মিল্টন সেন, হুগলি, ২২ অক্টোবর: পাশবিক! অমানবিক! এই শব্দটাকে হার মানিয়েছে চুঁচুড়া ময়নাডাঙা এলাকার বাসিন্দার কুকীর্তি। তিনি পথ কুকুরদের উপর নির্মম অত্যাচার চালিয়েছেন। প্রশ্ন উঠেছে ওই ব্যক্তির মানসিক সুস্থতা নিয়ে। একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ কিভাবে এমন ঘটনা ঘটাতে পারে। কোনও কুকুরের কান, কোনও কুকুরের লেজ কেটে নেওয়া হয়েছে। আঘাত করে চোখ উপরে নেওয়া হয়েছে। এমনকি যৌনাঙ্গ কেটে দেওয়ার মত ঘটনা সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের কাজ হতে পারে? ঘটনা নজরে আসায় ময়নাডাঙা এলাকায় ছড়িয়েছে ব্যাপক চাঞ্চল্য। সর্বত্রই নিন্দার ঝড়। 


জানা গেছে, বেশ কয়েকদিন ধরে ময়নাডাঙার চিকিৎসক দম্পতি পিকে ঘোষ ও রীনা ঘোষের বাড়িতে বেশ কয়েকটি পথ কুকুর আশ্রয় নিয়েছে। তাতে বিরক্ত না হয়ে তাদের খাওয়া থাকা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন দম্পতি। কালী পুজোর রাতে শব্দ বাজির তাণ্ডবে সন্ধে থেকেই ভয়ে বাড়ি থেকে বেরোয়নি কুকুর গুলো। চিকিৎসক পিকে ঘোষ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তাঁর বাড়িতে কুকুর আছে। তিনি যেখানে যেখানে চেম্বার করেন সেখানেও অনেক কুকুর থাকে। এবং কুকুরগুলির জন্য তিনি খাবার নিয়ে যান। রাস্তার কুকুর হলেও তারা তাঁদের বাড়িতে থাকে। মঙ্গলবার তিনি দেখেছেন কুকুর গুলোর উপর পাশবিক অত্যাচার করা হয়েছে। অবলা জীবদের উপর কে বা কারা এমন করল তিনি জানেন না। তবে তিনি নিশ্চিত, কোনও মানুষ এমন কাজ করতে পারেনা। পথ কুকুর বিড়ালদের নিয়ে কাজ করেন চন্দননগরের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঞ্চিতা পাল। এই ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তিনি মূলত রাস্তার অসুস্থ কুকুরদের নিয়ে কাজ করেন। খবর পেয়েছেন চুঁচুড়ার ময়নাডাঙা এলাকার পাঁচটি কুকুরের উপর নির্মম অত্যাচার হয়েছে। কান, লেজ কেটে নেওয়া হয়েছে। চোখ তুলে নেওয়া হয়েছে। তিনি লক্ষ্য করছেন, দিনের পর দিন এই অবলা জীবগুলোর উপর অত্যাচার বেড়েই চলেছে। কিছুদিন আগে চন্দননগর লালবাগান এলাকায় একটি বাচ্চা কুকুরকে চোখের মধ্যে অ্যাসিড দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পরে জানা যায় পারার একজন এই জঘন্য কাজটি করেছে। তাঁর সংগঠন ক্রমাগত মানুষকে সচেতন করছে। তাও পশুদের উপর অত্যাচার বেড়েই চলেছে। এটা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। অসুস্থ কুকুরগুলির চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ডাক্তার পিকে ঘোষ আরও জানিয়েছেন, তাঁর ওষুধের দোকান ও ল্যাবরেটরি আছে। তিনি নিজে যেহেতু চিকিৎসক, তাই কুকুর আহত কুকুরগুলির চিকিৎসা শুরু করছেন।

ছবি:‌ পার্থ রাহা