আজকাল ওয়েবডেস্ক: পাকিস্তানকে তুড়ি মেরে হারিয়েছে ভারত। কিন্তু বিতর্ক পিছু ছাড়েনি। পঞ্চাশ করার পরে তাঁর উদযাপন নিয়ে তুমুল বিতর্ক হয়েছে। সাধারণত খেলার মাঠে ব্যক্তিগত মাইলস্টোন ছোঁয়ার পরে কেউ এভাবে সেলিব্রেশন করে না। ফারহানের এহেন উদযাপন দৃষ্টি কেড়ে নিয়েছে। শুরু হয়ে গিয়েছে চর্চা। 

টাইমিংটা ঠিক হল না ফারহানের। পহেলগাঁওয়ে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিদের নির্বিচারে গুলি চালনায় ২৬ জন ভারতীয় পর্যটক মারা যান। এই প্রেক্ষিতে ভারত-পাক ম্যাচের বল গড়ানো নিয়েই তর্কবিতর্ক চলছিল। কিন্তু ভারত সরকারের তরফ থেকে ভারত-পাক ম্যাচ নিয়ে কোনও নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়নি। যাই হোক সেই প্রেক্ষিতে ফারহানের এহেন সেলিব্রেশন নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে তুমুল তর্কবিতর্ক। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভারতের সমর্থকরা বলেছেন, ''এই লোকটা ভুল পেশা বেছে নিয়েছে। বন্দুক ব্যাকফায়ার করল।''

আরও পড়ুন: মেসি জ্বলে উঠলেই মায়ামি-বিস্ফোরণ হয়, জোড়া গোলে নায়ক আর্জেন্টাইন তারকা ...

পাকিস্তানের ইনিংসের তৃতীয় বলেই ফারহানের ক্যাচ ফেলেন অভিষেক শর্মা। পরে বাউন্ডারি লাইনে ফের ক্যাচ পড়ে ফারহানের। 
সেই ফারহানের সেলিব্রেশন নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে বিতর্ক। 

চারটি ক্যাচ ফেললেন ভারতের তারকা ক্রিকেটাররা। পাকিস্তানের ইনিংসের তৃতীয় বলেই ফারহানের ক্যাচ ফেললেন অভিষেক শর্মা। পরে বাউন্ডারি লাইনে ফারহানের ক্যাচ ধরতে গিয়েই ফস্কান। তা ছক্কা হয়ে যায়। সাইম আয়ুবের ক্যাচ ফেলেন কুলদীপ যাদব। জশপ্রীত বুমরাহ অন্যান্য দিনের মতো বিধ্বংসী হতে পারেননি। এই পিচে ফাস্ট বোলারদের মোকাবিলা করা, শট খেলা সুবিধাজনক হয়ে যায়। তার পরিবর্তে স্পিনার বা দুবের মতো বোলারকে সামলানো কঠিন হয়ে যাচ্ছিল। দুবের বলের গতি কমিয়ে আনেন। সেটাই পাকিস্তানি ব্যাটারা বুঝতে পারলেন। পার্টনারশিপ ভাঙলেন শিবম দুবে, উইকেট দিলেন সূর্যকুমার যাদবকে। 

একসময়ে বেশ ভাল এগোচ্ছিল পাকিস্তান। কিন্তু উইকেট যাওয়ার পরে ৭ ওভারে ৩৮ রান করে পাকিস্তান। আরেক পাক ওপেনার ফকর জমানকে ফেরান হার্দিক পাণ্ডিয়া। তাঁর বলে শুরুতেই ফারহানের ক্যাচ ছাড়েন অভিষেক। সেই হার্দিকই ফেরান ফকরকে (১৫)। তিনি অবশ্য আউট হয়ে ফেরার সময়ে বিরক্তি প্রকাশ করেন। কুলদীপ যাদবের শিকার হুসেন তালাত (১০)। মহম্মদ নওয়াজ (২১) রান আউট হন। শেষের দিকে বাকিরা লড়ে যান। শেষমেশ পাকিস্তান করে ৫ উইকেটে ১৭১।

টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ১৭১ খুব একটা খারাপ স্কোর নয়। পাকিস্তান প্রথমে ব্যাট করে তুলেছিল ৫ উইকেটে ১৭১ রান। সেই রান তাড়া করতে নেমে ভারত দাদাগিরি দেখাল। অভিষেক শর্মা ও শুভমান গিলের ব্যাট শুরু থেকেই চলতে শুরু করল। শাহিন আফ্রিদিকে প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকিয়ে অভিষেক রান তাড়া শুরু করেছিলেন। খেলা যত এগোল ভারতের দুই ওপেনার ততই মারমুখী ব্যাটিং শুরু করে দিলেন। অভিষেক শর্মা ও শুভমান গিলের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ধুয়ে গেল পাক বোলিং আক্রমণ। ৯.৫ ওভারেই ভারত ১০৫ করে ফেলে। শুভমান গিল ৪৭ রানে আশরাফের বলে বোল্ড হন। তার আগে অবশ্য চোট পান গিল।  

তাতে ছন্দ নষ্ট হয়। অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব খাতা না খুলেই ফেরেন। ভারত দ্রুত গিল ও সূর্যের উইকেট হারায়। ১০৫ রানে এক উইকেট থেকে ১০৬ রানে ২ উইকেট হয়ে যায়। তাতেও দমে যাননি অভিষেক। তিনি রুদ্রমূর্তি ধরেন। নাগাড়ে আক্রমণ করে যান পাক বোলারদের। পাক বোলাররা কোথায় বল ফেলবেন তাই বুঝে উঠতে পারছিলেন না। শেষমেশ আবরারের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। যাওয়ার আগে ৩৯ বলে ৭৪ করে যান তিনি। ৬টি চার ও পাঁচটি ছক্কা মারেন তিনি। আউট হওয়ার আগের বলেই ছক্কা মেরেছিলেন অভিষেক। পরের বলেও মারতে গিয়ে ডাগ আউটে ফেরেন। বাকি কাজটা সারেন তিলক (১৯ বলে ৩০*) ও হার্দিক (৭*)। ৭ বল বাকি থাকতে ছয় উইকেটে ভারত ম্যাচ জেতে। একটা সময়ে মনে হচ্ছিল পাকিস্তান বোধহয় লড়াইয়ে ফিরে এসেছে। কিন্তু অভিষেক ও গিল যে মঞ্চে ভারতকে বসিয়ে দিয়ে যান, তাতে ম্যাচ জেতা ছিল কেবল সময়ের অপেক্ষা। 

আরও পড়ুন: একেই বলে দাদাগিরি, পাকিস্তানকে ধুয়ে দিল অভিষেক-গিলের ব্যাট, জয়ের তিলক ভারতের কপালে