আজকাল ওয়েবডেস্ক: মহম্মদ সিরাজ ম্যাজিক দেখা গেল ওভালে। হায়দরাবাদির আগুনে স্পেলে ভারত সিরিজে সমতা ফিরিয়ে আনল।
চতুর্থ দিনে হ্যারি ব্রুকের ক্যাচ ফেলেছিলেন সিরাজ। সমালোচনা ধেয়ে এসেছিল তাঁর দিকে। প্রাক্তনদের তীব্র সমালোচনায় ক্ষতবিক্ষত হয়েছিলেন সিরাজ। সেই সিরাজ এদিন প্রায়শ্চিত্ত করলেন। ক্রিকেট বারবার সুযোগ দেয় না। এক বলের খেলা ক্রিকেট। সেখানে ক্রিকেট আরও একটা সুযোগ দিয়েছিল সিরাজকে। হায়দরাবাদি তারকা সেই সুযোগ দু'হাতে লুফে নেন। ওভালে নিজেকে নিংড়ে দিলেন। তিরিশ ওভার হাত ঘুরিয়ে পাঁচ-পাঁচটি উইকেট নিলেন। পঞ্চম দিনের শুরুতে উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডের সাজঘরে জোরালো ধাক্কা দিয়েছিলেন তিনি। ইংল্যান্ডের শেষটাও হল তাঁরই হাতে।
আরও পড়ুন: কেরিয়ারের সেরা টেস্ট ব়্যাঙ্কিং, কত নম্বরে উঠে এলেন ওভালের নায়ক?
ওভালে জেতার জন্য ৩৫ রান দরকার ছিল ইংল্যান্ডের। ভারতের জেতার জন্য প্রয়োজন ছিল চার-চারটি উইকেট। ভারতের সুযোগ কম। বরং ইংল্যান্ড অ্যাডভান্টেজে বললেও অত্যুক্তি করা হবে না। কিন্তু মহম্মদ সিরাজ অন্যকিছু হয়তো ভেবে রেখেছিলেন। দিনটা তাঁর। ওভাল টেস্টে লেখা থাকবে তাঁর নাম। প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা শুরুতেই রান দিয়ে দিলেন একগাদা। চাপ বাড়ল ভারতের উপরে। সিরাজ বল হাতে প্রথমে ফেরালেন স্মিথকে। তার পরে ওভারটন। অন্যদিকে মরিয়া হয়ে উঠেছেন অ্যাটকিনসন। তিনি মারমুখী। এদিকে কৃষ্ণর ইয়র্কারে উইকেট ভাঙল টংয়ের। অ্যাটকিনসনের উইকেট ভেঙে ব্রিটিশ-ভূমে নতুন এক রূপকথা লিখলেন সিরাজ। তাঁর জন্য়ই সিরিজে সমতা ফিরিয়ে আনে ভারত। শুধু ওভাল টেস্ট নয়। গোটা সিরিজ জুড়েই ছিল সিরাজের দৌরাত্ম্য।

জশপ্রীত বুমরাহ না থাকায় সিরাজ যেন বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে খেলেন। আর ওই দুই ম্যাচেই ভারত জয় পায়। সিরাজ এখন আলোচনায়। শচীন তেণ্ডুলকরের মতো কিংবদন্তি বলছেন, সিরাজ যথাযোগ্য সম্মান পান না। মাস্টার ব্লাস্টার বলেন, ''অবিশ্বাস্য। অসাধারণ অ্যাপ্রোচ। সিরাজের মানসিকতা আমার পছন্দ। আত্মবিশ্বাস নিয়ে বোলিং করার জন্য ওর দৌড় আমার ভাল লাগে। এরকম একজন ফাস্ট বোলারের লাগাতার মুখোমুখি হতে কারওরই ভাল লাগবে না। আমি ধারাভাষ্যকারদের বলতে শুনেছি, সিরিজে ১ হাজারের বেশি বল করার পরও সিরাজ ৯০ মাইল গতিতে বল করে গিয়েছে। এটাই সাহসিকতা ও বড় হৃদয়ের পরিচয়।''

লর্ডসে ট্র্যাজিক হিরো থেকে গিয়েছিলেন সিরাজ। শোয়েব বশিরের বলটা তাঁর ব্যাটে লেগে উইকেট ভেঙে দেয়। সিরাজ সারা রাত ঘুমোতে পারেননি। খাননি পর্যন্ত। ভাগ্য দ্রুতই বদলে যায়। সেদিন তিনি ছিলেন ব্যর্থ এক নায়ক। ওভালে তিনিই নায়ক। ইংল্যান্ড থেমে যায় ৬ রান দূরে। সিরাজের জন্যই সমালোচনার হাত থেকে বেঁচে যান গৌতম গম্ভীর। প্রথমে নিউজিল্যান্ড, পরে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারের পরে ইংল্যান্ডে সিরিজ ড্র রাখল গম্ভীরের ভারত। মাস্টার ব্লাস্টার বলছেন, ''পঞ্চম দিন যেভাবে সিরাজ শুরু করেছিল, তা এককথায় অসাধারণ। সিরিজ জুড়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে সিরাজ। যখনই ওকে দরকার হয়েছে, যখনই মনে হয়েছে মরণকামড়টা এবার দিক, তখনই সিরাজ নিজেকে নিংড়ে দিয়েছে। সিরাজ যেভাবে উইকেটগুলো নিয়েছে এবং পারফরম্যান্স তুলে ধরেছে, তার প্রাপ্য কৃতিত্ব কিন্তু পায় না।'' সদ্য সমাপ্ত সিরিজ থেকে সিরাজ ২৩টি উইকেট সংগ্রহ করেছেন।
আরও পড়ুন: ক্রিকেট দেবতাদের অসম্মান করেছে ইংল্যান্ড, সেই কারণেই ওভালে হার, অদ্ভুত যুক্তি দিলেন অশ্বিন ...
