আজকাল ওয়েবডেস্ক: ইস্টবেঙ্গলের হয়ে ঘাম ঝরিয়েছেন তিনি। আশিয়ান কাপের প্রথম ম্যাচে নামার আগেও বর্ধমানের ছেলেটা জানতেন না প্রথম একাদশে তিনি থাকবেন।
লাঞ্চের সময়ে কোচ সুভাষ ভৌমিক জানতে পারেন সংগ্রাম মুখোপাধ্যায়ের চোট রয়েছে। সন্দীপকে দায়িত্ব দেওয়া হয় গোল আগলানোর। তার পরের ঘটনা ইতিহাস।
সন্দীপ নন্দীকে দলে না পাওয়ায় বিদেশি কোচ ট্রেভর জেমস মর্গ্যান ইস্টবেঙ্গলের চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে চলে গিয়েছিলেন। মর্গ্যান-জমানায় ইস্টবেঙ্গলকে বাঁচাতে গিয়ে রক্ত ঝরিয়েছেন। সন্দীপ নন্দী মানেই ইস্টবেঙ্গলের সবুজ ঘাসে রূপকথা।
আরও পড়ুন: চোট সারিয়ে দলে ফিরলেন পন্থ, তবে ব্রাত্যই সামি
সন্দীপ নন্দী বহু যুদ্ধের সৈনিক। ইস্টবেঙ্গলের জার্সিতে তাঁর অবদান ভোলার নয়। কিন্তু ক্লাবের সভ্য-সমর্থকরা যেভাবে তাঁকে সমাজমাধ্যমে ট্রোল করে চলেছেন, তাতে দেশের প্রাক্তন গোলকিপারের হৃদয় ক্ষতবিক্ষত। হতাশ সন্দীপ বলছেন, ''ফুটবল থেকে এবার সন্ন্যাস নেব ভাবছি। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের জন্য আমি নিজেকে নিংড়ে দিয়েছি। ইস্টবেঙ্গল ক্লাব আমার রক্তে। আমাকে ক্লাবের সভ্য-সমর্থকরা দীর্ঘদিন ধরে চেনেন। অথচ তাঁরাই আমার কথা বিশ্বাস না করে ভিনদেশি এক মানুষের কথাকেই ধ্রুবসত্য ধরে নিয়ে আমাকে ট্রোলিং করছেন। আমি সত্যিই বিস্মিত। বলার ভাষা আমার নেই। এসব দেখেশুনে আমি খুবই হতাশ। সত্যিটা জানুক মানুষ। তাঁরাই বিচার করুক আমার দোষটা কোথায়? দিনের পর দিন আমাকে সন্দেহ করা হয়েছে, আমাকে স্বাধীন ভাবে কাজ করতে দেওয়া হয়নি। ভীতিপ্রদ এক পরিবেশ তৈরি করে রাখা হত। বারংবার আমার নিজের দোষ স্বীকার করার পরেও আমাকে সবার সামনে অসম্মান করা হল। এটা আমার প্রাপ্য ছিল না।''
সামনে কড়া নাড়ছে সুপার কাপ। তিনি ইস্টবেঙ্গল শিবির ছেড়ে তলে এলেও লাল-হলুদের সাফল্য কামনা করছেন আসন্ন প্রতিযোগিতায়। সুপার কাপের কথা ভেবেই তিনি সাময়িক 'যুদ্ধবিরতি' ঘোষণা করছেন। প্রাক্তন গোলকিপার বলছেন, ''সামনেই সুপার কাপ। ক্লাবের জন্য আমার শুভেচ্ছা রয়েছে। সফল হয়ে ফিরুক দল এই প্রার্থনাই করি। আমি ক্লাবের স্বার্থে এখন আর পুরনো অধ্যায় নিয়ে কথা বলতে চাই না। সুপার কাপ হয়ে যাওয়ার পরে যা বলার বলব।''
সন্দীপের সঙ্গে কথাবার্তা বলে যা বোঝা গেল, তাতে তিনি সহজে জমি ছাড়বেন না। আপাতত প্রিয় ক্লাবের কথা মাথায় রেখে সাময়িক ভাবে চুপ থাকছেন। কিন্তু তিনি বৃহত্তর যুদ্ধের জন্য নিজেকে তৈরি করছেন। ইমামি, ক্রীড়ামন্ত্রী, আইএফএ, এফপিএ-কে চিঠি দিয়ে তিনি জানাবেন সোমবার গোয়াতে তাঁর সঙ্গে ঠিক কী হয়েছিল। তাঁর বক্তব্য, এই দেশে অযোগ্য বিদেশিদের মাথায় তুলে নাচা হয়। সেখানে তাঁর মতো সারা ভারত দাপিয়ে বেড়ানো তারকা ফুটবলারদের যথাযোগ্য সম্মান দেওয়া হয় না। দেশের প্রাক্তন ফুটবলারদের অসম্মান করে, পিছনে সরিয়ে রেখে ভিনদেশের অনামী, অখ্যাত, অযোগ্য বিদেশিদের নিয়ে এসে সমাদর করা হয়। এতেই তাঁর আপত্তি। এই সিস্টেমের শেষ দেখতে চান সন্দীপ নন্দী।
মনে মনে তিনি নিজেকে তৈরি করছেন বড় যুদ্ধের জন্য। কিন্তু একদা লাল-হলুদ জার্সিতে নিজেকে নিংড়ে দেওয়ার পরেও সভ্য-সমর্থকদের কাছ থেকে উড়ে আসা টীকা-টীপ্পনি তাঁকে ব্যথিত করছে, সবার অজান্তেই সন্দীপ নন্দী রক্তাক্ত।
আরও পড়ুন: 'জ্যাকসনের মতো ফুটওয়ার্ক ছিল' লারাকে বিরাট সার্টিফিকেট শচীনের, ক্যারিবিয়ান মহাতারকা কী বললেন? ...
