নিজস্ব সংবাদদাতা: ২০২০ সালে ঘোষণা হয়েছিল সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে এক ছবিতে দেখা যাবে বাঙালির দুই প্রিয় চরিত্রকে। সেই দুই চরিত্র কারা? প্রদোষ চন্দ্র মিত্র ওরফে ফেলুদা  এবং প্রোফেসর ত্রিলোকেশ্বর শঙ্কু! প্রযোজনা সংস্থা এসভিএফ-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল এই খবর। ছবিটি পরিচালনার দায়িত্বে থাকছেন সত্যজিৎপুত্র সন্দীপ রায়। চ্যালেঞ্জ নিঃসন্দেহে বড় হলেও সেই দায়িত্ব নিয়ে ফেলেছিলেন সন্দীপ। তবে এরপর বিশ্বজুড়ে করোনার অতিমারির পাশাপাশি প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে ছবি তৈরির বিষয়ে সৃষ্টিশীলতা সম্পর্কে পার্থক্য তৈরি হওয়ায় সেই ছবির কাজ শুরু করা যায়নি। তবে কি ফেলুদা ও শঙ্কুর এই জোড়া অভিযান আর হাজির হবে না বড়পর্দায়? আজকাল ডট ইন-এর করা এই প্রশ্নের জবাব দিলেন খোদ সন্দীপ রায়। 

 

দ্বিধাহীনভাবে স্পষ্ট ভাষায়, কাটা কাটাভাবে তিনি বললেন, “একদম হাজির হবে। যেমন ভেবেছিলাম একই ছবির প্রথমার্ধ্বে একটি ছোট শঙ্কুর গল্প ও দ্বিতীয়ার্ধ্বে ফেলুদার গল্প দেখানো হবে দর্শককে, ঠিক তেমনভাবেই। তবে একটু সময় লাগবে। পরিকল্পনা করাই রয়েছে। আপাতত কয়েকটি ছোট গল্প নিয়ে একটি ছবি তৈরি করছি। যেমন, আগেও করেছি... ‘যেখানে ভূতের ভয়’, ‘চার’। বাবার গল্প তো থাকছেই, এছাড়াও একাধিক যশস্বী লেখকের গল্প নিয়েও লেখা হয়েছে এই ছবির চিত্রনাট্য। এই ছবিটা আগে হোক, তারপর...তারপর দেখা যাক।” 


প্রসঙ্গত, ১৯৬৫ সালের ডিসেম্বর মাসের ‘সন্দেশ’ পত্রিকায় ফেলুদা সিরিজের প্রথম গল্প ‘ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি’ প্রকাশিত হয়। প্রথমে শুধু ফেলুদা তোপসে থাকেলও ধীরে ধীরে সেই দুই চরিত্রের পাশাপাশি সত্যজিৎ হাজির করেছিলেন জটায়ু-কে। বাকিটা ইতিহাস। অবশ্য, ফেলু-তোপসের আবির্ভাবের বছর চারেক আগেই প্রফেসর শঙ্কুর পাঠকদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন সত্যজিৎ। সেখানে তিনি বিজ্ঞানের পাশাপাশি কল্পনাকেও প্রশ্রয় দিয়েছিলেন। ৬৯টি ভাষা জানেন শঙ্কু। আলেকজেন্ডার গ্রাহাম বেলের পর আবিষ্কারক হিসাবে শঙ্কু-ই যে একমেবাদ্বিতীয়ম তা স্বীকার করে নিয়েছে পাঁচটি মহাদেশের তাবড় তাবড় বিজ্ঞানীরা। শঙ্কু হায়ারোগ্লিফিক পড়তে পারেন, হরপ্পা ও মহেঞ্জোদাড়োর লিপির অর্থ উনিই প্রথম বের করেন। আবার নিজের হাতেই যেমন বানিয়েছেন সর্বরোগবিনাশক ওষুধ মিরাকিউরল তেমন আনকোরা নতুন তৈরি ধাতু দিয়ে তৈরি করেছেন শ্যাঙ্কোপ্লেন। আন্তর্জাতিক হয়েও খাঁটি বাঙালি শঙ্কু।  আইকনিক এই দুই চরিত্রই নিজস্বতায় জোরে বছরের পর বছর ধরে পাঠকদের মনে জায়গা করে নিয়েছে। তাই এক ছবিতে আলাদা ফ্রেমে হলেও এই দুই চরিত্রকে ফের বড়পর্দায় দেখতে যে উৎসুক হয়ে রয়েছেন ছবিপ্রেমী দল, তাতে কোনও সন্দেহ আছে কি?