আজকাল ওয়েবডেস্ক: আট এবং নয়ের দশকের সুইমিং জগৎ মানেই বাঙালিদের রমরমা ছিল শেষ কথা। সময়ের নিরিখে সেই সোনালী দিন এখন বড্ড ধূসর। বিদেশের মাটিতে ভারতীয় দল নির্বাচিত হলেও বাঙালি খুঁজে পাওয়া যায় না। তবে সেই হৃত গৌরব আবারও একবার ফিরে আসবে, এমনই অভিমত দ্রোণাচার্য সাঁতারু প্রশিক্ষক ডঃ তপন পানিগ্রাহীর। তবে সাঁতারের পদ্ধতি একটু ভিন্ন। এটা আন্ডারওয়াটার স্পোর্টস, যার পোশাকি নাম ফিন সুইমিং। যে ইভেন্টে সিনিয়র বিভাগে গত চার বারের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন বাংলা দল। সদ্য সমাপ্ত পঞ্চম রাজ্য ফিন সুইমিং চ্যাম্পিয়নশিপের আসরে এসে এমনটাই জানালেন সাঁতারে একমাত্র বাঙালি দ্রোণাচার্য। গত দু'দিন ধরে শহর তিলোত্তমার লেকটাউন সুইমিং পুলে বসেছিল চ্যাম্পিয়নশিপের আসর। জুনিয়র, সিনিয়র এবং মাস্টার্স বিভাগে সারফেস, বাইফিন এবং আপনিয়া ক্যাটাগরিতে রাজ্যের ১৫টি জেলা থেকে প্রায় ৪৭০ জন অ্যাথলিট অংশ্রগ্রহণ করে।
ব্যক্তিগত পদকের নিরিখে মেয়েদের মধ্যে কলকাতার অহেলি সাহা এবং হাওড়ার জয়শ্রী মাহাতো সর্বাধিক তিনটি করে সোনার পদক পেয়েছে। অহেলির ইভেন্ট ছিল ৫০ মিটার ও ১০০ মিটার সারফেস এবং ৫০ মিটার বাইফিন। জয়শ্রীর ইভেন্ট ছিল ২০০, ৪০০ এবং ৮০০ মিটার বাইফিন। অন্যদিকে ছেলেদের মধ্যে হুগলির সম্রাট মিশ্র তিনটি পদক প্রেয়েছেন, যার মধ্যে আছে ১টি সোনা এবং ২টি রূপো। সম্রাটের ইভেন্ট ছিল ১০০ মিটার সারফেস এবং ২০০ ও ৪০০ মিটার বাইফিন। দলগতভাবে পদক জয়ের নিরিখে উত্তর ২৪ পরগনা পদক তালিকার শীর্ষে আছে। ২৬৮ পয়েন্ট নিয়ে তাঁদের সংগ্রহে মোট ৯২টি পদক। যার মধ্যে আছে ২৯টি সোনা, ৩০টি রুপো এবং ৩৩টি ব্রোঞ্জ। দ্বিতীয় স্থানে আছে কলকাতা। ১৭১ পয়েন্ট নিয়ে দখল করেছে ৫৩টি পদক, যার মধ্যে আছে ১৯টি সোনা, ২১টি রুপো এবং ১৩টি ব্রোঞ্জ। ৪৩টি পদক নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে হাওড়া, যার মধ্যে ১৫টি সোনা, ১২টি রুপো এবং ১৬টি ব্রোঞ্জ।
সদ্য সমাপ্ত রাজ্য চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে আগামী নভেম্বরে লখনউয়ে (সম্ভাব্য) আয়োজিত জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য দল নির্বাচন করা হবে। প্রতিটা বিভাগের থেকে প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানাধিকারীদের বাংলার দলে জায়গা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আন্ডারওয়াটার স্পোর্টস এসোসিয়েশন ওফ বেঙ্গলের সেক্রেটারি কঙ্কন পানিগ্রাহী। আগামীদিনে ফিন সুইমারদের স্পোর্টস কোটায় চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রেও রাস্তা অনেক চওড়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন কঙ্কন। বিশেষ করে লাইফ সেভিং এবং ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপের ক্ষেত্রে ফিন সুইমারদের গ্রহণযোগ্যতা এবং প্রাধান্য বেশি করে দেওয়া হচ্ছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু এবং কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার। সমাপ্তি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ফিজিক্যাল এডুকেশন ফাউন্ডেশন অফ ইন্ডিয়ার রাজ্য সভাপতি ডঃ সুদর্শন বিশ্বাস এবং কিংবদন্তি সাঁতারু শচীন নাগের পুত্র অশোক নাগ।
