী।"

১৭ মার্চ এলাহাবাদ হাইকোর্টের আরেকটি আদেশের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলার শুনানিকালে সুপ্রিম কোর্টের মন্তব্য আসে, যেখানে বলা হয়েছিল যে "শুধুমাত্র একজন নাবালিকার স্তন ধরে ফেলা" ধর্ষণের সমান নয়। শীর্ষ আদালত ইতিমধ্যেই বিতর্কিত আদেশ স্থগিত করেছে।

বিচারপতি বিআর গাভাই এবং এজি মসিহের বেঞ্চের বক্তব্য, "এখন অন্য একজন বিচারকের আরেকটি আদেশ আছে। হ্যাঁ, জামিন দেওয়া যেতে পারে... কিন্তু, এই আলোচনার অর্থ কী যে তিনি নিজেই ঝামেলা ডেকে আনলেন? এই ধরনের কথা বলার সময়, বিশেষ করে এদিক ওদিক (বিচারকের) কথা বলার সময় সতর্ক থাকতে হবে। এখানে এবং সেখানে একটা জিনিস"

শীর্ষ আদালত এলাহাবাদ হাইকোর্টের ১৭ মার্চের আদেশের বিরুদ্ধে আদালত কর্তৃক দায়ের করা স্বতঃপ্রণোদিত মামলার সঙ্গে বিষয়টি যুক্ত করেছে। বিচারপতি গাভাই বলেন, "এটি কী বার্তা পাঠায়? আমরা যখন এই মামলাটি মোকাবিলা করছি, তখন আমরা অন্যান্য মামলাগুলিও দেখব।" 

চার সপ্তাহ পর শীর্ষ আদালত এই মামলার শুনানি করবে।

এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিতর্কিত আদেশ

প্রথম মামলা: 
শিশুর বুকে হাত দেওয়া, তার পাজামার দড়ির গিঁট খুলে ফেলা কিংবা তাকে কালভার্টের নীচে টেনে নিয়ে যাওয়াকে ধর্ষণের সঙ্গে একই শ্রেণিতে রাখা যায় না ৷ সম্প্রতি একটি মামলায় এমনই পর্যবেক্ষণ ছিল এলাহাবাদ হাইকোর্টের ৷ বিচারপতি রাম মনোহর নারায়ণ মিশ্র জানিয়েছিলেন, শিশুর বুকে হাত দেওয়া বা তার পাজামার গিঁট খুলে ফেলা ধর্ষণের অপরাধ নয় । ওই রায়ের ওপরই স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট ৷

বিচারপতি বি আর গাভাই এবং অগাস্টিন জর্জ মাসিহের বেঞ্চ জানিয়েছে, এই রায় 'সম্পূর্ণ অসংবেদনশীল'। বিচারপতি গাভাই বলেন, "বিচারপতি এক্ষেত্রে অস‌ংবেদনশীলতা দেখিয়েছেন । মাননীয় বিচারপতি সম্পর্কে এই ধরনের শব্দের ব্যবহার করার জন্যও আমরা দুঃখিত ।"

দ্বিতীয় মামলা: 
এলাহাবাদ হাইকোর্ট একটি ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্তকে জামিন মঞ্জুর করেছে, যেখানে বিচারপতি সঞ্জয় কুমার সিং পর্যবেক্ষণ করেন যে, "অভিযোগকারিণী নিজেই বিপদ ডেকে এনেছেন", কারণ তিনি মদ্যপ অবস্থায় অভিযুক্তের বাড়িতে যাওয়ায় সম্মত হন। আদেশে বলা হয়, অভিযোগকারিণী এম.এ. পড়ুয়া, ফলে তিনি তার কাজের নৈতিকতা ও গুরুত্ব বোঝার ক্ষমতা রাখেন।