আজকাল ওয়েবডেস্ক: শরীরে ক্লান্তি, অল্প কাজেই হাঁপিয়ে যাওয়া, মাথা ঘোরা বা ত্বকের ফ্যাকাসে ভাব- এই উপসর্গগুলি কি আপনার নিত্যদিনের সঙ্গী? যদি উত্তর ‘হ্যাঁ’ হয়, তবে আপনি হয়তো রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়ার শিকার। আর এর মূলে রয়েছে শরীরে আয়রনের ঘাটতি। আয়রন আমাদের শরীরের জন্য একটি অপরিহার্য খনিজ, যা রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সাহায্য করে এবং কোষে কোষে অক্সিজেন পৌঁছে দেয়।
অনেকেরই ধারণা, কেবল মাছ-মাংস বা ডিমেই বুঝি আয়রন থাকে। এই ধারণা একেবারেই ঠিক নয়। সঠিক পরিকল্পনা করে খাবার খেলে নিরামিষাশীরাও সহজেই আয়রনের ঘাটতি পূরণ করতে পারেন।
পুষ্টিবিদদের মতে, এমন ৭টি নিরামিষ খাবার রয়েছে যা আয়রনের ভান্ডার।
আরও পড়ুন: স্ত্রীর পিঠ জিভ দিয়ে চেটে দেয় পুরুষ, স্ত্রী যদি পাল্টা লেহন করে, তবেই হয় মিলন! পৃথিবীর একমাত্র জীবিত ড্রাগন এরাই
১। পালং শাক ও সবুজ শাকসবজি
পালং শাককে আয়রনের অন্যতম সেরা উৎস বলে গণ্য করা হয়। এছাড়াও বিট, ব্রকোলি, কালে-এর মতো গাঢ় সবুজ রঙের শাকেও প্রচুর পরিমাণে আয়রন পাওয়া যায়। স্যুপ, তরকারি বা স্যালাড হিসেবে এগুলি রোজকার খাদ্যতালিকায় যোগ করতে পারেন।
২। মসুর ডাল ও অন্যান্য ডাল
ভারতীয়দের রান্নাঘরে ডাল এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। মসুর, মুগ, অড়হর বা রাজমার মতো ডালে কেবল প্রোটিনই নয়, ভরপুর পরিমাণে আয়রনও থাকে। এক বাটি ডাল রোজকার খাবারে রাখলে আয়রনের ঘাটতি অনেকটাই মেটে।
৩। কাবুলি ছোলা
ছোলা আয়রনের একটি চমৎকার উৎস। তরকারি হিসেবে বা সেদ্ধ করে স্যালাডে মিশিয়েও কাবুলি ছোলা খাওয়া যায়। এটি শরীরে শক্তি জোগানোর পাশাপাশি হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতেও সাহায্য করে।
৪। সয়াবিন
নিরামিষাশীদের জন্য সয়াবিন প্রোটিনের এক দারুণ বিকল্প। তবে শুধু প্রোটিনই নয়, আয়রনের ঘাটতি মেটাতেও এর জুড়ি মেলা ভার। সয়াবিনের তরকারি বা সয়া চাঙ্কস নিয়মিত খেলে উপকার পাওয়া যায়।
৫। কুমড়োর বীজ ও তিল
অনেকেই কুমড়োর বীজ ফেলে দেন। কিন্তু এই ছোট ছোট বীজগুলিই আয়রন, জিঙ্ক এবং ম্যাগনেশিয়ামের মতো খনিজের ভান্ডার। হালকা ভেজে নিয়ে স্যালাড বা খাবারের উপর ছড়িয়ে এগুলি খাওয়া যেতে পারে। একইভাবে, সাদা বা কালো তিলও আয়রনের একটি উৎকৃষ্ট উৎস।
৬। খেজুর
মিষ্টি স্বাদের এই ফল আয়রন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। যাঁরা রক্তাল্পতায় ভুগছেন, তাঁদের জন্য খেজুর অত্যন্ত উপকারী। প্রতিদিন কয়েকটি খেজুর খেলে শরীরে শক্তি বাড়ে এবং আয়রনের ঘাটতি পূরণ হয়।
৭। বেদানা
বেদানা রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে, এ কথা অনেকেই জানেন। এতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন এবং ভিটামিন সি দুই-ই থাকে। ফলে বেদানা খেলে শরীরে আয়রন শোষণও ভালভাবে হয়।
শুধু খেলেই হবে না, একটি বিষয় মনে রাখা প্রয়োজন, উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে পাওয়া আয়রন (নন-হিম আয়রন) শরীরে শোষিত হয় তুলনামূলক ভাবে কম। তাই আয়রন-যুক্ত খাবার খাওয়ার সঙ্গে ভিটামিন সি-যুক্ত খাবার খাওয়া অত্যন্ত জরুরি। কারণ ভিটামিন সি আয়রন শোষণে সাহায্য করে। যেমন, ডালের সঙ্গে লেবুর রস বা পালং শাকের তরকারিতে টমেটো দিলে উপকার বেশি পাওয়া যায়।
সুতরাং, নিরামিষ খাবার খেয়েও সুস্থ থাকা এবং রক্তাল্পতার মতো সমস্যাকে দূরে রাখা একেবারেই অসম্ভব নয়। প্রয়োজন শুধু একটু সচেতনতা এবং সঠিক খাবারের সমন্বয়।
