আজকাল ওয়েবডেস্ক: পহেলগাঁও হামলা। হামলার জবাব দিতে, ভারতের প্রত্যাঘাত। অপারেশন সিঁদুর। অপারেশন সিঁদুর পরবর্তীকালে ভারত-পাকিস্তান কুটনৈতিক সম্পর্ক আরও খারাপ হয়েছে। তার মাঝেই এল আরও ভয় ধরানো তথ্য। সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে উল্লিখিত, অপারেশন সিঁদুরের ছ' মস পর, লস্কর, জইশ জম্মু ও কাশ্মীরে পুনরায় হামলা চালানোর বড় পরিকল্পনা করছে। পর পর বৈঠকে তৈরি হচ্ছে ব্লু প্রিন্ট।
সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গোয়েন্দা তথ্য থেকে জানা গিয়েছে, জম্মু ও কাশ্মীর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে লক্ষ্য করে পাকিস্তান-সমর্থিত সন্ত্রাসী কার্যকলাপ উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইঙ্গিত, পাকিস্তান-ভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলি, বিশেষ করে লস্কর-ই-তৈয়বা (এলইটি) এবং জইশ-ই-মোহাম্মদ (জেইএম) সমন্বিত হামলার নতুন ধারার জন্য একত্রিত হচ্ছে।
তথ্য, সেপ্টেম্বর মাস থেকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলির অনুপ্রবেশ, গোয়েন্দা নজরদারি এড়িয়ে এবং সীমান্তের মধ্য দিয়েই বাড়ছে। পাকিস্তানের স্পেশাল সার্ভিসেস গ্রুপ (এসএসজি) এবং ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই) অপারেটিভদের সহায়তায় নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) ধরে অনুপ্রবেশের পথ দিয়ে একাধিক লস্কর এবং জৈশ-ই-মোহাম্মদ ইউনিট জম্মু ও কাশ্মীরে প্রবেশ করেছে, তেমনই আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।

সূত্রের তথ্য, সন্ত্রাসী শমসেরের নেতৃত্বে একটি লস্কর ইউনিট ড্রোন ব্যবহার করে আকাশপথে নজরদারি চালিয়েছে, নিয়ন্ত্রণ রেখার দুর্বল ফাঁকগুলি চিহ্নিত করেছে, যা রীতিমতো চিন্তা বাড়াচ্ছে। ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানের বর্ডার অ্যাকশন টিম (BAT)যাদের মধ্যে প্রাক্তন SSG সৈন্য এবং সন্ত্রাসীরা রয়েছে, তাদের পাক-অধিকৃত কাশ্মীর (PoK) জুড়ে পুনরায় মোতায়েন করা হয়েছে, যা ভারতীয় অবস্থানগুলিতে সম্ভাব্য সীমান্ত আক্রমণের ইঙ্গিত দেয়।
একই সঙ্গে উল্লেখ্য, অক্টোবরেই পাক অধিকৃত কাশ্মীরে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে জামাত-ই-ইসলামি, হিজবুল মুজাহিদিনের সিনিয়র সদস্যরা এবং আইএসআই কর্মকর্তারা একত্রিত হয়েছিলেন বলে জানা গেছে। এই সমাবেশগুলিতে সুপ্ত সন্ত্রাসী শিবিরগুলিকে পুনরুজ্জীবিত করার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়েছিল বলে তথ্য সূত্রের।
এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, বুধবার, ভোররাত থেকে পরপর গুলির আওয়াজে কেঁপে উঠেছিল জম্মু ও কাশ্মীর। জঙ্গি দমনে আবারও চলল গুলি। ফের সেনা ও জঙ্গির গুলির লড়াই চলছে কাশ্মীরে। এবার ঘটনাস্থল কিশতওয়ার। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, বুধবার ভোররাত থেকে জম্মু ও কাশ্মীরের কিশতওয়ারের ছত্রু এলাকায় জঙ্গি ও সেনাবাহিনীর মধ্যে গুলির লড়াই শুরু হয়েছে। দু'পক্ষের সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত হতাহতের খবর নেই। গোপন সূত্রে জঙ্গিদের উপস্থিতির খবর পেয়েই ওই এলাকায় জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ, সেনাবাহিনী ও সিআরপিএফ একযোগে তল্লাশি অভিযান চালায়। সেনাবাহিনীর হোয়াইট নাইট কর্পস এক্স হ্যান্ডলে জানিয়েছে, বুধবার ভোরে ছত্রু এলাকায় জঙ্গিদের সঙ্গে ভারতীয় সেনার গুলির লড়াই শুরু হয়েছে। কোনও জঙ্গিকে খতম করা হয়েছে কি না, সেই ব্যাপারে এখনই কিছু জানানো হয়নি। তবে জঙ্গিদের খোঁজে জোরকদমে চলছে তল্লাশি অভিযান। গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলাগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ পর্যটকের মৃত্যু হয়েছিল। পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর থেকেই জম্মু-কাশ্মীর জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় দফায় দফায় জঙ্গিদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে আসছে ভারতীয় সেনা ও কাশ্মীর পুলিশের যৌথ বাহিনী। গত সেপ্টেম্বরেই কিশতওয়ারে গোপন সূত্রে খবরের ভিত্তিতে একটি অভিযান চালিয়েছিল সেনাবাহিনী। এবার সেখানেই হামলা। তার মাঝেই আরও বড় হামলার আশঙ্কায় বাড়ছে উদ্বেগ।
