রজত বসু: ২০০১, ২০০৩ আর ২০০৪। ন্যাশনাল লিগ জিতেছিল ইস্টবেঙ্গল। আই লিগ একবারও নয়। আইএসএল খেলতে হয় বলে খেলা। কেউ না কেউ স্পনসর জোগাড় করে দেয়। আর লাল–হলুদ খেলে। জেতেনি কখনও। জিতবে?
কলকাতা লিগের আর কৌলীন্য নেই। হারিয়েছে। আইএফএ খায় না মাথায় দেয় কেউ জানে না। গোটা লিগ জুড়ে অব্যবস্থা। তবুও কল্যাণীতে ডার্বি জিতল ইস্টবেঙ্গল। মোহন মোহন মোহন আর বাগানকে হারাল ৩–২ গোলে। লাল–হলুদ সমর্থকরা উদ্বেলিত। এতটাই যে বাঙ্গাল সমর্থকরা খেলার পর মোহনবাগান সমর্থকদের মারলেন। হ্যাঁ, মারলেন। স্টেডিয়ামের বাইরে। ট্রেনের ভিতরেও চলল অবিরাম গালাগালি।
কীরে লাল–হলুদ? পারবি মোহনবাগানকে আইএসএলে মারতে? বল পারবি? ধক্ আছে? আমরা তো ‘বড়’ ম্যাচ খেলে খেলে ক্লান্ত রে! মিথ তো যতবার ডার্বি ততবার হারবি?
মোহনবাগান জিতলে বলবি হারলাম তো এটিকে বা সুপার জায়ান্টসের কাছে। আর জিতলে? ওই কলকাতা লিগে। তখন মোহনবাগানকে হারালাম। তাহলে মেনে নে যে সবুজ মেরুনকে হারিয়ে গর্ব করিস।
শনিবার কল্যাণীতে ছিল কী একটা যেন! ওই যাকে নাকি ডার্বি টার্বি বলে। খেলার ফল বলছে ইস্টবেঙ্গল ৩–২ গোলে হারিয়েছে মোহনবাগানকে। ভাল, খুব ভাল। কিন্তু লাল–হলুদ জেতার জন্য যা সিনিয়র ফুটবলার খেলিয়েছে। বাগান তার সিকিভাগও নয়। আসলে বাগান আর কলকাতা লিগকে চায় না দিতে গুরুত্ব। নজর আইএসএল আর আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের দিকে।
শেষ দুই বা তিন বছর আইএসএলে ইস্টবেঙ্গল কত নম্বরে শেষ করেছে? এক জনপ্রিয় কর্তা বলেন, এবার নাকি হাল পাল্টাবে? হাস্যকর! পাল্টায় তো নি, বরং আরও খারাপ হয়েছে।
আইএসএল এবার হবে কিনা এখনও নিশ্চয়তা নেই। সম্ভবত হবে। হলে সেখানে লাল–হলুদকে সুযোগ দেওয়া হবে কিনা ভেবে দেখুক ফেডারেশন আর এফএসডিএল।
সত্যিই আইএসএল ডার্বি খেলে খেলে ক্লান্ত জেমি, দিমিরা। চাই আরও শক্ত প্রতিপক্ষ। তাদের হারিয়েই তো মজা। আইএসএল ‘ডার্বি‘ আদৌ ডার্বি?
প্রশ্ন জাগছে। বাগানে নতুন প্রশাসন এসেছে। সচিব সৃঞ্জয় বোস। সভাপতি দেবাশিস দত্ত। সঙ্গে আছেন সঞ্জীব গোয়েঙ্কা। শুনছিলাম, ওঁরা নাকি ছ’টা বিদেশি কনফার্ম করে ফেলেছে। বেশ ভাল। অনেককে ডুরান্ড, ফুরান্ডে খেলাবে। খেলাক। কিন্তু জিতবে? বাগান তো তিন বিদেশি নিয়েই মেরে দেবে। কারণ সঙ্গে রয়েছে একটা দুর্দান্ত ম্যানেজমেন্ট।
আসল হচ্ছে শিক্ষা ও সংস্কৃতি। যেটা শিখতে হয় মোহনবাগানিদের থেকে। জিতলাম বলে প্রতিপক্ষকে অপমান আর হেনস্থা। এটা তো আর রাজনীতি নয়। খেলার মাঠ।
ওঁরা ছোট্ট টুর্নামেন্ট জিতে লাফাবে। আর বাগান বড় ট্রফি তুলবে।
কল্যাণীতে ডার্বি নিয়ে অনেক লম্ফঝম্ফ হল। কত নাকি সুন্দর ব্যবস্থাপনা। তাহলে বাগান সমর্থকরা কেন মার খেল? কেন হেনস্থা হতে হল? আইএফএ জবাব দেবে? বাগান ম্যানেজমেন্ট তো অত্যন্ত ভাল বলব। যে এটা নিয়ে এখনও প্রশ্ন তোলেনি।
কাল অর্থাৎ মঙ্গলবার ২৯ জুলাই। গোটা মোহনবাগানিদের কাছে ওটাই দুর্গা পুজো, কালী পুজো। উৎসব। শপথ করুন। প্রিয় দল প্রিয় ফুটবলার আর প্রিয় ম্যানেজমেন্টের হেনস্থা নয়। চোখে চোখ রেখে বলব, আমরা মোহনবাগানি। মাঠে আয় দেখে নেব।
জয় মোহনবাগান।
