শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি সাধারণত খারাপ আচরণের জন্য শিক্ষার্থীদের শাস্তি দেয় বা বকা দিয়ে থাকে। উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যার একটি মেডিকেল কলেজ ঠিক সেই পথে যাচ্ছে না। শিক্ষার্থীদের মধ্যে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার জন্য একটি অনন্য আধ্যাত্মিক পদ্ধতি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে কলেজটি। যে সকল শিক্ষার্থীরা দোষ করছেন তাঁদের নোটবুকে ভগবান রামের নাম লিখতে বলা হচ্ছে। এটিই তাঁদের সাজা। 

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাজর্ষি দশরথ অটোনোমাস স্টেট মেডিকেল কলেজ, যা অযোধ্যা মেডিকেল কলেজ নামেও পরিচিত, ঘোষণা করেছে যে, কোনও ভুলে দোষী শিক্ষার্থীদের আর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে না। বরং, তাঁদের নোটবুকে ‘রাম-রাম’ লিখতে হবে। কলেজ কর্তৃপক্ষের বিশ্বাসের এই পদক্ষেপ তরুণদের মধ্যে ভগবান রামের লালিত মূল্যবোধ জাগিয়ে তুলতে সাহায্য করবে।

অভিনব সিদ্ধান্তের যুক্তি ব্যাখ্যা করে অধ্যক্ষ ডঃ সত্যজিৎ ভার্মা জানান, এই পদক্ষেপের লক্ষ্য কঠোর শাস্তি নয় বরং মূল্যবোধের মাধ্যমে শৃঙ্খলা শেখানো। তাঁর বিশ্বাস, “যখন শিক্ষার্থীরা ভগবান রামের নাম জপ করে, তখন এটি তাদের মধ্যে সংযম এবং ইতিবাচকতার অনুভূতি জাগ্রত করে। শিক্ষার উদ্দেশ্য কেবল জ্ঞান প্রদান করা নয় বরং শিক্ষার্থীদের মধ্যে মূল্যবোধ, শৃঙ্খলা এবং মর্যাদা জাগানোও।”

এই সিদ্ধান্তকে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক উভয়ই স্বাগত জানিয়েছেন। অনেকে এটিকে মানসিক শান্তি এবং আত্মসমালোচনার সুযোগ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। শিক্ষার্থীরা বিশ্বাস করেন যে, এই অনুশীলন তাদের ভুল সংশোধন করতে এবং আত্মনিয়ন্ত্রণ শিখতে সাহায্য করবে। অন্যদিকে, শিক্ষকরা এই উদ্যোগে ফলে ক্যাম্পাসে আরও সংস্কৃতিমনা পরিবেশ গড়ে তোলার সুযোগ তৈরি হবে বলে দাবি করেছেন।

অধ্যক্ষ ভার্মার মতে, এই ধারণাটি কয়েকদিন আগে আসে যখন কয়েকজন প্যারামেডিক্যাল ছাত্রকে হাসপাতালে অলস অবস্থায় বসে থাকতে দেখা যায় এবং তাঁদের নোটবুকে ভগবান রামের নাম লেখার পরামর্শ দেওয়া হয়। ভার্মা বলেন, “কলেজ প্রশাসন তখন এই ধারণাটি নিয়ে চিন্তাভাবনা করে এবং দোষী শিক্ষার্থীদের শৃঙ্খলা শেখানোর জন্য এটি ক্যাম্পাস জুড়ে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়।”

ভার্মা বিশ্বাস করেন যে, ভগবান রামের নাম এমন একটি মন্ত্র যার জপ নেতিবাচক চিন্তাভাবনা দূর করে এবং ইতিবাচক গুণাবলী বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। তিনি বলেন,  “যাঁরা ভগবান রামে বিশ্বাস করেন তাঁদের তাঁর নাম লেখা উচিত এবং যারা ভগবান কৃষ্ণ বা অন্য কোনও দেবতাতে বিশ্বাস করে তাঁরা তাদের নাম লিখতে পারেন। আমাদের লক্ষ্য হল প্রতিটি শিক্ষার্থীর মধ্যে মূল্যবোধ, শান্তি এবং মর্যাদা জাগ্রত করা যাতে রামরাজ্যের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়।”