আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রচুর টাকার মালিক বিপত্নীক ব্যবসায়ী। ছেলে-মেয়েদেরও বিয়ে হয়ে গিয়েছে। দিল্লিতে তাঁদের সঙ্গেই থাকেন ওই ব্যবসায়ী। ব্যবসার কারণে অবশ্য তাঁকে প্রায়ই মুম্বইয়ে আসতে হত। সেখানেই এক গায়িকার সঙ্গে পরিচয় হয় ৭৪ বছরের ব্যবসায়ীর। পরিচয় থেকে ক্রমেই ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। একসময়ে তাঁরা শারীরিক সম্পর্কে জড়ান। যা শেষপর্যন্ত কাল হয় ওই বৃদ্ধের। ওই গায়িকা বৃদ্ধকে প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। শেষে বাড়ি কেনার জন্য কয়েক কোটি টাকা চাইলে তা দিতে অস্বীকার করেন ব্যবসায়ী। যার মাসুল গুণতে হয় তাঁকে। মহিলা বৃদ্ধের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন। ফলে গ্রেপ্তার করা হয় ওই ব্যবসায়ীকে। তবে, ব্যবসায়ী ক্রমেই বুঝতে পারেন য়ে তিনি হানিট্র্যাপের শিকার। পরে, উপযুক্ত প্রমাণের ভিত্তিতে অভিযুক্ত মহিলাকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মুম্বই পুলিশ জানিয়েছে, "২০১৫ সালে স্ত্রীর মৃত্যুর পর ভুক্তভোগী তাঁর ছেলের সঙ্গে দিল্লিতেই থাকেন। ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে তিনি মুম্বই সফরে আসতেন। ২০২৩ সালের ১৮ মে ব্যবসায়ী অভিযুক্ত মহিলার সংস্পর্শে আসেন। তিনি নিজেকে একজন গায়িকা হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন। তাঁরা লোনাভালায় যান, যেখানে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেন, এরপর দু'জনে ফোন এবং ভিডিও কলের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখতেন।"
পুলিশের সংযোজন, "২০২৩ সালের ১ জুন, একটি স্টুডিও ভাড়া দেওয়ার জন্য মহিলা ব্যবসায়ীর কাছে ১২.৫০ লক্ষ টাকা দাবি করেন। যা আরটিজিএসের মাধ্যমে স্থানান্তর করা হয়েছিল। সেই বছরের ৭ জুলাই, মহিলাটি নয়াদিল্লিতে পাতিয়ালা হাউস আদালতে হাজিরা দিতে যান, যেখানে তিনি ব্যবসায়ীর সঙ্গে দেখা করেন। কয়েকদিন পরে, ওই মহিলা একটি বাড়ির জন্য ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৪ লক্ষ টাকা দাবি করেন। তারপরেও তিনি দু'বার ১ লক্ষ এবং ২ লক্ষ টাকা দাবি করেন।"
অবশেষে সেই বছরের সেপ্টেম্বরে বাড়ির জন্য ৪-৫ কোটি টাকা দাবি করলে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী আপত্তি জানান। ফলে রেগে যান অভিযুক্ত মহিলা।
এরপরেই ঘটনা অন্যদিকে মোড় নেয়। পুলিশের দাবি, "২০২৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর, গোরেগাঁওয়ের একটি হোটেলে সময় কাটানোর পর, ব্যবসায়ীকে ছেড়ে মহিলাটি চলে যান। তারপর দিনদোশি থানার পুলিশ নিয়ে ফের হোটেলে ফিরে আসেন। এরপরই পুলিশ ব্যবসায়ীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার করে। কয়েক মাস জেলবন্দি থেকে শেষে জামিনে ছাড়া পান ব্যবসায়ী। ক্রমেই বৃদ্ধ ব্যবসায়ী বুঝতে পেরেছিল যে, তিনি কীভাবে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। ওই মহিলার সঙ্গে পরিচয়ের আগে ব্যবসায়ীর সঙ্গে ফোনে অনেক্ষণ একজন কথা বলেছিলেন। সেটাই ছিল আসলে হানি-ট্র্যাপ।"
ভিডিও ক্লিপ-সহ প্রমাণ পাওয়ার পর, দিল্লির ব্যবসায়ী মালভানি থানায় যান, যার পরে ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারায় তোলাবাজি এবং অন্যান্য অপরাধের জন্য মহিলার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। অভিযুক্ত মহিলাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশের তদন্তে আরও দেখা গিয়েছে যে, ধৃত মহিলা ২০২৪ সালে অন্য একজন পুরুষের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মামলা দায়ের করেছিলেন।
