আজকাল ওয়েবডেস্ক: দুর্ঘটনায় কাটা গিয়েছে একটি পা। তবু তিনি থেমে থাকেননি। খেলার মাঠে টিকে থাকার জন্য লড়াই করে গিয়েছেন। অবশেষে মিলেছে সাফল্য। সদ্যসমাপ্ত রাজ্য প্যারা গেমসে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার মিনাখাঁর আহমেদ গাজি। সামনে তাঁর বিশ্বজয়ের হাতছানি। তিনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।
মিনাখাঁ ব্লকের চৈতল পঞ্চায়েতের চরপাড়ার বাসিন্দা আহমেদ। ছেলেবেলা থেকে তিনি বড় ক্রীড়াবিদ হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। সেই মতো নিজেকে তৈরিও করছিলেন। কিন্তু মাত্র ১৫ বছর বয়সে তাঁর জীবনে ঘটে যায় চরম বিপর্যয়। রাস্তায় চলার সময় ভয়াবহ এক দুর্ঘটনায় তাঁর একটি পা কাটা পড়ে। পা হারানোর পর আহমেদ খুব ভেঙে পড়েছিলেন। ভাবেন জীবনের সব স্বপ্ন তাঁর থমকে গেল। শেষে একসময় নিজেই ঘুরে দাঁড়ালেন। হুইল চেয়ারে বসেই আবার শুরু করলেন শারীরিক সক্ষমতা বাড়ানোর লড়াই। অবশেষে মিলল সেই সাফল্য। সম্প্রতি কলকাতার সল্টলেকে আয়োজিত রাজ্য প্যারা ফেন্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে তিনি দুটি বিভাগে সোনা এবং রুপোর পদক জিতেছেন।
অতি সাধারণ নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে আহমেদ। তাঁর কাঁধে বৃদ্ধ বাবা-মা, দাদা-বোনের ভরণপোষণের দায়িত্ব রয়েছে। বিশেষভাবে সক্ষম হয়েও তিনি হেরে যাননি। হুইল চেয়ারে বসেই ইটভাটায় কাজ করেছেন। পাশাপাশি মাঠে গিয়ে দৈনন্দিন অনুশীলনে ফেন্সিংয়ের মতো কঠিন খেলায় নিজেকে তৈরি করেছেন। রাজ্য প্যারা গেমসে তিনি সোনা জয় করে নজর কেড়েছেন। বাংলার নাম দেশের মঞ্চে উজ্জ্বল করার লক্ষ্যে আহমেদ এগিয়ে চলেছেন।
প্রতিবেশী কামরুল সর্দার বলেন, 'আহমেদ আমার পাড়ার ছেলে। রাজ্য স্তরের প্যারা গেমসে ও চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আমাদের গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করেছে। আমরা চাই, ভবিষ্যতে ও আরও বড় প্রতিযোগিতায় জয়লাভ করে আমাদের রাজ্যের মুখ উজ্জ্বল করুক।' আহমেদ চেন্নাইয়ের জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতার জন্য তৈরি হচ্ছেন। তিনি বলেন, 'আমার একটা পা নেই। তবে আমি মনোবল হারাইনি। আমি খেলার মাঠে আরও লড়াই করব। প্যারা গেমসে আমার দেশের নাম যেন উজ্জ্বল অক্ষরে লেখা হয়।'
