ইস্টবেঙ্গল ৬ (হামিদ, বিপিন, আনোয়ার, রশিদ, ক্রেসপো, ডেভিড)
ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স ১ (আমন)
আজকাল ওয়েবডেস্ক: কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল আগেই। রবিবার এয়ার ফোর্স ম্যাচে নক আউটের প্রস্তুতি সেরে রাখল লাল হলুদ। দুর্বল এয়ার ফোর্সকে হাফ ডজন গোলের মালা পরালেও অস্কার ব্রুজোকে চিন্তায় রাখবে দুটো জিনিস। এক নম্বর, সুযোগ নষ্টের বন্যা আর দুই, দুর্বল দলের বিরুদ্ধে ক্লিন শিট না রাখতে পারা। এদিন ইস্টবেঙ্গলের কম করে দশটা গোল হতে পারত. কিন্তু বক্সের ভিতর ঢুকে ওপেন নেট পেয়েও গোল করতে পারলেন না ইস্টবেঙ্গল ফুটবলাররা। সেসব বাদ দিলে এদিন অনবদ্য খেলল ইস্টবেঙ্গলের মাঝমাঠ, অনবদ্য খেললেন বিপিন এবং ফরোয়ার্ড হামিদ আহদাদ।
গোল খাওয়ার এক মিনিট সময়টুকু বাদ দিয়ে ইস্টবেঙ্গলের বক্সে ঢুকতেই পারল না এয়ারফোর্স। গোটা ম্যাচ প্রতিপক্ষকে নিয়ে ছেলেখেলা করল ইস্টবেঙ্গল। এদিন ম্যাচের প্রথম মিনিট থেকে নিজেদের লক্ষ্য স্পষ্ট করে দিয়েছিল লাল হলুদ। ম্যাচের শুরুতেই সাত মিনিটের মাথায় গোল করে যান লাল হলুদের মরোক্কান স্ট্রাইকার হামিদ আহদাদ। ডানদিক থেকে ওঠা এডমুন্ড লালরিন্ডিকার ক্রস থেকে বিষাক্ত হেডে গোল করে যান মরোক্কান স্ট্রাইকার হামিদ। এয়ারফোর্স কিপার শুভাশিস প্রথম পোস্টের দিকে এগিয়ে থাকায় কিছুই করার ছিল না তাঁর।
এরপর থেকে শুরু হয় একের পর আক্রমণ। ১৩ মিনিটে মাঝমাঠ বাড়ানো অসাধারণ বল থেকে অত্যন্ত সহজ সুযোগ নষ্ট করেন হামিদ। বাড়ানো বল ধরে সামনে এগোতেই এয়ারফোর্সের কিপার ছাড়া কেউ ছিলেন না। এয়ারফোর্স কিপার এগিয়ে এলে আলতো করে চিপ করে দেন হামিদ। কিন্তু বলের গতি এতটাই কম ছিল, এয়ারফোর্স ডিফেন্ডার গোলের সামনে থেকে বাঁচিয়ে দেন। প্রথম ২০ মিনিটের মধ্যেই তিন গোল মেরে দেওয়ার সুযোগ ছিল ইস্টবেঙ্গলের কাছে। দ্বিতীয় গোল আসে ২৬ মিনিটের মাথায়। মাঝমাঠ থেকে বল বাড়ান নাওরেম মহেশ।
বাড়ানো বল ধরে বাঁদিক দিয়ে উঠে গোলকিপারকেও শুইয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন বিপিন সিং। ঠিক তার কিছুক্ষণ পরেই ৩০ মিনিটের মাথায় বক্সের ভিতর বিপিনের পাস নাগালে পেয়েও বাইরে মারেন মিগুয়েল। হঠাৎই খেলার বিপরীতে ৩৬ মিনিটের মাথায় এয়ারফোর্সের হয়ে এক গোল শোধ করেন আমন, মাঝমাঠ থেকে বড় ক্রস রাখেন জিজো। আমন বলে মাথা ছুঁইয়ে গ্লাইড করে দেন সেকেন্ড পোস্টের দিকে। সেই হেডে কিছু করার ছিল না গিলেরও। প্রথমার্ধ শেষ হয় ২-১ গোলে। দ্বিতীয়ার্ধেও ছবিটা কতকটা একই রকম।
দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম ১০ মিনিট কোনওভাবে ইস্টবেঙ্গলকে আটকে রাখা গেলেও গোলের খিদেটা এদিন লক্ষ্য করা গিয়েছে সকলের মধ্যেই। ৬৪ মিনিটে মিগুয়েলের কর্নার থেকে জোরালো হেডে গোল করেন আনোয়ার আলি। তার চার মিনিটের মধ্যেই আসে চার নম্বর গোল। পরিবর্ত হিসেবে নেমে ৬৮ মিনিটে গোল করেন রশিদ। বক্সের ভিতর জটলা থেকে ক্লিয়ার করা বল তাঁর পায়ে আসে। বক্সের বাইরে থেকেই জোরালো শটে ৪-১ করেন তিনি। পঞ্চম গোল আসে ৮৫ মিনিটে। এডমুন্ড লালরিন্ডিকার ক্রস থেকে ৫-১ করেন সল ক্রেসপো। ষষ্ঠ গোল তরুণ ডেভিডের। সল ক্রেসপোর ক্রস বক্সের ভিতর হেড করেন সিবিয়ে। আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডারের হেড থেকে ভেসে আসা বল জালে জড়িয়ে দেন তিনি।

অপারেশন সিঁদুরে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছিল ভারতীয় বায়ুসেনা। সে কারণে এদিন বায়ুসেনাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বিশেষ টিফো নামিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল আল্ট্রাস। প্রতিপক্ষ হলে কি হবে, ম্যাচের পর লাল হলুদ সমর্থকদের ধন্যবাদ জানালেন বায়ুসেনার ফুটবলাররা। ৯০ মিনিটের লড়াই মাঠের মধ্যেই। কিছুদিন আগে বাংলা ভাষার ওপর অত্যাচারের প্রসঙ্গ তুলে যুবভারতীতে টিফো নামিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। এদিন প্রতিপক্ষকে শ্রদ্ধা জানিয়ে আরও একবার সকলের মন করে নিলেন সমর্থকরা।
টিফোর ছবি সৌজন্যে: ইস্টবেঙ্গল আস্ট্রাস ফেসবুক পেজ
