অনেকেই ত্বকে ছোট, লাল দাগ বা তিল লক্ষ্য করেন। এগুলো প্রায়ই উদ্বেগ সৃষ্টি করে, কেউ কেউ ভেবে থাকেন এগুলো যকৃতের সমস্যা বা এমনকি ক্যানসারের সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে। সাধারণত মনে করা হয় যে, এই লাল দাগগুলো যকৃত বা কিডনির ক্ষতি থেকে আসে, এবং কেউ কেউ ভাবেন এগুলো গুরুতর কিছু সঙ্কেত দিতে পারে। তবে আসলেই এই লাল দাগগুলো কী? ডা. অর্ঘি দাসের মতে, এই লাল দাগগুলোকে বলা হয় চেরি অ্যাঞ্জিওমা। জনপ্রিয় ধারণার বিপরীতে, এগুলো যকৃতের ক্ষতি, কিডনির দুর্বলতা বা ক্যানসারের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। ডা. দাস জানিয়েছেন, এটি একটি সাধারণ ভুল ধারণা।
চেরি অ্যাঞ্জিওমা হল ত্বকের উপরিভাগে গঠিত ছোট, স্নায়ুসুলভ বৃদ্ধি। এগুলো সাধারণত ৩০ বছরের উপরে মানুষের মধ্যে বেশি দেখা যায় এবং এটি ছোট রক্তনালীর বৃদ্ধির কারণে হয়। এগুলো পুরুষ ও মহিলা উভয়ের মধ্যেই হতে পারে এবং সাধারণত ক্ষতিকারক নয়।
একটি পরিচিত কারণ হল হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, বিশেষ করে ইস্ট্রোজেন হরমোনের সঙ্গে সম্পর্কিত। তাই গর্ভাবস্থায় এই লাল দাগগুলো বেশি দেখা যায়, যখন হরমোনাল পরিবর্তন সর্বোচ্চ থাকে। ডা. দাস আশ্বস্ত করেছেন যে, এগুলো দেখা দিলে আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই।
তবে, যদি হঠাৎ এই মোলের সংখ্যা বা আকার বেড়ে যায়, অথবা আকার বা রঙ পরিবর্তন হয়, তাহলে ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। যেহেতু এগুলো ত্বকের বাইরের স্তরে থাকে, প্রয়োজনে এগুলো সরানো সাধারণত সহজ।
অতিরিক্ত সতর্কতার জন্য, শরীরকে হাইড্রেটেড রাখা গুরুত্বপূর্ণ। খিদের সময় এক গ্লাস জল পান করলে অতিরিক্ত খাওয়া বা ক্রেভিং কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও যদি আপনার অভ্যন্তরীণ স্বাস্থ্য, বিশেষ করে যকৃত নিয়ে উদ্বেগ থাকে, তাহলে স্বাস্থ্যকর জীবনধারা অনুসরণ করা জরুরি। এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে চিনি কম খাওয়া, বেশি শাক-সবজি খাওয়া, পর্যাপ্ত জল পান করা, সুষম এবং পুষ্টিকর খাদ্য পাতে রাখা এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে প্রাকৃতিক যকৃত ডিটক্স অপশন বিবেচনা করা।
চেরি অ্যাঞ্জিওমা হলো এক ধরনের সাধারণ ত্বকের বৃদ্ধি, যা স্বাভাবিক জীবনযাপনের কোনো বড় ঝুঁকি তৈরি করে না। সঠিক সচেতনতা এবং প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শের মাধ্যমে এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা যায়। তাই এই ছোট লাল দাগগুলোকে অপ্রয়োজনীয় ভয় বা উদ্বেগের কারণ হিসেবে না দেখাই ভাল।
