আজকাল ওয়েবডেস্ক: ইংল্যান্ড সিরিজের ঠিক আগে রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলির অবসরে কেঁপে গিয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেট। সবার কাছেই বিরাট চমক ছিল। লাল বলের ক্রিকেটে দীর্ঘদিন দুই মহাতারকা ফর্মের ধারেকাছে ছিল না। কিন্তু তাসত্ত্বেও তাঁদের ছাড়া ইংল্যান্ড সিরিজ ভাবা যায় না। ২০০৭ এর পর ব্রিটিশদের দেশে কোনও টেস্ট সিরিজ জেতেনি ভারত। সবাই ধরেই নিয়েছিল, বিরাট-রোহিত ছাড়া নাকানিচোবানি খাবে ভারত। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দেয় শুভমন গিল পরিচালিত তরুণ দল। সিরিজ ড্র করে। জেতারও হাতছানি ছিল। দুই মহাতারকাকে খুব একটা মিস করেনি ভারতীয় ক্রিকেট। তাঁদের অনুপস্থিতিতে জ্বলে ওঠে শুভমন গিল, ঋষভ পন্থ , কেএল রাহুল, যশস্বী জয়েসওয়ালদের ব্যাট। তবে তাসত্ত্বেও এই সিরিজে বিরাট কোহলিকে খেলতে দেখার পক্ষে ছিলেন দিলীপ ভেঙ্গসরকর। বিসিসিআইয়ের প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচক জানান, তিনি পদে থাকলে কোহলিকে জোর করতেন অবসর প্রত্যাহার করতে।
ভেঙ্গসরকর বলেন, 'আমি যদি বোর্ডের মুখ্য নির্বাচক হতাম, ইংল্যান্ড সিরিজ খেলে তারপর টেস্ট থেকে অবসর নেওয়ার জন্য জোর করতাম কোহলিকে। এই সিরিজে ওর ক্লাস এবং অভিজ্ঞতার প্রয়োজন ছিল।' রানের দিক থেকে টিম ইন্ডিয়ার তরুণ ব্রিগেড দুই মহাতারকার অভাব ঢেকে দিলেও কোহলিকে খেলানোর পক্ষপাতী ছিলেন তিনি। পঞ্চম টেস্টের দু'দিন আগে ওভালের পিচ কিউরেটরের সঙ্গে ঝামেলায় জড়ান গৌতম গম্ভীর। এই বিষয়ে ভারতের হেড কোচকেই সমর্থন ভেঙ্গসরকরের। তিনি বলেন, 'ভারতীয় দলের হেড কোচ হওয়ায় কাছে থেকে পিচ দেখার অধিকার আছে গম্ভীরের। অন্য দলগুলো যখন ভারত সফরে আসে, শুধুমাত্র কোচ এবং অধিনায়ক নয়, দলের বাকি প্লেয়াররাও পিচ পর্যবেক্ষণ করে। ম্যাচের আগে ওদের মিডিয়াও পিচ দেখে। ওদের কেউ কিছু বলে না। তাহলে ইংল্যান্ডে খেলার সময় আমাদের ক্ষেত্রে নিয়ম কেন আলাদা হবে?'
এই ঘটনা প্রসঙ্গে ম্যাথিউ হেডেন বলেছিলেন, কিউরেটরের সঙ্গে গম্ভীরের আরও ভাল ভাষা ব্যবহার করা উচিত ছিল। এর বিরোধিতা করেন ভারতের প্রাক্তনী। ভেঙ্গসরকর প্রশ্ন তোলেন, 'গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে কিউরেটর পিচের থেকে দূরে থাকতে বললে হেডেন বা অন্য কোনও অস্ট্রেলিয়ান কি ভালভাবে নিত? এটা অস্ট্রেলিয়ানদের সঙ্গে হলে, কিউরেটরকে নিজের জায়গা দেখাতে ওরা কী শব্দ ব্যবহার করত জানা আছে।' বুমরার ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্ট নিয়ে খুশি নন ভেঙ্গসরকর। তিনি মনে করেন, তাঁর ফিটনেস এমন হলে, আইপিএল থেকে সরে যাওয়া উচিত ছিল। ভেঙ্গসরকর বলেন, 'ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজের গুরুত্ব এবং বুমরার পিঠের অবস্থায় কথা মাথায় রেখে, ওকে আইপিএল থেকে সরে দাঁড়াতে বলতে পারত বিসিসিআই, নির্বাচকরা এবং টিম ম্যানেজমেন্ট। এই আইকনিক সিরিজের জন্য সম্পূর্ণ ফিট বুমরাকে প্রয়োজন ছিল। আমি নির্বাচক হলে, মুকেশ আম্বানি এবং বুমরার সঙ্গে কথা বলে আইপিএলে না খেলার বিষয়টা নিশ্চিত করতাম। বা আইপিএলে কম ম্যাচ খেলার কথা বলতাম। আমি নিশ্চিত ওরা সেটা মেনে নিত। আইপিএলে কত রান করেছে, কত উইকেট নিয়েছে কে মনে রাখে? ইংল্যান্ড সিরিজে সিরাজের পারফরম্যান্সের কথা সবাই মনে রাখবে। শুভমন গিল, কেএল রাহুল, যশস্বী জয়েসওয়াল, ঋষভ পন্থের ব্যাটিংয়ের কথা সবাই মনে রাখবে। এমন সিরিজ চার বছরে একবার হয়। ২০২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত ভারত আর নিশ্চয়ই কোনও পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে না। তাই এমন সিরিজে বুমরাকে পাঁচ ম্যাচে পাওয়া গেলে ভাল হত। সেক্ষেত্রে সিরিজ জেতার একটা সম্ভাবনা ছিল।' ইংল্যান্ডের পিচেরও প্রশংসা করেন ভারতের প্রাক্তনী।
