আজকাল ওয়েবডেস্ক: কথা বলল লোকেশ রাহুলের ব্যাট। লর্ডস টেস্টের তৃতীয় দিন সেঞ্চুরি হাঁকালেন এই তারকা ব্যাটার। লোকেশ রাহুল এক প্রান্তে দাঁত কামড়ে পড়ে থাকলেন। ১৭৭ বল ক্রিজে কাটালেন। একশো করার পরই স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেলেন লোকেশ রাহুল। তার আগে অবশ্য গড়লেন রেকর্ড। লর্ডসে রাহুলের নামের পাশে লেখা দুটো সেঞ্চুরি।
লোকেশ রাহুল ছাড়া লর্ডসের বাইশ গজে দুটো বা তার বেশি সেঞ্চুরি রয়েছে কেবল দিলীপ ভেঙ্গসরকারের। বস্তুতপক্ষে দিলীপ ভেঙ্গসরকার লর্ডসে তিনটি সেঞ্চুরি করেন। সেই কারণেই তাঁকে 'লর্ড অফ লর্ডস' বলা হত।
এশিয়ার প্রথম ওপেনার হিসেবে লোকেশ রাহুল লর্ডসে লিখে গেলেন রূপকথা। কোনও এশিয়ান ওপেনার লর্ডসে দুটো সেঞ্চুরি করতে পারেননি। ভেঙ্গসরকার তিনটি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন ক্রিকেটের মহাতীর্থে। কিন্তু ভেঙ্গসরকার ওপেনার ছিলেন না।
আরও পড়ুন: পিএসজি না চেলসি, ক্লাব বিশ্বকাপে শেষ হাসি কার জন্য তোলা? হাইভোল্টেজ ফাইনাল জবাব দেবে সব প্রশ্নের
এই রাহুলের সঙ্গে জুটি বাঁধার সময়ে রান আউট হন ঋষভ পন্থ। সেই প্রসঙ্গে লোকেশ রাহুল তৃতীয় দিনের ম্যাচের শেষে সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ''কয়েক ঘন্টা আগে, আমি পন্থকে বলেছিলাম যদি সম্ভব হয় লাঞ্চের আগেই আমি শতরান করার চেষ্টা করবো। লাঞ্চের আগে বশিরের শেষ ওভারটি বল করার পর, আমার মনে হয়েছিল সেঞ্চুরি করার ভাল সুযোগ। দুর্ভাগ্যবশত, আমি বলটি সরাসরি ফিল্ডারের কাছে মারলাম। আমি জানতাম আমি বাউন্ডারিতে পাঠাতে পারব কিন্তু আমি তা করিনি।''

২০২১ সালে লোকেশ রাহুল লর্ডসে প্রথমবার সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন। তাঁর শতরানের সৌজন্যে ভারত ৩৬৪ রান তুলেছিলে স্কোরবোর্ডে। সেই টেস্টে শেষ হাসি তোলা ছিল ভারতের জন্য। চার বছর পরে লর্ডসে ফিরে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে দশম ভারতীয় ব্যাটার হিসেবে অনার্স বোর্ডে নিজের নাম লেখালেন কেএল রাহুল। সেই রাহুল সাংবাদিক বৈঠকে পন্থের আউট প্রসঙ্গে বলছেন, ''মনে হয় ঋষভ স্ট্রাইক রোটেট করতে চেয়েছিল। আবার আমাকে স্ট্রাইক ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। ওই পর্যায়ে রান আউট হওয়া উচিত হয়নি, এটা সত্যিই ম্যাচের গতি বদলে দিয়েছিল। এটা আমাদের দু'জনের জন্যই হতাশাজনক ছিল। কেউই উইকেট এভাবে ছুঁড়ে ফেলতে চায় না।''
RUN OUT! ????
— England Cricket (@englandcricket)
Ben Stokes aims and fires at the stumps and Rishabh Pant is out! ❌ pic.twitter.com/Z9JWwV9aS4Tweet by @englandcricket
এদিকে লর্ডসে ঋষভ পন্থের জন্য বোন স্টোকস যে কৌশল অবলম্বন করেছিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সুনীল গাভাসকর। ঋষভ পন্থের দিকে ধেয়ে এসেছে একের পর এক শর্ট বল। ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকসের এহেন কৌশলে একদমই খুশি নন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক সুনীল গাভাসকর।
স্টোকস ছ'জন ফিল্ডারকে লেগ সাইডের বাউন্ডারিতে রেখেছিলেন। শরীর লক্ষ্য করে শর্ট বল দিয়ে পন্থকে উত্ত্যক্ত করা হচ্ছিল। ভারতের তারকা উইকেট কিপার তর্জনীতে চোট পান। চোটগ্রস্ত ব্যাটসম্যানকে সামনে পেয়েও স্টোকসবাহিনী ছাড়েননি পন্থকে। শর্ট বল করেই যান। পন্থ অবশ্য এই শর্ট বল নিয়ন্ত্রণ করেন দক্ষতার সঙ্গে সঙ্গেই। পুল মারেন পন্থ। সেই পুল শটগুলো ফিল্ডারের থেকে অনেক দূরে পড়ে।

সানিকে বলতে শোনা গিয়েছে, ''পঞ্চাশ-ষাট শতাংশ ডেলিভারি শর্ট বল করা হয়েছে। চার জন ফিল্ডারকে বাউন্ডারি লাইনে রেখে দেওয়া হয়েছিল। তাঁরা অপেক্ষা করছিল বাউন্সারের। আমার মতে এটা কখনওই ক্রিকেট নয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজ যখন শর্ট বল করত, তখন এরাই নিয়ম চালু করেছিল ওভার পিছু দুটো বাউন্সারের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের শক্তি খর্ব করার জন্য এমন নীতি অবলম্বন করা হয়েছিল।''
বেশ কয়েকবার পন্থের গ্লাভসে বল লাগে। ফিজিও তাঁর চিকিৎসা করেন। কিন্তু পন্থ নিজের কৌশল থেকে সরে আসেননি। ধারাভাষ্য দিচ্ছিলেন সুনীল গাভাসকর। তিনি ইংল্যান্ডের এহেন কৌশলে খুশি হননি। ধারাভাষ্য দেওয়ার সময়ে আইসিসি-র ক্রিকেট কমিটির চেয়ারম্যান সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন করেন নিয়ম বদলানোর জন্য।
গাভাসকরের সংযোজন, ''এখন আমরা দেখছি বাউন্সার দেওয়া হচ্ছে। কী ধরনের ফিল্ডিং সাজানো হয়েছে দেখুন একবার। এটা ক্রিকেট নয়। লেগ সাইডে ছ'জনের বেশি ফিল্ডার থাকার কথা নয়। সৌরভ গাঙ্গুলি, যিনি আইসিসি-র ক্রিকেট কমিটির চেয়ারম্যান, যদি দেখে এই ম্যাচ, তাহলে পরবর্তী মিটিংয়ে এই নিয়ম যেন চালু করেন যে লেগ সাইডে ছ'জন ফিল্ডার রাখা যাবে না।''
আরও পড়ুন: দু' চোখ ভরে শুধু দেখুন মেসিকে, টানা পাঁচ ম্যাচে জোড়া গোল, নিজেকেও ছাপিয়ে যাচ্ছেন মহাতারকা
