আজকাল ওয়েবডেস্ক: মনে পড়ে ছোটবেলার সেই দিনগুলোর কথা? যখন পাড়ার সেলুনে চুল কাটতে গেলে ‘নাপিতকাকু’ ঘাড়ে ঘষে দিতেন সাদা বরফের টুকরোর মত কিছু একটা? আধুনিক পার্লার কিংবা সালোঁর বাইরে যাঁরা চুল কাটেননি, তাঁদের কাছে সেই সাদা বরফের টুকরোর মতো জিনিসটি খুব একটা পরিচিত নয়। কিন্তু এক সময় সেলুনের সঙ্গে সমার্থক ছিল সেই সাদা বস্তুটি - ফটকিরি বা ফিটকিরি।
কিন্তু জিনিসটি ঠিক কী? ফিটকিরি হল একটি রাসায়নিক যৌগ, যা মূলত পটাশিয়াম, অ্যালুমিনিয়াম এবং সালফার দিয়ে গঠিত একপ্রকারের লবণ। কালের নিয়মে আগের মতো প্রচলন না থাকলেও গুণে কিন্তু কম যায় না এই যৌগ। ফটকিরির প্রধান বৈশিষ্ট্য হল এটি জলকে পরিশোধিত করতে পারে। পাশাপাশি এর জীবাণুনাশক এবং রক্তপাত বন্ধ করার গুণ রয়েছে।
১. জল পরিশোধন: ফিটকিরি জলে মেশালে এটি জলের মধ্যে থাকা সূক্ষ্ম কণা ও ময়লাকে জমাট বাঁধিয়ে থিতিয়ে পড়তে সাহায্য করে। এর ফলে জল পরিষ্কার হয়। এটি পানীয় জল বা ব্যবহারের জলকে প্রাথমিক পর্যায়ে শোধন করার একটি সহজ ও প্রচলিত পদ্ধতি।
২. ছোটখাটো কাটাছেঁড়া ও রক্তপাত বন্ধ করা: ফিটকিরির রক্ত বন্ধকারী গুণ রয়েছে। একারণেই চুল কাটার পর বা শেভিংয়ের সময় কেটে গেলে এটি ব্যবহার করা হত। ছোটখাটো আঘাতে রক্তপাত হলে ফিটকিরি ঘষলে রক্তনালী সংকুচিত হয়ে রক্তপাত দ্রুত বন্ধ হয়ে যায়।
৩. শরীরের দুর্গন্ধ দূর করা: ফিটকিরির জীবাণুনাশক বৈশিষ্ট্য থাকায় এটি ঘামের কারণে সৃষ্ট ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে বাধা দেয়। ফলে শরীরের দুর্গন্ধ কমে। এটি প্রাকৃতিক ডিওডোরেন্ট হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ভেজা ত্বকে ফিটকিরি ঘষা যেতে পারে।
৪. মুখের স্বাস্থ্য রক্ষা: হালকা গরম জলে ফিটকিরি মিশিয়ে গার্গল করলে মুখের ভেতরের ব্যাকটেরিয়া কমে, মাড়ির সমস্যা বা মুখের ঘা এবং মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়। তবে এটি খাওয়া উচিত নয় এবং ব্যবহারের পর মুখ জল দিয়ে ধুয়ে ফেলা ভাল।
৫. পায়ের যত্ন: ফিটকিরির অ্যান্টিফাঙ্গাল ও অ্যান্টিসেপটিক গুণ পায়ের ছত্রাক সংক্রমণ (যেমন অ্যাথলেটস ফুট) কমাতে সাহায্য করে। হালকা গরম জলে ফিটকিরি গুঁড়ো মিশিয়ে পা ডুবিয়ে রাখলে পায়ের দুর্গন্ধ কমে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ হয়।
