শীত গুটিগুটি পায়ে আসব আসব করছে। উত্তুরে হাওয়া ইতিমধ্যেই বইতে শুরু করে দিয়েছে। আর শীতের ছুটি মানেই বরফপাত আর শীতকে আরও জমিয়ে উপভোগ করতে কোনও পাহাড়ি এলাকায় বেড়াতে যাওয়া। তালিকায় কাশ্মীর থেকে মানালি, সিকিম, দার্জিলিং কী না থাকে। কিন্তু জানেন কি বিশ্বের দ্বিতীয় শীতলতম বাসযোগ্য জায়গাটি ভারতের বুকেই অবস্থিত? কখনও বেড়াতে গিয়েছেন এখানে?
বিশ্বের দ্বিতীয় শীতলতম বাসযোগ্য জায়গাটি হল লাদাখের দ্রাস। এটি লাদাখের একটি প্রত্যন্ত গ্রাম, যেখানে হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় জমে যাওয়ার জোগাড় হয়, সঙ্গে থাকে বরফে মোড়া মনোরম দৃশ্য। বরফ ঢাকা সুউচ্চ পর্বতশৃঙ্গগুলি মন ভাল করে দেয়। এই জায়গাটিকে লাদাখের 'গেটওয়ে'ও বলা হয়ে থাকে। দ্রাস কেবল তার ভৌগোলিক অবস্থানের জন্য জনপ্রিয় বা গুরুত্বপূর্ণ নয়। এখানে এই কঠিন পরিস্থিতিতেও মানুষ বসবাস করে।
লাদাখের কার্গিল জেলায় অবস্থিত দ্রাস। এই জায়গাটির উচ্চতা প্রায় ১০ হাজার ৮০০ ফিট। এটি জাতীয় সড়ক ১ এর উপরেই পড়ে। জোজিলা পাস এবং কার্গিল শহরের মধ্যে অবস্থিত এই গ্রামটি। যাঁরা লেহ বেড়াতে যান তাঁদের জন্য অন্যতম আকর্ষণীয় একটি স্পটও বটে।
সাইবেরিয়ার ওইম্যায়াকনের পর বিশ্বের শীতলতম বাসযোগ্য জায়গা হল দ্রাস। এখানে শীতকালে তাপমাত্রা -২০ ডিগ্রি থেকে -২৫ ডিগ্রিতে নেমে যায়। কখনও কখনও সেটা -৬০ ডিগ্রি পর্যন্ত ছুঁয়ে ফেলে। ১৯৯৫ সালের জানুয়ারি মাসে দ্রাসের তাপমাত্রা -৬০ ডিগ্রি ছুঁয়ে ফেলেছিল। এখানে অক্টোবর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত শীতকাল চলে। ভারী তুষারপাত হয় এই জায়গায়। বলা ভাল, তুষার ঝড় চলে।
খারাপ আবহাওয়া, কনকনে ঠান্ডা পড়লেও এখানে প্রায় ২২ হাজার মানুষ বাস করেন। দার্দিক জনগোষ্ঠীর মানুষই মূলত এই অঞ্চলে থাকেন। এই শীতের সঙ্গে মোকাবিলা করতে তাঁরা পারদর্শী। তাঁদের বাড়িগুলি মোটা পাথর দিয়ে তৈরি। একই সঙ্গে একাধিক লেয়ারের পোশাক পরেন তাঁরা শরীরকে উষ্ণ রাখার জন্য। ঘরে কাঠের উনুন ব্যবহৃত হয় যা ঘরকে গরম রাখে। গরমকালে এখানে বার্লি, আলু, ইত্যাদি সবজি চাষ হয়। শীতের সময় মূলত জমান আনাজ, খাবার দিয়েই কাটে।
যাঁরা পাহাড়ের রুক্ষতা, অবর্ণনীয় সৌন্দর্য উপভোগ করেন এবং ভালবাসেন, তাঁদের জন্য এই জায়গাটি স্বর্গ। অমরনাথ, সুরু উপত্যকা বা মুশকোহ উপত্যকা ট্রেক করার জন্য অনেকেই এটিকে বেস বানান। তবে কি এই শীতে আপনিও দ্রাস যাচ্ছেন নাকি?
