আসছে আলোর উৎসব দীপাবলি। বাঙালির কালীপুজো। দীপাবলি মানেই আলো, আনন্দ আর আতশবাজির ঝলকানি। যতই আইনের কড়াকড়ি থাকুক, দীপাবলির রাতে বাজির ধোঁয়ায় মুখ ঢাকে শহর থেকে গ্রাম সর্বত্র। সঙ্গে রয়েছে যানবাহনের ধোঁয়া। বাড়িতে থাকলেও দরজা-জানলা খোলার উপায় নেই। কিন্তু এই উৎসবের উচ্ছ্বাসের মাঝেই রয়েছে এক বড় বিপদ। ধোঁয়া ও শব্দদূষণের দাপটে বাড়ে রোগভোগের ঝুঁকি। বিশেষ করে বয়স্কদের স্বাস্থ্যের ঝুঁকি থাকে বেশি। চিকিৎসকদের মতে, দীপাবলির সময় যেভাবে বায়ু ও শব্দ দূষণ বেড়ে যায়, তা হৃদরোগ, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট ও উচ্চ রক্তচাপের মতো সমস্যায় আক্রান্ত প্রবীণদের জন্য ভয়ানক হতে পারে।
প্রবীণদের জন্য কেন বিপজ্জনক দীপাবলির ধোঁয়া ও শব্দ? দীপাবলির সময়ে বাজির ধোঁয়ায় মিশে থাকে ক্ষুদ্র কণিকা ফুসফুসে প্রবেশ করে শ্বাসকষ্ট, কাশি ও হাঁপানির ঝুঁকি বাড়ায়। অন্যদিকে, তীব্র শব্দ কানে চাপ সৃষ্টি করে। ফলে রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া, হৃদযন্ত্রে অতিরিক্ত চাপ, এমনকী নিদ্রাহীনতা ও মানসিক অস্থিরতা দেখা দিতে পারে। চিকিৎসকদের মতে, যাদের আগে থেকেই হৃদরোগ বা ফুসফুসের সমস্যা আছে, তাঁদের জন্য এই সময়টা বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ। সেক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি নিয়ম মেনে চললে বিপদ এড়াতে পারবেন প্রবীণরা। যেমন-
আরও পড়ুনঃ ভূত চতুর্দশীতে ১৪ শাক তো খাবেন, কোন শাকের কী উপকার জানা আছে?
১. বাইরের বিষাক্ত ধোঁয়া যাতে ঘরে ঢুকতে না পারে তাই কালীপুজোর সময়ে দরজা-জানালা বন্ধ রাখুন।
২. ঘরের বাতাস পরিষ্কার রাখতে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন।
৩. বাইরে বেরলে অবশ্য মাস্ক পরুন।
৪. অতিরিক্ত আলো বা শব্দ থেকে দূরে রাখুন। প্রবীণদের ঘর যেন শান্ত ও আরামদায়ক থাকে সেদিকেও নজর রাখুন।]
৫. নির্দিষ্ট কোনও শারীরিক অসুস্থতা থাকলে নিয়মিত ওষুধ খান। সময়মতো ইনহেলার বা প্রেসক্রাইব করা ওষুধ নিতে ভুলবেন না।
৬. পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম নিন। পর্যাপ্ত ঘুমালে শরীরের উপর বেশি প্রভাব পড়তে পারে।

৭. ইনহেলার ব্যবহার করলে, সবসময়ে সঙ্গে রাখুন। অ্যালার্জির সমস্যায় ভুগলে তার ওষুধপত্রও সঙ্গে রাখা জরুরি। বাড়ির বাইরে বেরোলে মাস্ক ব্যবহার করুন। শ্বাসকষ্টের সমস্যা অতিরিক্ত হলে দেরি না করে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
৮. উৎসবের মরশুমে অনেক সময়েই খাওয়া-দাওয়ায় অনিয়ম হয়। গুরুপাক খাবার খেলে বদহজম, অ্যাসিডিটির পাশাপাশি নিঃশ্বাস নেওয়ার ক্ষেত্রেও কষ্ট শুরু হতে পারে। তাই খাবারের বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। পর্যাপ্ত জল খাওয়া জরুরি। শরীরে জলের ঘাটতি হয়ে যাতে ডিহাইড্রেশন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
৯. বাতাসে এখন শীতের আমেজ শুরু হয়ে গিয়েছে। তাই দ্রুত ঠান্ডা লেগে সর্দি-কাশি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। যা থেকে বাড়তে পারে শ্বাসকষ্ট। এই সময়ে ঠান্ডা জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।
১০. ঘরের মধ্যে মোমবাতি বা প্রদীপ জ্বালাবেন না। পরিবর্তে টুনি-এলইডি জ্বালাতে পারেন। কারণ ঘরের মধ্যে প্রদীপ-মোমবাতি জ্বালালে অক্সিজেনের পরিমান কমে গিয়ে সমস্যা তৈরি হতে পারে।
