উপালি মুখোপাধ্যায়: কোথাও বসন্ত উৎসব। কোথাও হোলি। তো কোথাও দোল যাত্রা। সকাল থেকে আকাশ-বাতাস মাতাল রঙের নেশায়। দেশজুড়ে এমন পার্বণের জন্য অপেক্ষা বছরভর। বসন্তও অকৃপণ যাওয়ার আগে। রাঙিয়ে দিয়ে যায় আট থেকে ৮০। ফুলের পাপড়িতে, সুগন্ধি আবিরে, বেলুন-পিচকিরিতে। নানা রাজ্যে নানা নামে পালিত হয় রঙের উৎসব---

লাঠখোর হোলি
মেয়েদের ঘাঘরা-চোলি রঙিন। পুরুষের সাদা খাটো কুর্তা, ধোতির মতো পাজামায় রঙেন বন্যা। এভাবেই তাঁদের লাঠির বাড়ি মেরে খুনসুটিতে মাতেন উত্তরপ্রদেশের মথুরা-বৃন্দাবনের নারী। শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে গোপিনীদের লীলাখেলাকে বাস্তব করতে। এছাড়াও, ফুলের পাপড়ি ছড়িয়ে দোল খেলার রেওয়াজও আছে। নাম ‘ফুলন হোলি’।

রাজকীয় হোলি
রাজস্থানের জয়পুর, উদয়পুরের হোলি সত্যিই রাজকীয় জাঁকজমকের সঙ্গেই পালিত হয়। সেখানকার সমস্ত প্যালেসে আগের দিন হোলিকা দহনের মাধ্যমে দুষ্টের বিনাশসাধন করা হয়। আলোয় সাজানো হয় প্রত্যেকটি রাজবাড়ি। পরের দিন সকাল থেকে শুরু রং খেলা। সনাতনী পোশাকে সেজে নারী-পুরুষ উভয়েই দোল খেলেন। থাকে লোকগান, নাচের আয়োজন। এছাড়া, হাতিকে সুন্দর করে সাজিয়ে এদিন শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। নাম ‘এলিফ্যান্ট ফেস্টিভ্যাল’।

আধ্যাত্মিক দোল
উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে হোলি পালিত হয় হিন্দু রীতি মেনে। আগের দিন ‘ছোট হোলি’ বা হোলিকা দহন। শকনো কাঠ, পাতা জড়ো করে আগুন জ্বালিয়ে তাকে ঘিরে নাচগান, প্রার্থনা। পরের দিন গঙ্গার ঘাটে ঘাটে রং খেলার আয়োজন। সঙ্গে ভাঙের সরবত।

হোলা মোহালা
যে কোনও আনন্দে, উদযাপনে পাঞ্জাবিতে পাঞ্জাবিদের উচ্ছ্বাস দেখার মতো। হোলিতেও রাজ্যবাসী একই ভাবে মেতে ওঠেন। গঙ্গার তীরে মার্শাল আর্ট-সহ নানা রকমের কসরত দেখানো হয়। আবির-ফাগে রঙিন হওয়া আছেই। সঙ্গে ভাঙের সরবত। তিন দিনের উৎসবে ভক্তরা ঈশ্বরের আশীর্বাদ নিতে তখত শ্রী কেশগড় সাহিবে যান।

সাংলায় হোলি
হিমাচল প্রদেশের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত সাংলা। তিন দিনের উদযাপনে নাচ-গান আর রকমারি রং দিয়ে হোলি খেলা। এখানের হোলির বড় গুণ এটি পরিবেশবান্ধব। ভেষজ জিনিস, ফুল, লতাপাতা থেকে তৈরি রং দিয়ে এখানে রং বানানো হয়। কোনও কৃত্রিম রঙের প্রচলন নেই। যাতে কোনও ভাবে পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।