আজকাল ওয়েবডেস্ক: লর্ডসে ভারতকে জেতাতে না পেরে মন খারাপ মহম্মদ সিরাজের। সটান গিয়ে শুয়ে পড়েছিলেন হোটেলে। কারওর সঙ্গে কথা বলেননি। রাতের খাবারও খাননি। জেতাতে না পারার আক্ষেপ এখনও তাঁকে নাড়া দিয়ে যাচ্ছে। 

শোয়েব বশিরের বলটা খেলার পরেও বেল ফেলে দেয়। বিশ্বাস করে উঠতে পারেননি সিরাজ। আউট হওয়ার পরে মাথা নীচু করে বসেছিলেন অনেকক্ষণ। কিন্তু দেশে একজন মনে প্রাণে বিশ্বাস করেছিলেন সিরাজ ম্যাচটা বাঁচিয়ে দেবেন। বাঁচানো নয়, ভারতকে জেতাবেন তিনি। 

এত পর্যন্ত পড়ার পরে অনেকেই কৌতূহলী হয়ে উঠতে পারেন। মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, কে তিনি? সিরাজ নায়ক হয়ে উঠুন এমনটাই চেয়েছিলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বাবা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়া অশ্বিন স্বয়ং এ কথা ফাঁস করেছেন তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে।  

আরও পড়ুন: ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে মরণ-বাঁচন লড়াই, চতুর্থ টেস্টের আগে বুমরাকে নিয়ে সতর্কবাণী

অশ্বিন ও তাঁর বাবা একসঙ্গে বসে লর্ডস টেস্টের পঞ্চম দিনের খেলা দেখছিলেন। ভারত যখন ম্যাচ বাঁচানোর জন্য লড়ছে, জাদেজা সঙ্গী হিসেবে পেয়েছেন সিরাজকে, সেই সময়ে অশ্বিনকে তাঁর বাবা আশাবাদী হয়ে বলেছিলেন, ''সিরাজ তিনটি ছক্কা মেরে ভারতকে জিতিয়ে দেবে।'' 

Spirit of cricket! Harry Brook consoles Mohammed Siraj, England vs India, 3rd Test, Lord's, fifth day, July 14, 2025

এহেন আশাবাদের কথা শুনে ছেলে অশ্বিনের মনে হয়েছিল তাঁর বাবা বুঝি রসিকতা করছেন। সেই কারণে বাবাকে মজা করতে নিষেধও করেন ছেলে। বেন স্টোকসকে নিরন্তর বল করে যেতে দেখে অশ্বিনের বাবা ফিরে যাচ্ছিলেন তাঁর সময়ে। 

ইংল্যান্ড অধিনায়ক শেষ দিনে মরিয়া হয়ে বোলিং করেন। ৯.২ ও ১০ ওভার বল করেন স্টোকস। এই সময়ে তাঁর বলের গতি ছিল প্রতি ঘণ্টায় ১৩২-১৪০ কিমি। এই সময়ে একটা প্রান্তে দুর্গের মতো দাঁড়িয়ে ছিলেন রবীন্দ্র জাদেজা। ইংল্যান্ড বোলারদের বিষ শুষে নিচ্ছিলেন। 

অন্যদিকে স্টোকস ঠিক জাদেজার মতোই কাজ করছিলেন। ৭৭ রান করেছিলেন ম্যাচে। লাইন-লেন্থ বজায় রেখে বোলিং করে পাঁচটি উইকেট নেন। স্টোকসের মরিয়া লড়াইয়ের প্রশংসা করেন জো রুটও। তিনি নিজের অধিনায়কত্বের সময়ে ফিরে যান। বলেন, ''আমি অধিনায়ক থাকার সময়ে স্টোকস আমার কথা শুনত না।'' 

দেশকে জেতানোর জন্য, দেশের জন্য তিনি মরিয়া হয়ে উঠতেন। ঘাম ঝরাতেন। নিজেকে নিংড়ে দিতেন। একেক সময়ে তাঁর সতীর্থদের মনে হতো স্টোকস বুঝি অসুস্থ হয়ে পড়বেন। অশ্বিন স্বয়ং স্টোকসের লড়াইয়ের প্রশংসা করেছেন।  

Zak Crawley and Joe Root console a distraught Mohammed Siraj as India fell 23 runs short, England vs India, 3rd Test, Lord's, fifth day, July 14, 2025

তৃতীয় টেস্টে টানটান উত্তেজনা দেখা যায়। দুই দলের ক্রিকেটাররা কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন। দিনের শেষে দুর্দান্ত লড়াই হয়। অশ্বিন সেই লড়াই প্রসঙ্গে বলছেন, ''কী দুর্দান্ত লড়াইটাই না হল! দুরন্ত একটা টেস্ট ম্যাচ হল। সেয়ানে সেয়ানে লড়াই হয়েছে। দুটো দলই নিজেদের সেরাটা তুলে ধরেছে। জাক ক্রলি আর জো রুটকে লক্ষ্য করে দেখবেন। দু'হাত দিয়ে সিরাজকে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দিচ্ছিল। এটাই টেস্ট ক্রিকেটের সৌন্দর্য।'' 

তৃতীয় টেস্ট অবশ্য এখন অতীত। চলতি মাসের ২৩ তারিখ শুরু হবে চতুর্থ টেস্ট। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে বল গড়াবে চতুর্থ টেস্টের। ভারত ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া। মরিয়া সিরাজও। ভারতকে সিরিজ জেতানোর শপথ মনে মনে হয়তো নিয়েই ফেলেছেন। ভারতের টেল এন্ডাররা ব্যাটারদের দেখিয়ে দিয়েছেন, পিচে কোনও জুজু ছিল না। তাঁরা যদি পারেন, তাহলে বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যানরা পারবেন না কেন। ম্যানচেস্টার টেস্টে ভারত কী করে সেটাই এখন দেখার। 

আরও পড়ুন: ২০২৬ বিশ্বকাপে দেখা যাবে মেসিকে?‌ এল বড় আপডেট