আজকাল ওয়েবডেস্ক: এএফসি নেশনস লিগ চালু করতে চলেছে এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন। এশিয়ান ফুটবলের জন্য এটা তো গুরুত্বপূর্ণ খবর বটেই, তার থেকেও এই খবর গুরুত্বপূর্ণ ভারতীয় ফুটবলের জন্য।
নেশনস লিগ চালুর সিদ্ধান্ত এমন এক সময়ে এল, যখন ভারতীয় ফুটবল গভীর অনিশ্চয়তার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। ঘরোয়া স্তরে ইন্ডিয়ান সুপার লিগের ভবিষ্যৎ নিয়ে অচলাবস্থা কাটেনি।
এই পরিস্থিতিতে এই নতুন প্রতিযোগিতা ভারতীয় ফুটবলের জন্য অন্তত কিছুটা স্বস্তির সম্ভাবনা তৈরি করেছে। যদিও প্রতিযোগিতার খুঁটিনাটি এখনও চূড়ান্ত করা হয়নি নিয়ামক সংস্থার তরফে।
তবুও এএফসির এই উদ্যোগ ক্রীড়া এবং বাণিজ্যিক দুই ক্ষেত্রেই ভারতের জন্য নতুন সুযোগ এনে দিতে পারে। রবিবার এএফসি জানিয়েছে, নেশনস লিগের মূল লক্ষ্য হবে ফিফা উইন্ডোগুলিকে যাতে সঠিক ভাবে ব্যবহার করা যায়। পাশাপাশি, সদস্য দেশগুলিকে আরও প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলার সুযোগ করে দেওয়া।
ইউরোপের উয়েফা নেশনস লিগের আদলে এই টুর্নামেন্টে দলগুলিকে বিভিন্ন স্তরে ভাগ করা দেওয়া হবে। একই স্তরের দলের সঙ্গে ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে দলগুলি।
পাশাপাশি, বড় টুর্নামেন্টে যোগ্যতা অর্জনের পথও হবে আরও স্পষ্ট। বিশেষ করে কম র্যাঙ্কিংয়ের দেশগুলি এতে উপকৃত হবে। খেলোয়াড়রাও বেশি করে আন্তর্জাতিক স্তরে ফুটবল খেলার সুযোগ পাবেন।
ভারতের ক্ষেত্রে সময়টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শনিবার অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনের বার্ষিক সাধারণ সভায় আইএসএলের ১০টি ক্লাবের তরফে পেশ করা গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব গৃহীত হয়নি।
ওই প্রস্তাবে দেশের শীর্ষ লিগের ‘স্থায়ী’ পরিচালন ও বাণিজ্যিক নিয়ন্ত্রণ চাওয়া হয়েছিল। সাধারণ সভায় মতভেদের কারণে সেই প্রস্তাব খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়।
ফেডারেশনের এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য অভিজিৎ পাল আগেই এই প্রস্তাবকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে মন্তব্য করেন এবং সংবিধান ও ফেডারেশনের কর্তৃত্ব নিয়ে আপত্তি তোলেন।
এই অচলাবস্থার ফলে ইন্ডিয়ান সুপার লিগের ভবিষ্যৎ আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। চলতি বছরের জুলাই মাসে ফুটবল স্পোর্টস ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড জানায়, ১৫ বছরের মাস্টার রাইটস চুক্তির মেয়াদ ৮ ডিসেম্বর শেষ হওয়ায় তারা লিগ স্থগিত রাখছে।
বাণিজ্যিক স্বত্বের জন্য কোনও বিড না পাওয়া এবং টেন্ডার প্রক্রিয়ার ব্যর্থতার কারণে ২০২৫ সালে ভারতীয় ঘরোয়া ফুটবল প্রথম শ্রেণীর লিগের কাঠামো ও আর্থিক মডেল নিয়ে স্পষ্ট দিশা ছাড়াই এগোচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে এএফসি নেশনস লিগ ভারতের কাছে বড় সুযোগ ফুটবল ফেরানোর ক্ষেত্রে। এশিয়া স্তরের শক্তিশালী প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে নিয়মিত ম্যাচ খেললে জাতীয় দল নিজেদের ধার বজায় রাখতে পারবে।
আন্তর্জাতিক মঞ্চে অনেক বেশি সুযোগ পাবেন ফুটবলাররা। পাশাপাশি তরুণ খেলোয়াড়দের নিয়মিত পরীক্ষা করার সুযোগ মিলবে এবং ফিফা র্যাঙ্কিং উন্নত করার সম্ভাবনাও তৈরি হবে যা এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তবে এই প্রতিযোগিতা ভারতের ফুটবলের প্রশাসনিক সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। ২২ থেকে ২৯ ডিসেম্বরের মধ্যে আইএসএল ক্লাবগুলির সঙ্গে ফেডারেশনের কমিটির আলোচনাই ঠিক করবে আদৌ কোনও গ্রহণযোগ্য সমঝোতায় পৌঁছনো সম্ভব কি না।
