আজকাল ওয়েবডেস্ক: কী ভয়ঙ্কর কেলেঙ্কারি। সক্রিয় ভাবে জুয়া খেলার জন্য ৩৭১ জন রেফারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চলেছে তুরস্কের ফুটবল সংস্থা। 
এটা ঘটনা, প্রায় ৯ মাস আগে জোসে মোরিনহো অভিযোগ তুলেছিলেন, তুরস্কের ফুটবল লিগের রেফারিংয়ে বিস্তর গণ্ডগোল আছে। ফেনেরবাখের কোচের পদ থেকে বরখাস্ত হওয়ার পর প্রকাশ্যে ঘুরিয়ে এই কথা বলেছিলেন মোরিনহো। বলেছিলেন, সেই দেশের রেফারিং ‘বিষাক্ত’। এরপরেই নড়েচড়ে বসেছে তুরস্কের ফুটবল সংস্থা। 

তুরস্কের ফুটবল সংস্থার সভাপতি ইব্রাহিম হাসিয়োসমানোগ্লু জানিয়েছেন, তদন্তের পর দেখা গিয়েছে দেশের ৫৭১ জন সক্রিয় রেফারির মধ্যে ৩৭১ জনই জুয়া খেলেছেন। ১৫২ জন সক্রিয় ভাবে জুয়া খেলে চলেছেন। তিনি বলেছেন, ‘‌ফুটবল সংস্থা হিসাবে আমরা আগে নিজেদের উঠোন পরিষ্কার শুরু করেছি। যাদের জুয়ার অ্যাকাউন্ট পাওয়া গিয়েছে তাদের মধ্যে সাত জন শীর্ষস্থানীয় রেফারি, ১৫ জন শীর্ষস্থানীয় সহকারী, ৩৬ জন সাধারণ রেফারি এবং ৯৪ জন সাধারণ সহকারীর খোঁজ পাওয়া গিয়েছে।’‌ 

এবার সরাসরি জুয়ার সঙ্গে জড়িত থাকার জন্য  ১৪৯ জন রেফারি ও সহকারী রেফারিকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তুরস্কের ফুটবল ফেডারেশন জানিয়েছে, পেশাদার লিগের ১৪৯ জন ম্যাচ অফিসিয়ালকে ৮ থেকে ১২ মাস পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তদন্ত চলছে আরও ৩ জনের বিরুদ্ধে। 

এর আগে বেটিং অ্যাপে ১৫২ জন রেফারি সক্রিয় বলে জানিয়েছিল তুরস্কের ফুটবল ফেডারেশন। এঁদের মধ্যে ৭ জন সর্বোচ্চ পর্যায়ের রেফারি এবং ১৫ জন সহকারী রেফারিও আছেন।

তুর্কি ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি ইব্রাহিম হাজিওসমানুগ্লু জানিয়েছেন, ''সাম্প্রতিক অনুসন্ধানে জানা গিয়েছে, কিছু রেফারি যেভাবে বেটিংয়ে জড়িয়ে পড়েছেন তা ফুটবল স্পিরিটের পরিপন্থী এবং সম্পূর্ণভাবে বেমানান।'' 

তদন্তে আরও বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। জানা গিয়েছে এক রেফারি নাকি ১৮ হাজার বার জুয়া খেলেছেন। ৪২ জন এমন রেফারি রয়েছেন যাঁরা ১০০০ বারের বেশি জুয়া খেলেছেন। এই হিসাব গত পাঁচ বছরের। তুরস্কের ক্রীড়া আইন এবং তুরস্কের ফুটবল সংস্থার আইন অনুযায়ী, ম্যাচ পরিচালকরা কখনওই জুয়া খেলতে পারেন না। দোষী সাব্যস্ত হলে এই রেফারিদের তিন মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত ফুটবল সংক্রান্ত সকল কাজকর্ম থেকে নিষিদ্ধ করা হবে।

এই যাবতীয় ঘটনার সূত্রপাত চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে। ফেনেরবাখের কোচ হওয়ার পর রেফারিং নিয়ে বিতর্ক তৈরি করেন মোরিনহো। সেই সময় গালাতাসারের সঙ্গে একটি ম্যাচের পর রেফারিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘‌আপনার মতো রেফারি থাকার জন্যই এরকম দুরবস্থা।’‌ তাঁর বক্তব্য ছিল, অধিকাংশ রেফারি গালাতাসারেকে সমর্থন করে। তখন ‘বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্যে’র জন্য মোরিনহোকে ৪ ম্যাচ সাসপেন্ত করা হয়েছিল। পরে তাঁর চাকরিও যায়।