আজকাল ওয়েবডেস্ক: আঠারো বছরের প্রতীক্ষার অবসান ঘটেছিল ৩ জুন। পাঞ্জাব কিংসকে ৬ রানে হারিয়ে আইপিএল জেতে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। জয়ের উৎসব সমর্থকদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে বেঙ্গালুরুর চিন্নস্বামী স্টেডিয়ামে একটি সেলিব্রেশনের আয়োজন করে আরসিবি। কিন্তু সেখানে ভয়ঙ্কর পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে। তারকা ক্রিকেটারদের দেখার উৎসাহে স্টেডিয়ামের বাইরে পদপিষ্টের ঘটনায় বেশ কয়েকজন প্রাণ হারায়। তারমধ্যে ছিল একজন বাচ্চাও। মোট ১১ জন প্রাণ হারায়, প্রায় ৫০ জনের কাছাকাছি আহত হয়। সঠিকভাবে অনুষ্ঠান আয়োজন না করার জন্য সমালোচিত হতে হয় ফ্র্যাঞ্চাইজিকে। তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়। অনেকদূর জল গড়িয়ে যায়। কিন্তু এই বিষয় নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি আরসিবি। শেষমেষ ২৮ আগস্ট মৌনব্রত ভাঙল বেঙ্গালুরু।
নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি প্রক্রিয়ার সূচনা করল আরসিবি। যার নাম 'আরসিবি কেয়ার্স।' যা সমর্থকদের সমস্যার সমাধান করবে। ফ্র্যাঞ্চাইজির পক্ষ থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখা হয়, 'প্রিয় দ্বাদশ আর্মি, এটা আমাদের তরফ থেকে তোমাদের চিঠি। তিনমাস আগে শেষবার এখানে পোস্ট করেছি। আমাদের নিস্তব্ধতা অনুপস্থিতি নয়। এটা দুঃখ ছিল। এই জায়গাটা একসময় এনার্জি, স্মৃতি এবং মুহূর্ত দিয়ে ভরা ছিল। কিন্তু ৪ জুন সবকিছু বদলে যায়। আমদের হৃদয় ভেঙে যায়। সেই কারণে আমরা নিস্তব্ধ হয়ে যাই। এই সময় আমরা চূড়ান্ত হতাশার মধ্যে দিয়ে যাই। অনেক কিছু শুনেছি, শিখেছি। আমরা এমন কিছু করতে চলেছি যা শুধুমাত্র উত্তরের থেকে অনেক বেশি হবে। এভাবেই আরসিবি কেয়ার এসেছে। এখানে আমরা ফ্যানদের পাশে দাঁড়াব। এই মঞ্চটা সমর্থকদের। তবে সেলিব্রেশনের জন্য নয়, পাশে থাকার জন্য। একসঙ্গে এগিয়ে চলার জন্য। কর্নাটকের গর্ব হওয়ার জন্য। আরসিবি কেয়ার করে, এবং সবসময় করবে। শীঘ্র আরও বিস্তারিত আসছে।' ৫ জুন পদপিষ্টে মৃতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা করে আরসিবি। ঘটনায় শুধু প্রাণহানি হয়নি, বেঙ্গালুরুর চিন্নস্বামী স্টেডিয়ামের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। এই ঘটনার জেরে বেঙ্গালুরু থেকে সরে গিয়েছে আইসিসি মেয়েদের একদিনের বিশ্বকাপের ম্যাচ। জানিয়ে দেওয়া হয়, বড় ইভেন্টের আয়োজন করতে পারবে না চিন্নাস্বামী স্টেডিয়াম।
প্রসঙ্গত, মাস দেড়েক আগে কর্ণাটক হাইকোর্টে অন্তর্বর্তী জামিন পান রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর মার্কেটিং হেড নিখিল সোসালে। এছাড়াও ছাড়া পান ডিএনএ এন্টারটেনমেন্ট নেটওয়ার্কস প্রাইভেটের আরও তিনজন। আইনজীবী এসআর কৃষ্ণকুমার নিখিল সোসালে, সুনীল ম্যাথিউ, কিরণ কুমার এস এবং শামন্ত এনপি মাভিনাকেরের জামিন মঞ্জুর করেন। তবে চারজনের পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়। আরসিবির আইপিএল জয় সেলিব্রেশনের দিন পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে। গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন অভিযুক্ত। তার শুনানিতে সিনিয়র আইনজীবী সন্দেশ চৌটা জানান, 'কর্মীদের টার্গেট করতে পারে না পুলিশ। যখন এফআইআর ফ্র্যাঞ্চাইজির নামে আছে।' সরকারের আইনজীবী পাল্টা দাবি করেন, এই সেলিব্রেশনের জন্য প্রয়োজনীয় অনুমতি নেয়নি ফ্র্যাঞ্চাইজি। আরসিবির সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে ঘোষণার পর মুছে ফেলা হয়। ৪ জুন আরসিবির সোশ্যাল মিডিয়ায় বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। সকাল ৭.০১ মিনিটে বিধান সৌদা থেকে চিন্নস্বামী স্টেডিয়াম পর্যন্ত বিজয় প্যারেডের কথা জানানো হয়।
