আজকাল ওয়েবডেস্ক: এসআইআর আতঙ্কে আবারও রাজ্যে মৃত্যু। ২০০২ সালে ভোটার তালিকায় নাম না থাকায় 'দেশ ছাড়তে হবে' এই আতঙ্কে কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হলেন মুর্শিদাবাদের কান্দির এক ব্যক্তি। মৃতের নাম মোহন শেখ (৫৫)। কান্দির পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বাগডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা মোহন শেখের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোটার তালিকার ২০০২ সালের নথিতে নিজের নাম না থাকায় সম্প্রতি আতঙ্কে ভুগছিলেন মোহন শেখ। তাকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেবে, এই আশঙ্কা ও বিভ্রান্তিতেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ পাড়ার মাঠে কীটনাশক পান করে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। স্থানীয়রা তৎক্ষণাৎ তাঁকে উদ্ধার করে কান্দি মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায়। তবে সেখানে তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু পথেই মৃত্যু হয় মোহন শেখের।
ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কান্দি মহকুমা হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
মৃত মোহন শেখের ছোট ভাই এরশাদ শেখের অভিযোগ, '২০০২ সালের ভোটার তালিকায় আমার দাদার নাম ছিল না। তাই গত কয়েকদিন ধরেই সে আতঙ্কে ভুগছিল। তারপর আজ মাঠে কাজ করার সময় কীটনাশক খায় সে।' এরশাদ আরও বলেন, 'এই ঘটনার খবর পেয়ে আমি তৎক্ষণাৎ মাঠে ছুটে যাই। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তখন দাদা মাঠে পড়েছিল। তাকে আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম কেন সে এই ধরনের কাজ করেছে। দাদা সংজ্ঞা হারানোর আগে আমাকে বলে, ২০০২ এর ভোটার তালিকায় তার নাম নেই। তাই তাকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এই ভয়ে দাদা কীটনাশক পান করেছে।'
মৃতের এক আত্মীয় বাক্কার শেখের অভিযোগ, '২০২২-এর ভোটার তালিকায় নিজের নাম না থাকার জন্য মোহন 'তিনদিন আগেও আমার কাছে নিজের আশঙ্কার কথা জানিয়েছিল। গত কয়েকদিন ধরে ক্রমাগত মোবাইল ফোনে এসআইআর সম্পর্কিত খবর দেখে যেত। সম্ভবত কোনও খবরে সে দেখে থাকবে ২০২২ তালিকায় কারও নাম না থাকলে তাকে দেশ থেকে বিতাড়িত করা হবে। আজ সেই আতঙ্কে আত্মঘাতী হয়েছে মোহন। '
ঘটনায় শোকের পাশাপাশি ক্ষোভও ছড়িয়েছে এলাকায়। কান্দির তৃণমূল বিধায়ক তথা তৃণমূল কংগ্রেসের বহরমপুর- মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অপূর্ব সরকার বলেন,' মোহন শেখ-এর পরিবার কয়েক পুরুষ ধরে কান্দি শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডে বাগডাঙ্গা এলাকায় বাস করছে। ২০২২-এর ভোটার তালিকায় ওই ব্যক্তির নাম না থাকায় সে বেশ কিছুদিন ধরে আতঙ্কে ছিল।'
তিনি বলেন,' আমরা জানতে পেরেছি ওই ব্যক্তি আজ সকালেও বিএলও-র কাছে গিয়েছিলেন। কিন্তু ভোটার তালিকায় নাম না থাকার আতঙ্কে তিনি বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন।'
